ফাহমিদা মার্ট ২০২০ এর আগস্ট থেকে প্রায় দেড় বছর ধরে মানুষের আস্থার স্থান। দিনাজপুরের ঐতিহ্য বাহী চিনিগুড়া চাল, কাটারি ভোগ চাল, দিনাজপুরের মুগ পাপড়, সোনা মুগ ডাল, মৌসুমী ফল এছাড়াও দিনাজপুরের পাশাপাশি তার মার্ট এ যশোরের বিভিন্ন পণ্যও পাওয়া যায় যশোরের চালকুমড়ার বড়ি, খেজুরের গুড় এর পাটালি, ঘানি ভাঙা সরিষার তেল এবং উদ্যোক্তার নিজ তত্বাবধানে করা সব ধরনের গুড়ো মসলা।
এছাড়াও উদ্যোক্তার নিজ হাতে বানানো পুডিং তার সিগনেচার পণ্য। এটা সবাই খুব পছন্দ করে। ভোক্তার স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে লাল গমের আটাও রয়েছে তার উদ্যোগের মাঝে।
উদ্যোক্তার যাত্রাপথে ছিল মেশানো একটা অবস্থা। কখনও কিছু কিছু বাধা আসলেও উদ্যোক্তা তার অদম্য ইচ্ছা দ্বারা সব বাধা পেরিয়েছেন। একজন নারী হিসেবে তার পণ্য গুলো নিয়ে কাজ করা একটু কঠিন হলেও উদ্যোক্তার উৎসাহ অনেক বেশি। তার পণ্যের সরবরাহকারীরা তাকে অনেক সাহায্য করেছেন। তাদের জন্য উদ্যোক্তার পথচলা অনেকটা মসৃন হয়েছে। অনেক এ হাসিঠাট্টা করে বলে ডিজিটাল দোকানদার যা উদ্যোক্তা কে আরও বেশি অনুপ্রেরণা দেয়। তবে সবচেয়ে বেশি বাধা এসেছিল ডেলিভারি নিয়ে। এই সেক্টর টাতে আমরা অনেক পিছিয়ে। তবে উদ্যোক্তা তার চেষ্টায় এটা থেকে বের হয়ে এসেছেন।
উদ্যোক্তার বাধা পেরোনোর ব্যাপারে তার কাছে জানতে চাইলে বলেন,”উদ্যোগে সময় দিতে হবে পাশাপাশি কাজের প্রতি একটা ভালোবাসা থাকতে হবে তাহলে কোন বাধায় বাধা না।প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তির কাছে সব কিছু পরাজিত হয়।”
করোনাকালীন সময়ে ঘরে বসে থাকা থেকেই শুরু উদ্যোগ জীবনের। তারপর এক বন্ধুর দেওয়া আমন্ত্রণে উই তে যোগ দেওয়া। এরপর থেকে পথচলা শুরু উদ্যোক্তার। তার এই যাত্রাপথের ব্যাপারে আরও জানতে চাইলে তিনি উদ্যোক্তা বার্তা কে জানান, “আমাদের শ্রদ্ধেয় রাজীব আহমেদ স্যার এর অনুপ্রেরণা পেয়ে ডিজিটাল স্কিল অব বাংলাদেশ এ লেখা শুরু করি।এ এক অন্য জগত যেখানে অনেক কিছু শিখেছি।”
উদ্যোক্তার বয়স ৪৫ বছর কিন্তু পড়ালেখা করতে তার রয়েছে ব্যাপক উৎসাহ। পড়ালেখার আসলেই কোন বয়স নেই। মনোবিজ্ঞান নিয়ে মাস্টার্স করেছেন এবং এল এল বি করেছেন তিনি। ঢাকা বার এর সনদপ্রাপ্ত একজন উকিল উদ্যোক্তা ফাহমিদা পারভীন। তার একমাত্র সন্তান এর কথা ভেবে ঘরে বসে কাজ করাতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন উদ্যোক্তা আর এই জন্যই অনলাইন বেছে নিয়েছেন উদ্যোক্তা।
উদ্যোক্তা ফাহমিদা পারভীন জানান তার স্বপ্নের কথা, তার চিন্তা ভাবনার কথা। তিনি বলেন, “একজন উদ্যোক্তা হিসাবে সমাজের ব্যাপক পরিবর্তন আনতে চায়।অনলাইন এর মাধ্যমে ভালো জিনিস টি পৌঁছে দিতে চায় সবার ঘরে ঘরে।অনলাইন এর প্রতি মানুষের যে নেগেটিভ ধ্যান ধারণা আছে সেটার পরিবর্তন করতে চায়।
কাজের বেলায় ছেলে মেয়ে বলে কিছু নেই এই ধারণা বাস্তবায়ন করতে চায়।”
নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে তার মতামত বা চিন্তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “নারী শুধু রান্না করবে এই ধারনার পরিবর্তন চায়।আমরা নারী আমরা সব পারি আর সব নিয়েই এগিয়ে যেতে চাই।”
উদ্যোক্তা ফাহমিদা পারভীন চান ভেজাল মুক্ত বাংলাদেশ। সুস্থ মা সুস্থ বাচ্চা। প্লাস্টিকের চাল আর রং মিশ্রিত মসলা খেয়ে কত মা তার মাতৃত্ব হারাচ্ছে তার বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানে দাঁড়াতে চান উদ্যোক্তা।
সাকিব মাহমুদ,
উদ্যোক্তা বার্তা।