উদ্যোক্তা তানজিয়া পড়াশোনা শেষ করে প্রথমে এক্সিম ব্যাংকে কিছুদিন চাকরি করেছেন তারপর আবার বিরতি দিয়ে একটা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে চাকরী করেছেন কিছুদিন। তিনি তার বাচ্চাদের স্কুলে বেকিং আইটেম টিফিনে দিয়ে দিতেন। তখন অন্য অভিভাবকগণ অনুরোধ করলেন তাঁদের বাচ্চাদের জন্যও করে দিতে। সেই থেকে শুরু।
স্কুলের অভিভাবকেরা যখন অনুরোধ করলেন তখন বাসায় এসে স্বামীকে বললেন এবং তিনি পরামর্শ দিলেন আগে নিজে প্রফেশনালি শিখে তারপর শুরু করতে। তারপর কয়েকটা প্রফেশনাল কোর্স করে অর্ডার নেয়া শুরু করেন উদ্যোক্তা। কোর্স গুলো করে, উপকরন এবং টুলস কেনা সহ প্রায় ২০০০০/- টাকা থেকে ২৫০০০/- টাকা পুঁজি নিয়ে শুরু করেছিলেন কাস্টমাইজড কেকস, ডেজার্ট, মূল পণ্য। তাছাড়াও কিছু সেভরি আইটেম আছে। প্রায় ২০-২৫ ধরনের রেগুলার আইটেম ছাড়াও ক্রেতাদের পছন্দ অনুযায়ী আইটেম বানিয়ে দেন।
যদিও এটা একটা হোম বেইজড বিজনেস তারপরেও সব মিলিয়ে ৬/৭ জন সর্বোপরি কাজ করেন। অনলাইনে পেইজ আছে। প্রতিষ্ঠানের নাম Cake Bake. মাঝে মাঝে বিদেশেও তার এখান থেকে কাস্টমাইজড কেক নিয়ে যায় ক্রেতারা। এখন পর্যন্ত ইন্ডিয়া, চায়নাতে কেক গিয়েছে তার প্রতিষ্ঠান থেকে। এটি যেহেতু ঢাকা বেজড পেইজ তাই ঢাকা মেট্রোপলিটনেই বেশীরভাগ ক্রেতা উদ্যোক্তার।কিন্তু গাজীপুর, ময়মনসিংহ, নারায়ণগঞ্জ থেকেও ক্রেতারা কেক নিয়ে গেছেন। কোন নির্দিষ্ট সংখ্যা নেই। কোন মাসে ২০-২৫ টা অর্ডারও থাকে আবার কোন মাসে কম বা বেশীও থাকে। অর্ডারের উপর আয়ের অংকটা নির্ভর করে।
আসলে উদ্যোক্তা হওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে উদ্যোক্তা হননি উদ্যোক্তা। এই জায়গা টাকে ভালোবেসেই কাজ করতে করতে উদ্যোক্তা হয়েছেন। সুগার আর্ট ব্যাপারটা প্রথমে উদ্যোক্তার প্যাশন তারপর প্রফেশন। তাই এই পণ্য নিয়ে কাজ করা। ভবিষ্যতের পরিকল্পনায় তিনি জানান “আরো পরিসরটা বাড়ানো এবং প্রোডাক্ট রেন্জ বাড়ানো এবং বড় ফ্যাক্টরি বাড়িয়ে কাজ বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে আমার।”
উদ্যোক্তা তানজিয়া রশিদের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর এবং সেখানেই বড় হওয়া। বাবা সরকারী কর্মকর্তা হওয়ায় তিন বছর পর পর পোস্টিং হওয়ার সুবাদে এক এক সময় এক এক জেলায় বড় হয়েছেন। ফেনী কলেজে এইচ. এস. সি এবং পরে লালমাটিয়া মহিলা কলেজ থেকে অর্থনীতি বিষয়ে অনার্স মাষ্টার্স শেষ করেছেন।
তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “যে যেটা নিয়ে কাজ করতে চান সেই সেক্টরটা ভাল করে স্টাডি করে তারপর ব্যাবসায় নামবেন। ঝোঁকের বশে আজকে শুরু করলাম বা আরেকজন একটা ব্যাবসা করে অনেক ইনকাম করছে তাই আমিও ও-ই ব্যাবসাটা শুরু করলাম তাহলে কিছুদিন পর হোঁচট খাওয়া অনিবার্য। তাই যা নিয়েই ব্যাবসা শুরু করবেন ভাবছেন সেটা যেন আপনার প্যাশন হয়,অনেক স্টাডি করে জেনে, বুঝে কি কি সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে সবকিছু ভাল করে পড়াশুনা করে তারপর ব্যাবসা শুরু করা উচিৎ। হয়তো কিছুদিন দেরী হবে কিন্তু লং রানে আপনারই লাভ হবে, আপনি অনেকদিন টিকে থাকতে পারবেন।”
মাসুমা সুমি,
উদ্যোক্তা বার্তা