উদ্যোক্তা মারজীয়া মেহজাবীন এর মা মাহমুদা খাতুন,বাবা আর মায়ের ভুমিকাটা সব সময় মা পালন করে এসেছেন। তাই তিনি মায়ের পরিচয়টাই দিতে ভালোবাসেন। তিন বোনের মধ্যে তিনিই বড়। গ্রামের বাড়ি নারায়ণগঞ্জেই তার বেড়ে উঠা। শান্ত মারিয়াম ইউনিভার্সিটি থেকে ফ্যাশন ডিজাইনিং এ অনার্স শেষ করেন। গ্র্যাজুয়েশনের আগেই বিয়ে হয়েছিলো আর গ্র্যাজুয়েশন শেষ করতেই এক সন্তানের মা হই তাই জব করা হয়ে উঠেনি।
বাচ্চার আড়াই বছর বয়সে তার এই লেডি ট্রাভেল এজেন্সীকে প্রতিষ্ঠা করেন। উদ্যোক্তার ভ্রমন পিপাসু মন অথচ সমাজে নারী ভ্রমনকারীদের নিরাপত্তাহীনতার কথা বিবেচনা করে তার উদ্যোক্তা মন প্রথম সংকল্পবদ্ধ হয় নারী ভ্রমনকারীদের জন্য এই দেশে কিছু করার।
শুরুটা ছিলো একটি ফেইসবুক পেইজ এবং গ্রুপের মাধ্যমে,এরপর বিভিন্নভাবে এবং তার কাজের মাধ্যমে প্রসারিত করতে থাকেন তার এই এজেন্সীকে। শুরুতে তার বিনিয়োগ ছিলো দেড় লাখ টাকার মত।এরপর আর পিছু ফিরতে হয়নি। বিভিন্ন দেশে নারীদের ভ্রমণ নিয়ে মুলত কাজ করছেন।এখন পর্যন্ত ভ্রমণকৃত দেশের সংখ্যা ১২ টি। সর্বমোট ৬ জন নারী কর্মী নিয়ে তাদের এই প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়াও দেশ ও বিদেশে অসংখ্য ট্রাভেল এজেন্সীর সাথে ব্যবসায়ীক সম্পর্কের কারনে সাহায্য পাচ্ছেন।
তার অনলাইন পেইজটির নাম হলো Lady travelers Bangladesh (LTB)। তার প্রতিষ্ঠানটি নারী ভ্রমনকারীদের জন্য সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমী একটি প্রতিষ্ঠান এবং এই নামেই তাদের ব্যবসায়ের নাম করন করা হয়েছে। মাসে সর্বনিম্ন ৮ টি থেকে সর্বোচ্চ ১৩ টি পর্যন্ত ট্রিপ তারা করিয়ে থাকেন। উদ্যোক্তা হবার চেষ্টা মূলত নিজের মেধাকে কাজে লাগিয়ে সমাজে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য। তবে ব্যতিক্রম চিন্তা প্রথম থেকেই ছিলো, শুধু নারীদের ভ্রমণ নয়, তাদের নিরাপত্তার লক্ষ্যে কাজ করে সমাজ সেবায় ভুমিকা রাখাও একটি অনেক বড় উদ্দেশ্য ছিলো।
ভবিষ্যতে তাদের প্রজেক্ট আরো অনেক বড় করে দেশের বাইরের প্রবাসী নারীদের জন্যেও কিছু করার ইচ্ছে রয়েছে পাশাপাশি দেশের নারীদের ভ্রমনে সার্বিক সহায়তা করা এবং তাদেরকে নিরাপদ একটি জীবনে পৌছে দেওয়াই তাদের মূল লক্ষ্য। উদ্যোক্তা বলেন, সব কিছু ছাপিয়ে ভ্রমণ একটি মানসিক রোগ নিরাময়ের ঔষধ হিসেবে যেমন কাজ করে তেমনি দেশের প্রতিটি নারীর ডিপ্রেশন দূর করার বলিষ্ঠ সহায়তা হিসেবে লেডি ট্রাভেলারস বাংলাদেশ অবদান রাখবে আজীবন এই হলো উদ্যোক্তার স্বপ্ন।
তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন “স্বপ্ন দেখতে থাকো, স্বপ্নের কোনো হার-জিত নেই। সব স্বপ্নই বাস্তবায়ন করতে হবে অথবা সফল করতে হবে এমনটি নয় বরং কখনো কখনো নিজের মেধা মানুষের জীবনে উপকারে আসলেও তুমি সফল। তাই স্বপ্ন দেখো, মানুষকে সহায়তা করার লক্ষ্যে কাজ করো।সবচাইতে বড় হলো প্রচেষ্টা। পরিশ্রম কখনো নিরাশ করেনা এই প্রকৃতির নিয়ম।”
মাসুমা সুমি,
উদ্যোক্তা বার্তা