বাবা প্রশান্ত নন্দী কর্মরত ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার অফিসে। মা লিপি নন্দি ছিলেন গৃহিণী। এ দম্পতির একমাত্র কন্যা পারমিতা নন্দি। রাজশাহী শহরের সাগরপাড়ায় বসবাস পারমিতা নন্দির।
মাধ্যমিক শেষ করলেন বিবি হিন্দু একাডেমি থেকে, উচ্চ মাধ্যমিক করেছেন রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজ থেকে এরপর রাজশাহী কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে স্নাতকোত্তর শেষ করে চাকরি জীবনে প্রবেশ করলেন। কলেজে কাজ করলেন তিন বছর।কিন্তু মন চাচ্ছিলো না অন্যের অধীনে কাজ করতে। তবুও পরবর্তীতে রাজশাহীর সনামধন্য প্রতিষ্ঠান ইস্ট ওয়েস্ট স্কুলে বেশ কিছু দিন চাকরি করলেন। কিন্তু আর না, মনের বিরুদ্ধে গিয়ে চাকরি করতে তিনি আর রাজি নন। বের হয়ে আসলেন চাকরি জীবন থেকে।
চাকরি ছাড়ার পর মাথায় প্রথম চিন্তা এখন আমি কি করবো? কিছু দিন ভাবনা-চিন্তা করার পর মনে এলো ছোটবেলার ভালোলাগার বিষয় রংতুলি। রংতুলিকে সঙ্গী করে পা বাড়ালেন উদ্যোক্তা জীবনে।
শুরুতেই নিজ বাসায় নিজের হাতে মেয়েদের ওয়ানপিস, টুপিসে হ্যান্ডপেইন্ট করতেন। শুরু থেকেই খুব দক্ষতার সঙ্গে সব কিছু সামলাতেন।তার পণ্যের গুনগত মানের জন্য অল্প সময়ে চারদিকে ছড়িয়ে পড়লো ‘শ্রী হ্যান্ডিক্রাফটস’র সুনাম। প্রথম দিকে অর্ডার কম আসলেও ভেঙে পড়েননি পারমিতা নন্দি, ধৈর্য নিয়ে এগিয়ে গেছেন। যার ফলস্বরূপ মাসে এখন অনেক অর্ডার পান তিনি। প্রতিনিয়ত তার রিপিট ক্রেতার সংখ্যা বেড়ে চলছে।
বর্তমানে তার কারখানা আছে একটি, যেখানে তিনজন কর্মী রয়েছে। দেশের প্রতিটি জেলায় পারমিতা নন্দির ‘শ্রী হ্যান্ডিক্রাফটস’র পণ্য পৌঁছাচ্ছে। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে থাইল্যান্ড, হংকং এবং অস্ট্রেলিয়াতেও তার পণ্যে পৌঁছে গেছে। শ্রী হ্যান্ডিক্রাফটস নামে তার একটি অনলাইন পেজ রয়েছে। যা অল্প সময়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।
প্রথম দিকে হ্যান্ডপেইন্ট নিয়ে কাজ করতেন। বর্তমানে টাইডাই, ব্লক-বাটিক এবং হাতে তৈরি গহনা নিয়ে কাজ করছেন। ১ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে শুরু করা উদ্যোগ আজ কয়েক লাখ টাকার পুঁজিতে পৌঁছে গেছে।
তরুণদের উদ্দেশ্যে এই উদ্যোক্তা পরামর্শ দিলেন, ‘জীবনে চলার পথে অনেক বাধা আসবে, তার মধ্যে সুযোগেরও দেখা মিলবে। সঠিক সুযোগ কাজে লাগিয়ে সামনে আগালে সফলতা মিলবেই’।
তামান্না ইমাম
রাজশাহী ডেস্ক, উদ্যোক্তা বার্তা