বারো ভাজা বিক্রি করে স্বাবলম্বী রাজশাহীর সুজানগরের আব্দুল আজিজ। পাঁচ সদস্য নিয়ে এখন তার সুখের সংসার। নগরীর সপুরা এলাকায় বড় মঠ পুকুর সংলগ্ন মাঠের বাইরে রাস্তার পাশে নিয়মিত তার ভাজা বিক্রির ভ্যান গাড়িটি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় এই উদ্যোক্তাকে। দোকানের সামনে মানুষ আর মানুষ। হই-চই, আড্ডা আর তার মাঝেই কেউ কেউ বলে উঠছেন, ‘মামা আমাকে পাঁচ টাকার বারো ভাজা দেন আবার কেউবা বলছেন, দশ-বিশ টাকার।’
কখনো সপুরা সিল্ক শোরুমের পাশে, কখনো ক্যান্টনমেন্ট স্কুলের গেটে ঘুরে ফিরে বিসিকের মধ্যেই দেখামিলে আজিজ মামার বারো ভাজা নামের এই ভ্রাম্যমাণ প্রতিষ্ঠানটির। তবে সকালের দিকে এইদিকে দেখা গেলেও বিকেলে বড়মঠ পুকুর মাঠের ঠিক সামনের রাস্তায় দাঁড়ান তিনি।
স্কুল পড়ুয়া থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকা, অভিভাবক, বিসিক শিল্পনগরীর অন্যান্য উদ্যোক্তাগণ এবং তাদের সহযোদ্ধা বা দাদু-নাতি বা বন্ধুমহল সকলেই ভিড় জমান বারো ভাজা খেতে। মাসব্যাপি শুরু হওয়া রাজশাহী বিসিক উদ্যোক্তা মেলা ২০২২-এর জন্য এই উদ্যোক্তা আগের তুলনায় বেশি ব্যস্ত সময় পার করেছেন।
চানাচুর, নিমকি, ছোলা, মটর, চিড়া ভাজা, শসা, কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ, ঘরে তৈরি স্পেশাল মশলা সহ বারোটিরও বেশি উপকরণ দিয়ে তৈরি হয় বারো ভাজা। বাঙালীদের কাছে স্ট্রিট ফুডগুলোর মধ্যে এটি সবসময় জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান করে।
উদ্যোক্তা আজিজ বলেন, “আগে আমি রিক্সা চালাতাম আস্তে আস্তে যখন বয়স বাড়তে থাকে তখন কয়েকবছর আগে আমি এই কাজ শুরু করেছি। দোকান নিয়ে আসতে-আসতে সিরিয়াল দেওয়া শুরু হয় উপকরণগুলো শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই সিরিয়াল চলে। কখনো ক্রেতা দোকানের সামনে থাকলেও উপকরণগুলো শেষ হয়ে যাওয়ায় ক্রেতাদের বলতে হয় ‘মামা কাল আবার আইসেন’। আমার সহধর্মিণী এবং আমার কন্যা ভাজা মাখানোর মশলা তৈরি করে দেন, ছেলেরাও সহযোগিতা করেন। এভাবেই চলছে বলে আলহামদুলিল্লাহ আমি এখন আমার পরিবার নিয়ে ভালো আছি। উদ্যোক্তা আজিজ আরো বলেন যতদিন আমি পারবো এই কাজ করে যাবো সকলের ভালোবাসা, মামা ডাক শুনে মনের ভেতরের আনন্দ নিয়েই বাকিদিনগুলো কাটাতে চাই।”
তামান্না ইমাম,উদ্যোক্তা বার্তা