বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কারের জন্য মনোনীত ৪৪ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান

0

কৃষি খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ৪৪ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার ১৪২৫ ও ১৪২৬-এ ভূষিত করা হচ্ছে। এর মধ্যে ১৪২৫ সনের জন্য ১৫ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এবং ১৪২৬ সনের জন্য ২১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার দেওয়া হবে।

কৃষি গবেষণা ও সম্প্রসারণ, সমবায়, প্রেরণা, প্রযুক্তি উদ্ভাবন, বাণিজ্যিক চাষ, বনায়ন, পশুপালন এবং হাঁস-মুরগি ও মাছ চাষের ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য তাদের এ পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে।

১২ অক্টোবর রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) আনুষ্ঠানিকভাবে ৪৪ ব্যক্তি ও সংগঠনের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কৃষি মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন কৃষিমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কার ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।

কৃষিক্ষেত্রে সাফল্য ও অবদানের জন্য প্রতি বছর ৩২ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার দেওয়ার বিধান রয়েছে। পুরস্কারগুলোর মধ্যে প্রথম পুরস্কার পাঁচটি স্বর্ণ, দ্বিতীয় পুরস্কার ৯টি রৌপ্য ও তৃতীয় পুরস্কার ১৯টি ব্রোঞ্জ পদক। তবে, গত দুই বছরের পুরস্কারের জন্য আবেদন একসঙ্গে আহ্বান করা হয়। তাদের মধ্য থেকে বাছাই করে ৪৪ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে অনুষ্ঠানে পুরস্কৃত করা হবে। এদিন নির্বাচিত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা তিনটি স্বর্ণ, ১৬টি রৌপ্য ও ২৫টি ব্রোঞ্জ পদক পাবেন।

১৪২৫ বঙ্গাব্দে পুরস্কার প্রাপ্তরা হলেন: কৃষি উন্নয়নে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও উদ্বুদ্ধকরণ প্রকাশনা ও প্রচারণামূলক কাজে স্বর্ণপদক বগুড়ার শেরপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ দফতরের ভেটেরিনারি সার্জন ডা: মো: রায়হান পিএএ। পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি উদ্ভাবন/ব্যবহার ক্যাটাগরিতে রৌপ্যপদক পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার চৌঠাইমহল গ্রামের মো: বদরুল হায়দার বেপারী। একই ক্যাটাগরিতে রৌপ্য পদক মো: হামিদুল হক (উপসহকারী কৃষি অফিসার, পাকুন্দিয়া, কিশোরগঞ্জ); পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি উদ্ভাবন ব্যবহারে কৃষিতে নারীর অবদানের ক্ষেত্রে রৌপ্য পদক শারমিন আক্তার (লক্ষ্মীপুর বাজার, ঝিনাইদহ সদর); প্রতিষ্ঠান/সমবায়/কৃষক পর্যায়ে উচ্চমানসম্পন্ন বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ, বিতরণ ও নার্সারি স্থাপনে রৌপ্য পদক পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার মো: দুলাল মৃধা। একইভাবে সাভারের মো: কোব্বাদ হোসাইন (বাণিজ্যিকভিত্তিক খামার স্থাপনে রৌপ্য পদক), একই অবদানে রৌপ্য পদক পাচ্ছেন রাজশাহীর গোদাগাড়ি মো: মনিরুজ্জামান মনির, প্রতিষ্ঠান ক্যাটাগরিতে প্যারামাউন্ট এগ্রো লিমিটেড (স্বর্ণ পদক), কৃষি গবেষণায় রাজশাহীর তানোরের নুর মোহাম্মদ (ব্রোঞ্জ পদক), পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি উদ্ভাবন/ব্যবহার ক্যাটাগরিতে পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ার বারেক হাওলাদার (ব্রোঞ্জ পদক), কৃষি উন্নয়নে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও উদ্বুদ্ধকরণ প্রকাশনা ও প্রচারণামূলক কাজে রংপুরের বুড়িহাটের হর্টিকালচার সেন্টারের মো: মজিদুল ইসলাম (ব্রোঞ্জপদক), নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের শফিকুল ইসলাম (ব্রোঞ্জ পদক), নওগাঁর পোরশা উপজেলার গৌতম কুমার সাহা (ব্রোঞ্জ), রাজশাহীর পুঠিয়ার মোছা: পার্নিমা বেগম (ব্রোঞ্জ), ঢাকা নবাবগঞ্জের নিপু ট্রেডার্স ব্রোঞ্জ পদক পাচ্ছেন।

