মহাকাশ থেকে প্রথমবারের মতো লঞ্চ প্যাডে রকেটের অবতরণ,ইতিহাস গড়লো মাস্কের মহাকাশ যান স্পেসএক্স

0

১৩ অক্টোবর পুরো দুনিয়াকে অবাক করে দিয়ে ইলন মাস্কের স্পেসএক্স কোম্পানির স্টারশিপ রকেটের একটি অংশ প্রথমবারের মতো লঞ্চ প্যাডে ফিরে এসেছে, যা বিশ্বে এবারই প্রথম। এরই মধ্য দিয়ে ইতিহাস গড়লো মাস্কের মহাকাশ যান স্পেসএক্স।

ঐতিহাসিক এক মুহূর্তের সাক্ষী হলো টেক্সাসবাসী। সফল হলো ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স। স্থানীয় সময় রবিবার সফলভাবে উৎক্ষেপণ প্যাডে নিরাপদে অবতরণ করলো স্টারশিপ রকেটের সুপার হেভি বুস্টার। এদিন স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ২৫ মিনিটে টেক্সাসের বোকাচিকা মহাকাশ কেন্দ্র থেকে পঞ্চমবারের মতো রকেটটি উৎক্ষেপণ করা হয়।

হয়তো ইলন মাস্কের এই সাকসেসের কারণে অদূর ভবিষ্যতে কমার্সিয়াল এরোপ্লেন এর মতো মানুষ রকেটে ট্রাভেল করতে পারবে কিংবা স্পেস ট্যূর দিবে।

ইলন মাস্কের স্বপ্ন হল, অন্যগ্রহে মানুষের বসতি স্থাপন করতে যাওয়ার উপযোগী রকেট তৈরি করা। যা বার বার ব্যবহার করা যাবে এবং একেকবারে শ’খানেক মানুষকে মঙ্গলগ্রহ ও চাঁদে নিয়ে যাওয়া যাবে। তাই এর উপযোগী করেই বানানো হয়েছে স্টারশিপ রকেটকে।

ইলন মাস্কের স্পেসএক্স কোম্পানির স্টারশীপ প্রজেক্ট হচ্ছে একটা ট্রান্সপোর্ট সেবা যা স্পেসে যাবে কিন্তু এটা ছিলো অনেক ব্যয়বহুল৷

ইলন মাস্ক সিদ্ধান্ত নিলো ,তার এই স্পেস ট্রান্সপোর্টেশন সেবা চালু করতে হলে রিইউজেবল রকেট অর্থাৎ যে রকেটকে বার বার ব্যবহার করা যাবে সেরকম রকেট এবং সিস্টেম বানাতে হবে।

যদিও প্রথম প্রথম আশে পাশে অনেকে হাসাহাসি করতো কারণ ফিজিক্সের লো’য়ের এগেইন্সটে এটা – ইলনের দাবী ছিলো ফিজিক্সের ল তো মানুষই বানিয়েছে তাই না – আমরাও বানাবো নতুন ল। পাগলাটে এই ইলন মাস্ক ২০১২ সালে সিদ্ধান্ত নিলেন তার এই প্রজেক্টের পিছনে ৫ – ১০ বিলিয়ন ডলার মানে প্রায় ১১৯ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত ইনভেস্ট করবে এবং ২০২৩ সালে আরো ২ বিলিয়ন ডলার ইনভেস্ট করে রকেট সিস্টেম ডেভেলপও করে আর সেই বছরই ১৯ নভেন্বর প্রথমবারের মতো ফ্যালকন নাইন লঞ্চ করে যা উড়ার সাথে সাথে ধ্বংস হয়ে যায় – এতে ইলন মাস্ক প্রচুর ট্রলের মুখোমুখি হয় তবুও তিনি দমে যাননি। আরো ৪ বার ব্যর্থ হোন তিনি এবং ফাইনালি ১৮ মাস পরে ১৩ অক্টোবর স্পেসএক্স ৫ম বারের চেষ্টায় হোন সফল।

বিশ্বে তৈরি হওয়া এ যাবৎকালের সবচেয়ে শক্তিশালী রকেট স্টারশিপের দুটি অংশ। একটি হচ্ছে ‘সুপার হেভি বুস্টার’ নামের তরল গ্যাসের জ্বালানিচালিত রকেট। আর অপর অংশটি হল ‘স্টারশিপ’ নামের মহাকাশযান- যা এই সুপার হেভি বুস্টারের ওপর বসানো আছে। স্টারশিপ রকেট ১০০ টনের বেশি যন্ত্রপাতি বা ১০০ জন আরোহী বহন করতে পারে। আর সুপার হেভি বুস্টারে আছে ৩৩টি ইঞ্জিন, যা মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার আর্টিমেস রকেটের চেয়ে দ্বিগুণ শক্তিশালী। স্টারশিপের সুপার হ্যাভি বুস্টার অংশটি স্মুথলি ল্যান্ড করানো গেছে।এই সাকসেসের কারণে অদূর ভবিষ্যতে চাঁদ, স্পেস কিংবা মঙ্গলগ্রহে যাওয়া সহজ হয়ে যাবে।

ইলন মাস্কের এই রিইউজিবল রকেট বানাতে খরচ হয়েছে ৬২ মিলিয়ন ডলার যেখানে নাসার রকেট তৈরি করতে খরচ হয় প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত এবং এই রকেট ২৫ হাজার কি.গ্রাম ওজন নিতে সক্ষম এবং ইলন মাস্কের দাবী অদূর ভবিষ্যতে রকেটের কোস্ট আরো কমানো সম্ভব। সেটা ১০ মিলিয়ন ডলারে নিয়ে আসা পসিবল পার লঞ্চে অর্থাৎ এক এক লঞ্চে খরচ হবে ১০ মিলিয়ন ডলার এবং তিনি এটাও বলেন রিইউজেবল রকেট দিয়ে বছরে হয়তো ১০০ টা ফ্লাই করানো সম্ভব৷

মানুষের জন্য চাঁদ, মঙ্গলগ্রহ কিংবা স্পেসে যাওয়া অদূর ভবিষ্যতে এরোপ্লেনের মতো এফোর্ডেবল ট্রান্সপোর্টেও পরিণত হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here