বিনা পুজিঁতে শুরু করে এখন প্রায় ১০০টি পণ্য নিয়ে কাজ করছেন সাবা

0
উদ্যোক্তা সাবা বিনতে আমিন

পরিবারের প্রায় সকল সদস্যই ব্যবসায়ের সাথে জড়িত, তাই ছোটবেলা থেকেই সাবা বিনতে আমিনের এ দিকে বেশ ঝোঁক ছিল। তাই কখনো কোথাও চাকরি করেননি । সবসময়ই ইচ্ছা ছিল উদ্যোক্তা হওয়ার। তার উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প শুরু নাকিয়া থেকে। নাকিয়া অনলাইন বেসড একটি পেইজ যা তিনি ২০১৫ সালে খোলেন। সম্পূর্ন প্রাকৃতিক উপাদানে ঘরে তৈরী জিনিস বিক্রি করা হয় এখানে।

খুলনা শহরে যেহেতু বড় হওয়া, তাই সবসময় খাঁটি, ভেজালমুক্ত খাবার খেয়েই বড় হয়েছেন। কিন্তু এরপর ঢাকা আসায় ভেজালযুক্ত পণ্যের ভিড়ে খাঁটি পণ্য খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হয়ে যায়। যা অবশ্যই তার স্বাস্থ্যে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছিল। এরপর তিনি ভাবলেন, ‘কেনো না আমি যুক্তিসঙ্গত দামে ভেজাল মুক্ত পণ্য বিক্রি করা শুরু করি’। এখনকার মানুষ খুব স্বাস্থ্য সচেতন। এজন্য তিনি প্রথম যে পণ্য আনেন তা ছিল সুন্দরবনের খাঁটি খলিশা ফুলের মধু।

যখন তিনি প্রথম শুরু করেন, কোনো পুঁজি ছাড়াই শুরু করেন। তার পরিচিত এক ডিলারের কাছ থেকে বাকিতে মধু সংগ্রহ করেন। সেটা বিক্রি করে যে মুনাফা হয় তা আবার পুনরায় বিনিয়োগ করেন। এভাবেই নাকিয়া এখন এত বড়। মধু, তেল, নানা ধরনের অর্গানিক পাউডার – স্কিনকেয়ার এবং হেয়ারকেয়ার এর জন্য, হ্যান্ডমেইড সাবান ইত্যাদি সহ আরো প্রায় ১০০টির মতো পণ্য নিয়ে কাজ করছেন।

অনলাইন অফলাইন মিলিয়ে ৩-৪ জন কর্মী আছে। কোনো ফ্যাক্টরি নেই আপাতত। পরিচালনা কার্যক্রম প্রায় সবই তার অফিসে থেকে করেন। বর্তমানে তার দুইটি বিজনেস। একটির নাম “নাকিয়া” অন্যটি “সাবা”। নাকিয়া থেকে অর্গানিক প্রোডাক্ট বিক্রি করা হয়, আর সাবা থেকে ট্রেডিশনাল জামদানি নিয়ে কাজ করছেন।

বিদেশে রপ্তানি করা হয় না তার পন্য। তবে বিদেশ থেকে প্রচুর অর্ডার আসে যারা তাদের আত্নীয়দের থেকে প্রোডাক্টস অর্ডার করায়। এরপর তা বিভিন্ন দেশ পর্যন্ত নিয়ে যায়। বলতে গেলে তারা তার রেগুলার কাস্টমার। দেশের বাইরে থাকলেও তারা প্রতিনিয়তই তার প্রোডাক্ট ব্যবহার করেন। এছাড়া সারা বাংলাদেশেই আমার পণ্য যায়।

তার প্রোডাক্ট প্রাইস রেঞ্জ হচ্ছে ১৫০ টাকা থেকে শুরু করে ১৩০০ টাকা পর্যন্ত। গ্রাহকদের প্রয়োজন অনুসারেই পণ্য সরবরাহের চেষ্টা করেন তিনি। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু পন্য হলো – সুন্দরবনের খোলিশা ফুলের মধু, হ্যান্ডমেইড সাবান, পেঁয়াজের তেল – চুলের গ্রোথ বৃদ্ধির জন্য ব্যবহার করা হয়, অর্গানিক টারমেরিক পাউডার – ত্বক ও স্বাস্থ্যের যত্নে ইত্যাদিসহ আরো অনেক পণ্যই আছে যা খুব দ্রুত স্টক আউট হয়ে যায়।

উদ্যোক্তা বার্তাকে উদ্যোক্তা সাবা বলেন, ‘ব্যবসায় থেকে আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হলো মানুষের ভালোবাসা। আমি অনেক মানুষের উপকার করতে পেরেছি এ ব্যবসায়ের মাধ্যমে। যেমন – আমার পেঁয়াজের তেল ব্যবহার করে অনেক মানুষের চুল পরা বন্ধ হয়েছে। কারো হয়ত ত্বকে অনেক দাগ রয়েছে, যা আমাদের অর্গানিক পাউডার, সোপ ব্যবহার করে অনেকাংশে কমে গিয়েছে। এসব কাস্টমার থেকে আমি এভাবে প্রতিনিয়তই দোয়া পাচ্ছি। আমার কাছে মনে হয় এর থেকে বড় প্রাপ্তি আর কিছুই হতে পারে না’।

সেতু ইসরাত,
উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here