গত শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশ আইকিউ অলিম্পিয়াড (বায়ো)’-এর ৫ম আসরের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়। ভারতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক আইকিউ অলিম্পিয়াড- ২০২১-এ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা ২৮টি মেডেল অর্জন করেছে। যার মধ্যে ১২টি গোল্ড, ১২টি সিলভার এবং ৪টি ব্রোঞ্জ মেডেল নিয়ে এসেছে মেধাবী শিক্ষার্থীরা। এবারের আন্তর্জাতিক অলিম্পিয়াডের আয়োজন ছিল সম্পূর্ণ অনলাইনে। বাংলাদেশ আইকিউ অলিম্পিয়াড কর্তৃক আয়োজিত বাছাই রাউন্ডে উত্তীর্ণ হওয়া শিক্ষার্থীরা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যুক্ত হয়েছিল আন্তর্জাতিক আইকিউ অলিম্পিয়াডে।
আইকিউ অলিম্পিয়াডের আহ্বায়ক জনাব মশিউর রহমান এবং কথাসাহিত্যিক ডা. মোহিত কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খান এছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট নিখিল চন্দ্র দত্ত, ঢাকা ইম্পেরিয়াল কলেজের সহকারী অধ্যাপক নাদির হোসেন, ড. এ এম ওয়াজেদ মিয়া মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ফরহাদুল কবির, ব্রেইনেক্সের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন, নির্বাহী পরিচালক আবু সাত্তার, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় সদস্য হুমায়ুন সুলতান প্রমূখ।
৫টি ক্যাটাগরিতে ৩টি যাচাই পর্বের মাধ্যমে আইকিউ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। একটি মেধাবী প্রজন্ম তৈরির লক্ষ্যে প্রতিবছর এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। যেখানে প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করতে পারে। এই অলিম্পিয়াডের উদ্দেশ্য হচ্ছে শিক্ষার্থীদের চিন্তা ভাবনা, যুক্তি এবং বুঝতে পারার দক্ষতা যাচাই করা। স্কুল/কলেজ, জাতীয় পর্যায়, টেলিভিশন পর্যায় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মোট চারটি পর্বে এই অলিম্পিয়াডের আয়োজন করা হয়। অংশগ্রহণকারী বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মেডেল এবং শিক্ষাবৃত্তিসহ টেলিভিশনে অংশগ্রহণ এবং বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ থাকছে।
বাংলাদেশ আইকিউ অলিম্পিয়াডের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান সম্বয়ক জনাব মশিউর রহমান ২০১৭ সাল থেকে শিক্ষকতার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের বুদ্ধিমত্তার বিকাশে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। বিভিন্ন কোর্সের মাধ্যমে শ্রেণীভিত্তিক শিক্ষার্থীদের মাঝে গাণিতিক, বিজ্ঞানভিত্তিক, ইতিহাস, ভূগোলসহ বিভিন্ন বিষয়ে পাঠদানের মাধ্যমে তাদের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেয়া হয়৷ তিনি মনে করেন, ‘একটা জাতির সার্বিক উন্নতি নির্ভর করে তার বুদ্ধিভিত্তিক চর্চার উপর। সেক্ষেত্রে একাডেমিক সিলেবাসের বাইরেও আই কিউ ভিত্তিক জ্ঞান চর্চা থাকাটাও খুব জরুরি।’
সভাপতির বক্তব্যে মোহিত কামাল শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “জীবনের প্রতিটি ধাপে সফলতার জন্যে প্রস্তুতির দরকার। প্রস্তুতি থাকলে সফলতা আসবেই।” তিনি আরো বলেন, “শিক্ষার্থীদের আইকিউর সঙ্গে আবেগ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা থাকতে হবে। এই দুটি বিষয় থাকলে একজন মানুষ জীবনে অনেক এগিয়ে যাবে। এজন্যে এই প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের বুদ্ধির সঙ্গে আবেগের নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। একই সঙ্গে লক্ষ্যমুখী যাত্রায় এগিয়ে যেতে শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তির প্রতি আসক্তি কমাতে হবে। তাহলে তাদের পুরো মেধার ব্যবহার করার সুযোগ বাড়বে। তা না হলে আইকিউ থাকলেও সেটি কোনো কাজে আসবে না।”
সারা দেশ জুড়ে শিক্ষার্থীদের মস্তিষ্কের ক্ষমতা আরো বেশি সক্রিয় এবং আরো বেশি বৃদ্ধি করার একটি মহৎ অভিযাত্রা হচ্ছে বাংলাদেশ আইকিউ অলিম্পিয়াড। সারা দেশ থেকে শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং শিক্ষকরা এই অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করেন এবং অত্যন্ত আনন্দ চিত্তে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
সেতু ইসরাত,
উদ্যোক্তা বার্তা