“সোহানা শোভা” পেশায় একজন শিক্ষার্থী। পড়াশোনা করছেন ঢাকা আর্ট কলেজে, ড্রইং এন্ড পেইন্টিং বিভাগের ১ম বর্ষে। ছোট বেলা থেকেই চিত্রশিল্পী হওয়ার স্বপ্ন। নিজের আকাঁ এবং হাতের কাজের প্রতি ছিল এক নেশা। আর সেই নেশা কে পেশা হিসেবে তুলে ধরেন ‘বিমূর্ত’ নামে।
বাবা মায়ের ২য় সন্তান সোহানা শোভা। জন্ম ও বেড়ে ওঠা খুলনা বিভাগের যশোর জেলায়। পড়ালেখার সুবাদে ঢাকার এক হোস্টেলে থাকাকালীন একটি স্টার্টআপ কোম্পানিতে জব শুরু করেন ডিজাইনার হিসেবে। ধরা বাধা নিয়মে কাজ করার অনীহা থেকে ছেড়ে দেন। বাবার থেকে হাত খরচের ৫০০ টাকা নিয়ে নিজেই কিছু করার ভাবনা থেকে উদ্যোগ শুরু করেন।
৫০০ টাকায় গামছা, পাট, সুতা, ও আঁঠা নিয়ে তা দিয়ে গয়না বানিয়ে অনলাইনেই পথ চলে “বিমূর্ত”। স্বল্প মুলধন নিয়ে শুরু করাই অনেক বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে তাকে। কাচামাল ও অন্যান্য দ্রব্যাদি সংগ্রহের জন্য পরিচিতদের থেকে টাকা ধার নিতে হয়। শুনতে হয়েছে সমালোচনা।
সমালোচকের সমালোচনায় একটা সময় এক অজানা ভয়ও গ্রাস করে তাকে, ক্রেতারা পছন্দ করছে না তার কাজ। তখন তার বাবা সহ কাছের বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা সাহস যুগায়।
গ্রাহক প্রথমত অনলাইন থেকেই শুরু হয়েছিলো। এবং আস্তে আস্তে তার আশেপাশের বন্ধুমহল থেকে গ্রাহক তৈরী হতে থাকে।
শুরুটা গয়না দিয়ে হলেও এখন তৈরি হচ্ছে শাড়ী, ব্লকপ্রিন্ট, গামছার তৈরী কুর্তি, টপস, ব্লাউজসহ কাস্টমাইজ পণ্যের অর্ডার নিয়ে থাকেন। এখন মাসে স্থায়ী ভাবে প্রায় ১০ -১৫ জন গ্রাহক বিমূর্তের পণ্য সংগ্রহ করে থাকেন। মাসে বিশ থেকে ২৫ হাজার টাকার মতো সেল হয়। তবে সময় ভেদে কম বেশিও হয়ে থাকে।
তিনি বলেন, “শুরুটা শখের বসে হলেও স্বল্প মুলধন হওয়ায় অনেক বাধা বিপত্তির সম্মুখীন হতে হয়েছে। মাঝপথে এসে ভয় পেলেও এখন দেশের পাশাপাশি দেশের বাইরে কলকাতাতেও আমার পণ্য গিয়েছে। আমার হাতে করা গয়না ও শাড়ির বেশ কদর পেয়েছি কলকাতায়।
অনলাইনে শুরু করলেও এখন বিভিন্ন ইভেন্ট কাভার করি ক্রেতাদের আরো কাছে পৌঁছে যেতে। অনলাইনের পাশাপাশি আমার বন্ধু মহলের একটা অংশও আমার নিয়মিত ও অনিয়মিত ক্রেতা।
পড়াশোনার পাশাপাশি একাই কাজ করে যাচ্ছেন উদ্যোক্তা “সোহানা শোভা”। নিজের বুদ্ধিমত্তা এবং দুঃসাহসিকতা দিয়ে বিমূর্ত কে আরো অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে চান। চান শতভাগ বাঙালিয়ানা আঁকড়ে ধরে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে।
হাবিবুর রহমান,
উদ্যোক্তা বার্তা