পানের বরজে ২৮ বছর ধরে ইয়াদ আলী মন্ডল

0

২৮ বছরে ২৮ শতক জমিতে গড়েছেন, তিনটি পান বরজ। সবমিলিয়ে ১১ পুন বরজ রয়েছে ইয়াদ আলী মন্ডলের।

বড়, মাঝারি এবং ছোট (সাপ্টা) সব ধরনের পান রয়েছে তার বরজে। সম্প্রতি উদ্যোক্তা বার্তার প্রতিনিধি রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার যুগিশো গ্রামের, মো. ইয়াদ আলী মন্ডলের পান বরজে সরেজমিনে যান।

পান চাষ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পান চাষের জন্য দরকার উঁচু, বন্যামুক্ত, বেলে দোআঁশ বা এটেল দোআঁশযুক্ত জমি। আর আমাদের দুর্গাপুর থানাসহ পাশের বাগমারা এবং মোহনপুর থানার মাটি এবং আবহাওয়া পান চাষের জন্য উপযুক্ত। বর্তমান সময়ে অনেকেই পান চাষের দিকে ঝোঁক নিচ্ছে। আমি নিজেও ২৮ বছর ধরে দেশি পান চাষ করছি।’

নিয়মিত ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠেই বরজে চলে আসেন ইয়াদ আলী মন্ডল। সহধর্মিণী আছিয়া বেগম তার কাজে সাহায্য করেন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে। বরজ নিড়ানো, পড় তোলা, আগাছা দমন (বরজ মুক্ত), সেচকার্য, বরজ বাধা, মাটি কোপানো, চাল বাধা, বেড়া এবং ছাউনি দেওয়া, নিয়মিত বালাইনাশক স্প্রে, পান ভাঙা, গোছা ইত্যাদি কাজ গুলোতে উদ্যোক্তা ইয়াদ আলী মন্ডলের অস্থায়ী অসংখ্য সহযোদ্ধা থাকলেও নিয়মিত তাকে ২ জন সহযোগিতা করে থাকেন। প্রথমে তার ১ টি বরজ থাকলেও বর্তমানে তিনটি বরজ রয়েছে।

পানচাষী ইয়াদ আলী মন্ডল আরো বলেন, ‘রাজশাহী অঞ্চলে ৬৪ টা পানে ১ বিড়া ধরা হয়। যদিও দেশের অনেক অঞ্চলে এই হিসাবে ভিন্নতা রয়েছে। এখানে ১ বিড়াতে ৬৪ টি পান থাকে এবং ৩২ বিড়াতে ১ পোয়া হয়। বড় সাইজের পানে একটি সুন্দর গাদি সাজাতে প্রায় ৬০/৭০ বিড়া পান প্রয়োজন। বড় সাইজের ১ পোয়া পানের বর্তমান বাজার দর ২ হাজার থেকে ২২০০ টাকা। আমি এবং আমার সহধর্মিণী বেশিরভাগ সময়ই বরজের যত্নে ব্যয় করি এবং আমার দুই কন্যাও আমাদের মাঝে মাঝে সহোযোগিতা করে থাকে।’

এই এলাকার বেশির ভাগ মানুষ পান চাষের সাথে যুক্ত এটির কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দুর্গাপুর সহ আশেপাশের থানা গুলোতে ‘দুর্গাপুর হাট, কালীগঞ্জ হাট, মোহনগঞ্জ, একদিলতলা, পাকুড়িয়া, মচমইল এই উল্লেখযোগ্য পানের হাট এবং পানের আড়ৎ থাকায় পান বিক্রয় অনেক টা সহজসাধ্য এই এলাকার মানুষের কাছে।’

‘মাটি, আবহাওয়া, পরিবহন ব্যবস্থা এবং পর্যাপ্ত পানের হাট এবং আড়ৎ থাকায়, সবমিলিয়ে এই এলাকার বেশির ভাগ মানুষ পান চাষের সাথে যুক্ত।’

ঝড়, বৃষ্টি সহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে মাঝে মাঝে সমস্যা সৃষ্টি হয় পানচাষিদের। এছাড়াও পান পচা রোগ দূর করতে স্থানীয় কৃষি অফিস যদি স্থায়ী ব্যবস্থা দিতে পারেন তাহলে এই অঞ্চলের পানচাষীরা আরো লাভবান হবে বলে আশাব্যক্ত করেন এই উদ্যোক্তা।

ইয়াদ আলী মন্ডলের জন্ম থেকে বেড়ে উঠা সবকিছুই রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার যুগিশো গ্রামে। পান চাষের পূর্বে তিনি ধান, পেঁয়াজ, মরিচ সহ নানা কৃষি আবাদ করতেন।

এলাকার অনেক তরুণ পড়াশোনা শেষ করে চাকরি না পেয়ে হতাশাই ভুগছেন তাদের উদ্দেশ্য এই উদ্যোক্তা বলেন, ‘আমাদের এলাকা পান চাষের জন্য উপযোগী। যারা চাকরি না পেয়ে হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছো তারা পান চাষ শুরু করতে পারেন। নিয়মিত পরিচর্যা করলে পান চাষে লাভবান হওয়া সহজ।

তামান্না ইমাম
উদ্যোক্তা বার্তা, রাজশাহী

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here