পেশায় আইনজীবি হয়েও জেবুন্নেসা চুমকির সঙ্গে ছোটবেলা থেকে রান্না নিত্যসঙ্গী হয়ে আছে। রান্না করা সাথে পড়াশোনা আর সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড সবই একসাথে সামলাতে হয়েছিল তাকে।
তখন থেকে রান্নাটা ভালোভাবে আয়ত্তে এনেছিলেন। এমন কোন রান্না নেই যা তিনি জানেন না। তার মা ও শ্বাশুড়ি তার রান্নার প্রশিক্ষক। ছোটবেলা থেকে তার শেখার আগ্রহটা ছিলো প্রবল। তাই কোন কিছু শিখতে খুব বেশি সময় লাগতো না।
গোপালগঞ্জের উরফি গ্রামে জন্ম উদ্যোক্তা চুমকির কিন্তু তার বেড়ে ওঠা খুলনা আর ঢাকার গাজীপুরে। বাবা মৃত নুরুজ্জামান ছিলেন সরকারি চাকরিজীবী মা শাহানা জামান গৃহিণী। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট । খুলনা পিটিআই স্কুলে তার লেখাপড়ার হাতেখড়ি। খুলনা পাইলট স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এসএসসি। টংগী সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি। এরপর গাজীপুরের ভাওয়াল কলেজ থেকে ডিগ্রি ও উওরা ল’ কলেজ থেকে এলএলবি সম্পন্ন করেন। বর্তমানে গাজীপুর জর্জ কোর্টে আইন পেশায় নিয়োজিত আছেন।
উদ্যোক্তা হয়েছেন ২০২০ সাল থেকে যখন দেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হয়েছিল। তখনই কাকতালীয় ভাবে ভাবনাটা মাথায় জায়গা করে নেয়। হঠাৎ করে একটা পিঠার ছবি আপলোড করেন উই গ্রুপে। এভাবে শুরু হয় তার নতুন পথের যাত্রা। মজার ব্যাপার হচ্ছে, কোন টাকা বা পুঁজি নিয়ে নামেননি উদ্যোক্তা চুমকি। ঘরের চালের গুড়া আর ঘরের শুটকি দিয়ে ম্যাড়া পিঠা বানিয়ে তার উদ্যোগ শুরু। মাত্র ১৫০ টাকার জিনিস নিয়ে পথ চলা শুরু হয়েছে তার।
কাজ করছেন দেশিয় বিভিন্ন খাবার, মিষ্টি, আচার, পিঠা, ফ্রোজেন আইটেম সাথে মাখন এবং বার্থডে কেক, লাচ্ছি সেমাই ইত্যাদি নিয়ে। নির্দিষ্ট কোনো কর্মী না থাকলেও একজন হেলপিং হ্যান্ড আছে। তাকে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন অনবরত। অনলাইনে উদ্যোক্তার পেইজের নাম ‘চুমকির রান্না’। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে তার লাচ্ছি সেমাই আর বালুসাই মিষ্টি যাচ্ছে আমেরিকা ও কানাডায়। দেশের মধ্যে কুমিল্লা, নোয়াখালী, চিটাগং, বান্দরবান, ঢাকা, গাজীপুর সহ সব জায়গায় তার তৈরি খাবার পৌঁছে যাচ্ছে। প্রতিমাসে তার আয় প্রায় ৫০ হাজার টাকা।
নিজের উদ্যোগ সম্পর্কে উদ্যোক্তা জানান, ‘আমার উদ্যোক্তা হওযার পিছনে কারণ, ঘরে বসে পরিবারকে সময় দিয়ে কাজ করতে পারি মানে ইননকাম করতে পারি। পরিবার আগে। আর আমার রান্নার হাত বরাবরই ভালো। সবার মন্তব্যে সাহস পেয়ে এই কাজকে বেছে নিয়েছি। ভবিষ্যতে আমার খাবার সব জায়গায় বিস্তার করুক আর একটা রেস্টুরেন্ট দেওযার ইচ্ছে চুমকির রান্না মানে আমার নামে। আর দেশীয় খাবার সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে চাই। শুধু দেশে না, দেশের বাহিরেও’।
সাইদ হাফিজ,
উদ্যোক্তা বার্তা