দোয়েল চত্বর। বাঁক ঘুরলেই চোখে পরে মৃৎ শিল্পের নানান সব পণ্য। ঘামে ভেজা শার্টে প্রতিদিনের মত পণ্য সাজিয়ে বসেছেন মফিজুল ইসলাম।
সকাল ৯টায় দোকান সাজিয়ে পণ্য নিয়ে বসেন মফিজুল। জৈষ্ঠ্যের তপ্ত রোদে ১০ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে মৃৎ শিল্পের নানান পণ্য বিক্রি করেন তিনি। কঠিন পরিশ্রম করে ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার খরচ এবং পরিবার খুব সুন্দর করে পরিচালনা করে যাচ্ছেন মফিজুল ইসলাম। স্ত্রী রেহানা পারভীন সংসার এবং ছেলেমেয়ের যত্ন নেন।
ভোলা থেকে জীবিকার খোঁজে ১৯৮৬ সালে ঢাকায় এসে মফিজুল কনট্রাকটর হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন। তারপর তিনি কুমিল্লায় ছোট একটি মৃৎ শিল্পের কারখানায় কিছুদিন কাজ করেন। পরবর্তীতে ১৯৯২ সালে তিনি মৃৎ শিল্প নিয়ে কাজ করার উদ্যোগ নিয়ে চলে আসেন ঢাকায়। ছোট ভাইকে সাথে নিয়ে শুরু হয় পথ চলা। বিভিন্ন মেলা ঘুরে ঘুরে মৃৎ শিল্পকে ব্যবসায় রূপ দেন দুই ভাই। আজ একজন কারিগর দ্বারাই নিজেই পণ্য তৈরি করছেন উদ্যোক্তা মফিজুল।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মুবিনা আক্তার এখন একজন গৃহিণী। প্রায়শই ঘর সাজানোর জন্য মৃৎশিল্পের এই দারুণ সব পণ্য কিনতে এখানে আসেন। তার মধ্যে ফুলদানি গুলো ভীষণ পছন্দ মুবিনার। এছাড়াও নানান বয়সের ক্রেতারা ভিড় জমায় মফিজুল ইসলামের ছোট্ট দোকানটিতে।
মফিজুলের দোকানে প্রায় ৭০টিরও বেশি নকশার পণ্য আছে, যার দাম ২৫০-১৪০০ টাকা পর্যন্ত। এরমধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের প্রতিকৃতিটি বেশ চোখে পড়ার মত। কাজ করে খুব খুশি মফিজুল। দিনে উপার্জন হয় প্রায় হাজার থেকে বারশো টাকা। মৃৎশিল্পকে অবলম্বন করে বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। ছোট ছেলে ৭ম শ্রেনীতে এবং ছোট মেয়ে স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে। মফিজুল ছোট মেয়েকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেন- মেয়ে একদিন বিসিএস ক্যাডার হবে।
সংবাদে
সুমী – ইমু