ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে পড়ার সময় হুমায়রা আনজির প্রথম উদ্যোক্তা হওয়ার কথা ভাবেন। সমাজে আত্মনির্ভরশীল হবার জন্য, নিজের পরিচয়ে একটা অবস্থান গড়ার জন্য এ ধরনের ভাবনা মাথায় আসে তার। উদ্যোক্তা হবার যাত্রা শুরু করতে গিয়ে সাথে পেয়ে যান তার প্রিয় বন্ধু নুসরাত জাহান মৌ কে। শুরুটা হয় মাত্র এক হাজার টাকা পুঁজিতে গহনা দিয়ে, কারণ ছোটবেলা থেকেই গহনা তৈরির প্রতি একটা বিশেষ আগ্রহ ছিল তার। তবে এখন গহনার পাশাপাশি তাঁতের শাড়ি, থ্রিপিস, জুতা, শৌখিন ডায়েরিও তার উদ্যোগের পরিসরে যুক্ত হয়েছে। তাদের ব্যবসা মূলত অনলাইন নির্ভর, ফেইসবুক পেইজের মাধ্যমেই তাদের পণ্য বিক্রি হয়ে থাকে নাম ব্যাসার্ধ (Beshardho)। আপাতত ঢাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও সারাদেশেই তাদের পণ্য ডেলিভারি হয়ে থাকে। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য তৈরি করে থাকেন, অনেক সময় প্রি অর্ডার নেওয়া হয়, মাসে আনুমানিক ১৫,০০০ টাকার পণ্য তারা ডেলিভারি দিয়ে থাকেন।

সম্মানিত উদ্যোক্তা হুমায়রা আনজির তিন ভাইবোনের মধ্যে সবচেয়ে ছোট সন্তান। গ্রামের বাড়ি চাটখিল, নোয়াখালী এবং বড় হয়েছেন চট্টগ্রামে। মূলত আত্মনির্ভরশীল ও স্বাবলম্বী হওয়ার ভাবনা থেকেই তাদের এই উদ্যোগ, তারা রিসাইকেল নিয়েও কাজ করেন, যেমন পুরোনো কাপড়ের ভালো অংশটুকু নিয়ে সেটা ব্যবহারযোগ্য করে শৈল্পিক রূপ দেওয়া হয় যা থেকে বিভিন্ন গহনা ও ডায়েরি তৈরি করা হয়ে থাকে। এভাবে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে বিভিন্ন জিনিস ব্যবহার করে টেকসই পরিবেশ এবং পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে কিছুটা হলেও ভূমিকা রাখতে পারবেন বলে আশা করেন।

ভবিষ্যতের পরিকল্পনায় তারা জানান, “ব্যাসার্ধকে একটি ব্র্যান্ড হিসেবে দেখতে চাই যেখানে নারীদের কাজ করার সুষ্ঠু পরিবেশ থাকবে, সাথে দেশের বেকার সমস্যার সমাধানে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে।”
নতুনদের জন্য তাদের পরামর্শ হলো যারা চাকরির পেছনে ছুটছেন, তারা চাকরীর পেছনে না ছুটে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করুন। যারা নতুন উদ্যোগ গ্রহন করছেন তাদের সবার জন্য শুভ কামনা এবং এটাই প্রত্যাশা তাদের কাছে সবাই মিলে যাতে বেকার সমস্যার সমাধান করতে পারেন এবং দেশকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করতে পারেন ভবিষ্যতের অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশ গড়তে।
মাসুমা শারমিন সুমি,
উদ্যোক্তা বার্তা