শরৎ মানে আকাশে সাদা মেঘের ভেলা, নদীর কূলে কাশফুল, ভোরের শিশির ভেজা শিউলি ফুল আর বাঙালির হৃদয়ে উৎসবের আমেজ। রাজধানীর যান্ত্রিক জীবনে নগরবাসীকে শরতের ছোঁয়া দিতে ‘চারুকলা’ নিয়ে এসেছে দেশীয় পণ্য নিয়ে ‘শরৎ মেঘের মেলা’ আয়োজন।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ধানমন্ডির ২৭ নম্বরের মাইডাস সেন্টারে দুইদিন ব্যাপী ২৯ জন উদ্যোক্তাদের নিয়ে ‘শরৎ মেঘের মেলা’ শুরু হয়েছে।
প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০ পর্যন্ত মেলা চলবে। দেশীয় শিল্পের এই মেলা সবার জন্য উন্মুক্ত।
মেলাটির আয়োজন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীসহ অন্য বিভাগের ছাত্র ছাত্রীরা। তারা এই ‘চারুকলা’ ইভেন্টটা পরিচালনা করেন।
এই মেলায় দেশীয় সব রকম শাড়ি, গহনা, খাবার, ব্যাগ ইত্যাদি পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন উদ্যোক্তারা। দুইদিন ব্যাপী মেলাটি আজ এবং আগামীকাল সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলবে।
মেলায় উপস্থিত উদ্যোক্তারা এমন আয়োজনে নিজেদের ভালো লাগার কথাগুলো তুলে ধরেন।
‘আরোহি’ ১৯ নং স্টলের হাদিরাতুন জান্নাত উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন, শাড়ি, ব্লাউজ পিস এবং মাটির চুড়ি, চামড়ার ব্যাগ গহনা নিয়ে সাজিয়েছেন স্টল। তিনি দ্বিতীয়বারের মেলায় অংশগ্রহণ করলেন। অংশগ্রহণ করে অভিজ্ঞতা ভালো এবং পরবর্তীতে মেলায় অংশগ্রহণ করতে চান উদ্যোক্তা।
আরেক উদ্যোক্তা শাহনাজ পারভীন বলেন, মেলায় তিনি ছয় বার অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি বিভিন্ন ডিজাইনের গহনা দিয়ে স্টল সাজিয়েছেন। স্টলে আছে পুঁতির মালা, দুল, পেন্ডেট সহ দেশীয় পণ্য।
খাবার নিয়ে স্টল সাজিয়েছেন উদ্যোক্তা ফারাহ দিবা। তিনি বলেন শরৎ উপলক্ষে বিভিন্ন রকম পিঠা নারিকেল পুলি, চিকেন পুলি, ফুচকা, দই ফুচকা, কেক, চিকেন বার্গার, পাস্তা, ফ্রাইড রাইস, খিচুড়িসহ হরেক রকমের খাবার নিয়ে বসেছেন। যা সব তিনি নিজ হাতেই (হোমমেইড) তৈরি করেন।
আঁকিবুঁকি স্টলের স্বত্বাধিকারী শান্তা জাহান বলেন, এখন পর্যন্ত ক্রেতার সংখ্যা কম তবে বিকেলের দিকে বাড়বে বলে আশাবাদী। মেলায় শাড়ি, গহনা, চুড়ি সবকিছুই দেশী এবং নিজেরা তৈরি করেন।
ডায়েরি নিয়ে স্টল সাজিয়েছেন ‘অনুস্বার’ বিভিন্ন রকমের হ্যান্ডপেইন্ট নকশা দিয়ে এঁকেছেন ডায়েরীগুলো। এই সব নকশার ডায়েরীগুলো সব থেকে বেশি ব্যবহার করেন চারুকলার ছাত্র-ছাত্রীরা। এছাড়াও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপহার হিসেবে প্রিয়জনকে দেওয়া যায় বলেন।
মেঘ বাড়ি স্টল সেজেছে বিভিন্ন রকম বাড়ির খাবার দিয়ে ডিনার রোল, ক্লাব স্যান্ডুইচ, চিকেন স্যান্ডুইচ, চিকেন পুলি, ইত্যাদি বিভিন্ন রকম আইটেম নিয়ে ক্রেতাদের জন্য স্টল সাজিয়েছেন।
মেঘদূত দেশীয় আমেজ আর ফ্যাশানের ফিউশন নিয়ে বলেন, কাজ করতে গিয়ে অনেক ভালো সাড়া পান। এবং তিনি পাটের প্রোডাক্টে নিজের ডিজাইন দিয়ে নান্দনিক করে গড়ে তোলেন।
‘মেহেদী রঙ’ এর তাহিয়া মাহি স্টল সাজিয়েছে মেহেদী দিয়ে। যেখানে ক্রেতারা এসে বিভিন্ন রকম ডিজাইন করে হাত রাঙাতে পারবেন।
‘বিনোদিনী’ স্টল সাজেছে শাড়ি এবং ব্লাউজ পিস, কুর্তি যা সবকিছু হাতের নাগালের মধ্যে। আছে দেশীয় পণ্য তাঁত,জামদানী বিভিন্ন রকম পণ্য। মেলাতে ক্রেতাদের আমন্ত্রণ জানান এবং বলেন একসাথে অনেক রকম পণ্য নিয়ে সব স্টল সেজেছে।
মেলায় আসা ক্রেতা ঝুমা সুলতানা উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন, মেলায় এসে অনেক ভালো লাগছে। একসাথে এত পণ্য এবং সবগুলোর দাম হাতের নাগালে। বিশেষ করে সবগুলো দেশীয় পণ্য এটা বেশি ভালো লেগেছে একই ছাদের নিচে এতো পণ্য; খাবার থেকে শুরু করে সব কিছুই এখানে পাওয়া যাচ্ছে।
খাদিজা ইসলাম স্বপ্না