গবেষণায়ও দেখা যায়, পলিথিনের ব্যবহারের কারণে বিপন্ন হচ্ছে জীববৈচিত্র্য, মানবদেহে মিলছে ক্ষতিকর মাইক্রোপ্লাস্টিক। এমন পরিস্থিতিতে ১ অক্টোবর থেকে দেশের সুপারশপগুলোতে পলিথিন ব্যাগের ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। আর ১ নভেম্বর থেকে কাঁচাবাজারগুলোতেও নিষিদ্ধ হবে পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার। সেদিন থেকে পলিথিন উৎপাদনকারী কারখানাগুলোতেও চলবে অভিযান।
সরকারি এমন ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে রাজধানীর বিভিন্ন সুপারশপে পলিথিন ব্যাগের পরিবর্তে ক্রেতাদের দেওয়া হচ্ছে পাট, কাগজ ও কাপড়ের তৈরি ব্যাগ। ক্রেতারাও খুশি মনে সেসব ব্যাগ টাকা দিয়ে কিনে ব্যবহার করছেন।
প্রিন্স বাজারের কর্তব্যরতদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কাগজ কিংবা কাপড়ের ব্যাগ তারা বিনামূল্যেই দিচ্ছেন ক্রেতাদের পণ্য পরিবহনের জন্য। তবে পাটের ব্যাগ আকার আনু্যায়ি দাম নির্ধারণ করে দিয়েছেন।
এ বিষয়ে প্রিন্স বাজারের এ্যাসিস্টেন্ট ম্যানেজার মুজাহিদুল হক বলেন, আমরা আগে ক্রেতাদের পণ্য দেওয়ার জন্য ওভেন ব্যাগ ব্যবহার করতাম। যেটা পুরো ডিসপোসিবল ছিল না। আমরা ক্রেতাদের পণ্য বহন করার জন্য পাট ও কাগজের ব্যাগ দিচ্ছি। মাছ-মাংসের মতো ভেজা পণ্য এসব ব্যাগে দেওয়ার আগে এক ধরনের মোম দিয়ে পলিস করা কাগজে মুড়িয়ে দিচ্ছি। যাতে পানি না পড়ে। তবে সেই কাগজের ব্যাগও ডিসপসিবল। তবে এখনো অনেক ক্রেতারা বিষয়টি জানেন না, আমরা চেষ্টা করছি তাদের বিষয়টি অবগত করার জন্য ।
মীনা বাজার থেকে কেনাকাটা করে পাটের ব্যাগে তার পণ্য নিচ্ছেন জহির। তিনি উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার বন্ধ করার জন্য সরকার ও বিক্রেতাদের পাশাপাশি ক্রেতাদেরও দায়িত্বশীল হতে হবে। কারণ পলিথিনের কারণে যেমন পরিবেশের দূষণ হচ্ছে, তেমনি আমাদের স্বাস্থ্যেরও ক্ষতি হচ্ছে। সরকার সুপারশপে পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার নিষিদ্ধ করায় ভালোই হয়েছে। এ চর্চাটা আমাদের চালিয়ে যেতে হবে। যদি সুপারশপ থেকে ব্যাগ কিনতে অসুবিধা হয়, তাহলে বাসা থেকে ক্রেতারা ব্যাগ নিয়ে আসতে পারেন।
এদিকে মঙ্গলবার বিকেলে সুপারশপে নিষিদ্ধ পলিথিন শপিং ব্যাগের ব্যবহার বর্জন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি রাজধানীর জিগাতলার আগোরা ও ধানমন্ডি-২৭ এর মীনা বাজার পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শন শেষ তিনি বলেন, সব ধরনের প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে আমাদের এ যুদ্ধ না। আমাদের এ কাজটা হচ্ছে শুধু মাত্র পলিথিন শপিং ব্যাগের বিষয়ে। ময়লার বিনের যে পলিথিন কিনে নেন, সেটার ওপর আমাদের কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। কারণ সেটার কোনো বিকল্পে আমরা এখনো যেতে পারিনি। প্লাস্টিকের বয়ম যেটা কিনেন, সেটার ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। শুধু পণ্য কিনে নিয়ে যাবার সময় প্লাস্টিকের ব্যাগে নেবেন না এবং বাসা থেকেও কোনো পলিথিনের ব্যাগ আনবেন না। যত দ্রুত সম্ভব পলিথিনের ব্যাগ দেশ থেকে আমরা সরিয়ে দিতে চাই।
সেতু ইসরাত,
উদ্যোক্তা বার্তা