বাণিজ্য মেলায় কোটি টাকার পরী খাট!

0

রাজধানীর পূর্বাচলে ২৭তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় একটি পরী পালং খাটের দাম এক কোটি টাকা। খাটটির সঙ্গে মোটর সাইকেল ও স্বর্ণের গয়না ফ্রি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিক্রেতা উদ্যোক্তা মো. নুরুন্নবী।

খাটটির ডিজাইনারও নুরুন্নবী খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলার জালিয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি পেশাদার হিসেবে কোনো ফার্নিচার ব্যবসায়ী নন, একজন পল্লী চিকিৎসক। শখের বশে খাটটি কারিগর দিয়ে তৈরি করেছেন।

খাটটির বিশেষত্ব সম্পর্কে স্টলের দায়িত্বে থাকা অন্তর মাহমুদ বলেন, “পরীর ডিজাইনে তৈরি করায় নাম দেওয়া হয়েছে পরী পালং খাট। এটি চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলায় তৈরি করা হয়েছে। এটি মেশিনের তৈরি হয়নি। সম্পূর্ণ হাতে তৈরি করা হয়েছে। এর ডিজাইন কিংবা ক্যাটালগ বিশ্বের কোথাও নেই। আর কখনো করাও হবে না। সৃষ্টিশীল চিন্তাভাবনা থেকে শখের বশে খাটের ডিজাইন করেছেন আমার ভাই। তৈরি করেছেন স্থানীয় কারিগর আবু বক্কর সিদ্দিক। ২০১৭ সালে তিনি ও তার এক সহকারী মিলে কাজ শুরু করেন। তিন বছর দুই মাসে কাজ সম্পন্ন করেছেন তারা। কারিগরের মজুরিসহ ৪০-৪১ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। পাশাপাশি বাণিজ্য মেলায় স্টল নেওয়াসহ নানা খরচ মিলিয়ে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫০ লাখ টাকা।”

মো. নুরুন্নবী বলেন, “খাটের চার কোণে বড় চারটি পরীর হাতে চারটি প্রজাপতি রয়েছে। এর পাশে চারটি চাঁদ ও ছয়টি সূর্যের নকশা আছে। বিভিন্ন অংশে রাজকীয় কারুকাজ। পাটাতনগুলো ভাঁজ করে তুলে রাখার ব্যবস্থা আছে। চট্টগ্রামের সেগুন কাঠের ফাইবার দিয়ে এটি তৈরি। প্রায় ২০০ ঘনফুট কাঠ থেকে ৮৫ ঘনফুট কাঠের ফাইবার বের করে খাটটি তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি আইনগত ব‍্যবস্হা নেওয়া আছে, যাতে এই খাটটি কেউ কপি না করতে পারে। সে গ্যারান্টি ক্রেতাকে আমি দেব।”

তিনি বলেন, “পার্বত্য চট্টগ্রামের এক সংসদ সদস্য ৮০ লাখ টাকায় খাটটি কিনতে চেয়েছিলেন। ভারতীয় এক বন্ধুকে তিনি খাটটি উপহার দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আমি সময় চেয়ে নিয়েছি। আমি চাই আগে আমাদের দেশের মানুষ খাটটি দেখবে। তারপর এ খাট যার ভাগ্যে আছে সে পাবে। এজন্য আগেই বিক্রি না করে বাণিজ্য মেলায় খাটটি তুলেছি।”

কাঠের বার্নিশসহ আনুষঙ্গিক কাজের বিষয় উদ্যোক্তার ভাই অন্তর মাহমুদ বলেন, “এটি সৃজনশীল শিল্পকর্ম। শিল্পকর্মের কোনো মূল্য হয় না। আমরা খাটের দাম এক কোটি টাকা নির্ধারণ করেছি। মেলায় এখন পর্যন্ত ৫১ লাখ টাকা দাম উঠেছে। আশা করছি, প্রত্যাশিত দাম পাবো। যিনি এই শিল্পকে মূল্যায়ন করে খাটটি কিনবেন।”

মেলায় ঘুরতে এসে দর্শনার্থী আরিফ হোসেন জানান, ‘এমন খাটের কথা জমিদারদের গল্পে শুনেছিলাম। তাই খাটটি পরিবারসহ দেখতে চলে এসেছি। খাটের দামটা স্বাভাবিক কারণেই অনেক বেশি! এটি তৈরি করা হয়েছে অসাধারণ ভাবে। অবাক হচ্ছি এটি কোনো মেশিন প্রক্রিয়া ছাড়া শুধুমাত্র তিন জন কারিগর দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। খাটটি দেখে শান্তি লাগছে। আমাদের দেশে এখনো এমন পণ্য পাওয়া যাচ্ছে।’

খাটের নকশায় রয়েছে চার কোণে দাঁড়িয়ে পরীর আদলে চারটি মূর্তি। বিভিন্ন অংশে আরও ১২ টি পরী রয়েছে। আধুনিক, নান্দনিক কারুকাজ এবং শৈল্পিক আবহে এটি তৈরি করা হয়েছে। খাটটি দেখতে স্টলের সামনে ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা।

মেহনাজ খান
উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here