১৪২৬ বঙ্গাব্দে পুরস্কারপ্রাপ্তরা হচ্ছেন: পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি/ উদ্ভাবন/ ব্যবহার ক্যাটাগরিতে রাজশাহীর গোদাগাড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: শফিকুল ইসলাম, বাণিজ্যিক ভিত্তিতে গবাদিপশু ও হাঁস মুরগি চাষে পাবনার ঈশ্বরদীর মো: আমিরুল ইসলাম স্বর্ণপদক পাচ্ছেন। এ ছাড়া রৌপ্যপদক প্রাপ্তরা হলেন- ঢাকা শেরে বাংলা নগরের মুহাম্মদ রকিবুল আহসান রনি, যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো: আইয়ুব হোসেন, খুলনার খালিশপুরের মোছা: হালিমা বেগম, যশোরের ঝিকরগাছার নাসরিন সুলতানা, সিলেটের আব্দুল হাই আজাদ বাবলা, মাদারীপুর হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক মো: সাইফুল ইসলাম, ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার মো: রফিকুল ইসলাম, খুলনা ডুমুরিয়ার আবুল হোসেন সরদার, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁর মো: বাবুল হোসেন। ব্রোঞ্জ পদক প্রাপ্তরা হলেন- দিনাজপুরের বিরল উপজেলার সাবেক কৃষি কর্মকর্তা (বর্তমানে এডিডি রংপুর) মো: মাহবুবার রহমান, ঝিনাইদহের কালিগঞ্জের মো: মকবুল হোসেন, সিরাজগঞ্জের মো: সহিদুল ইসলাম, খাগড়াছড়ির মহাল ছড়ির হ্লাশিং মং চৌধুরী, ময়মনসিংহের গৌরীপুরের মো: গাজী মামুদ, সিরাজগঞ্জের কামারখন্দের মো: মাহবুবুল ইসলাম, টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারের রিনা বেগম, নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলা কৃষি অফিসার মো: মোমরেজ আলী, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয়ের মো: রোস্তম আলী, পাবনার ঈশ্বরদীর মো: শাহীনুজ্জামান, বান্দরবানের তোও য়োও, ফেনীর মো: মজিবুল হক, মুন্সীগঞ্জের সিরাজ খান, টাঙ্গাইলের মধুপুরের ছানোয়ার হোসেন, রাঙামাটির রাজস্থলির মো: আবদুল আউয়াল, গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরের মো: শাকিল মিয়া, নড়াইলের তনিমা আফরিন এবং দিনাজপুরের রাখী দে।

প্রত্যেক স্বর্ণ পদক বিজয়ী পাবে ২৫ গ্রাম ওজনের ১৮ ক্যারেট স্বর্ণপদকসহ এক লাখ টাকা, রৌপ্যপদক বিজয়ী ২৫ গ্রাম খাঁটি রৌপ্য পদকসহ ৫০ হাজার টাকা এবং ব্রোঞ্জ বিজয়ী প্রত্যেকে পাবেন একটি করে ব্রোঞ্জপদকসহ ২৫ হাজার টাকা।

১৯৭৩ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্য স্বাধীন দেশের কৃষিভিত্তিক অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে এ পুরস্কার প্রবর্তন করেন, যা ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড পরবর্তী সরকার বাতিল করে। তবে, ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার বঙ্গবন্ধু প্রবর্তিত পুরস্কারটির প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার তহবিল আইন-২০০৯’ প্রণয়ন করে।

এ খাতের কার্যক্রম আরও গতিশীল করতে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার ট্রাস্ট আইন, ২০১৬ প্রণয়ন করা হয়।

ডেস্ক রিপোর্ট
উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here