মনিপুরী তাঁতে উদ্যোক্তা রুবেলের সফলতা

0

এম এইচ রুবেল তার উদ্যোক্তা জীবনের শুরু করেন ২০১৫ /২০১৬’ র মাঝামাঝি। তার উদ্যোক্তা জীবনের শুরু নিজ এলাকা মনিপুরী তাঁত অধ্যাসিত এলাকা। যখন তিনি দেখেন মনিপুরী তাঁতিরা খুব অবহেলিত, তারা মনিপুরী পণ্য সামগ্রী উৎপাদন করে সেল করতে পারতো না আর সেল করলে ও মহাজনদের কাছ থেকে উপযুক্ত দাম পেতো না। তাদের এই করুণ অবস্থা দেখে উদ্যোক্তা রুবেলের মনে হয় এই নিরীহ তাঁতিদের জন্য কিছু করা দরকার।

যেমন ভাবনা তেমন কাজ। শুরু করলেন অনলাইন প্রচারণা। দেশ বিদেশে ছড়িয়ে থাকা বন্ধুদের কাছ থেকে অনেক ভালো রেসপন্স পান তিনি। আর তাতেই রুবেলের আগ্রহ বেড়ে যায় উদ্যোক্তা হবার জন্য। এক সময় তিনি তার ঢাকা শহর কেন্দ্রিক পারিবারিক রেস্টুরেন্ট বিজনেস ছেড়ে পুরোদমে লেগে যান মনিপুরী তাঁত শিল্প ব্যাবসায়।

উদ্যোক্তা তার পরিবার অর্থাৎ তার সহধর্মিনী পারিবারিক ভাবে মনিপুরী তাঁত শিল্পের সাথে জড়িত ছিল তাই তার কাছ থেকেই তিনি অনুপ্রেরণা পান। এবং এই অবহেলিত মনিপুরী তাত শিল্পীদের জন্য কিছু করার জন্য উৎসাহ পান। উদ্যোক্তা তার উদ্যোগ প্রথমে মনিপুরী শাড়ি নিয়ে শুরু করলে ও এখন ২৫/২৬ টি মনিপুরী পণ্যের প্রডাকশন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন।

নিজের সুদূরপ্রসারী চিন্তার মাধ্যমে তিনি এখন একজন সফল উদ্যোক্তা। পরিচলনা করছেন নিজের মনিপুরী উইভিং ফ্যাক্টরি লিমিটেড কোম্পানি। প্রথমে মনিপুরী নতুন নতুন তাঁত শিল্পীদের দক্ষতা খুব কম ছিল তাই প্রোডাক্ট বুননের সমস্যার কারণে কিছু কিছু প্রোডাক্টের মান খুবই খারাপ হতো। কিন্তু বর্তমানে এই সমস্যা গুলো কাটিয়ে উঠছেন তিনি।

কর্মীদের পাশে থেকে তিনি সাহস যুগিয়েছেন।কাজের ধরন সম্পর্কে বুঝিয়েছেন। শুধু তাই নয় যুগের সাথে তাল মিলিয়ে নিত্য নতুন পণ্যে সাজিয়েছেন উদ্যোক্তা তার ভূবন।

উদ্যোক্তার উদ্যোগের প্রথম মূলধন ছিল নব্বই হাজার টাকা। উদ্যোগ শুরু করার তিন মাসের মাথায় এক লাখ ৫০ হাজার মূলধন হয়ে যায়। আর তখন আরও আগ্রহী হয়ে পরবর্তীতে পারিবারিক বিজনেস থেকে ২০ লাখ টাকা মুলধন যোগ করে পুরো দমে এই ব্যবসায় শুরু করেন তিনি।

বর্তমানে এখন তার বিজনেস’র মূলধন প্রায় ২ কোটি টাকার মত।নিজের কঠিন পরিশ্রম আর আত্মত্যাগের মাধ্যমে তিনি পরিচালনা করছেন নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান । উদ্যোক্তা মনে করেন একজন উদ্যোক্তা হবার জন্য ট্রেনিং অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ। এতে করে প্রথম থেকে কাজের মান ভালো পাওয়া যায়, কাজের সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায় এবং ক্রেতাদের কেউ আকৃষ্ট করা যায়।যদিও উদ্যোক্তা রুবেলের ক্ষেত্রে তেমন ট্রেনিং লাগেনি কারণ পারিবারিক বিজনেস থাকাতে সেখানে বিজনেস এর বেসিক প্যাটার্ন গুলো জানা ছিলো তার। তবে নতুন যারা বিজনেস শুরু করতে চান তাদের জন্য ট্রেনিং টা খুবই জরুরি বলে মনে করেন তিনি।

বর্তমানে উদ্যোক্তার কর্মক্ষেত্রে নিয়মিত কর্মীর সংখ্যা ১৫/১৬ জন তবে যারা মজুরিতে কাজ করে তাদের সংখ্যা প্রায় ৭০০ কাছাকাছি।

নিজেকে এখন তিনি মোটামুটি সফল উদ্যোক্তা হিসাবে দেখেন। তবে নিজের বিজনেস আইডিয়া গুলো যে দিন পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে পারবেন তখন নিজেকে পুরোপুরি সফল উদ্যোক্তা হিসাবে মনে করবেন বলে আত্মবিশ্বাসী এই উদ্যোক্তা। জীবনের দেখা প্রতিটা স্বপ্নকে সত্যি করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করেন এই পরিশ্রমী উদ্যোক্তা।

তিনি নিজের একটা টেক্সটাইল মিল এবং একটা গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠান’র স্বপ্ন দেখেন। তাছাড়াও তিনি তার কম্পানির বিভিন্ন প্রোডাক্ট বিদেশে রপ্তানি করে দেশের রেমিট্যান্স বৃদ্ধিতে অবদান রাখতে চান।

মার্জিয়া মৌ, উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here