পলিথিনের বিকল্প হতে পারে শাড়ির তৈরি ব্যাগ

0

গত ১ অক্টোবর থেকে সুপারশপগুলো সরকারিভাবে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ করা হয়। আজ থেকে কাঁচাবাজারেও নিষিদ্ধ হয়েছে পলিথিন ব্যাগ। প্লাস্টিক দূষণ মোকাবিলায় সামাজিক সচেতনতা তৈরিতে মে মাস থেকেই বাজারে পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার বন্ধের আহ্বান জানিয়ে ক্যাম্পেইন শুরু করেছে পরিবেশবান্ধব উদ্ভাবন ও সচেতনতামূলক নানা উদ্যোগ নিয়ে কাজ করে থাকা প্রতিষ্ঠান শালবৃক্ষ।

শালবৃক্ষের এই উদ্যোগটি তাদের ম্যাপ (MAP – March Against Plastic) প্রজেক্টের অংশ হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে। এই ক্যাম্পেইনে ক্রেতা সাধারণের সঙ্গে প্লাস্টিক-দূষণ নিয়ে কথা বলেন ম্যাপের কর্মীরা। বারবার ব্যবহার উপযোগী ব্যাগ বিনামূল্যে বিতরণের মাধ্যমে তাদেরকে টেকসই বিকল্প ব্যাগ ব্যবহারের অভ্যাস তৈরির আহ্বান জানান তারা।

আজ কাঁচাবাজারে পলিথিনের ওপর নিষিদ্ধাদেশ কার্যকরের দিনটিকে কেন্দ্র করে মোহাম্মদপুর টাউনহল বাজারে পলিথিনব্যাগ বিরোধী এই ক্যাম্পেইনটি পরিচালিত হয়। এতে শালবৃক্ষের অঙ্গ সংগঠন ম্যাপসহ আরো দুটি সংগঠন ‘ইচ্ছে ফাউন্ডেশন’ ও ‘ইয়ুথ ফর চেঞ্জ বাংলাদেশ’ অংশগ্রহণ করে। যারা স্বতন্ত্রভাবে পরিবেশবান্ধব বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে।

এই প্রচারণায় অংশগ্রহণকারী ক্রেতা সাধারণের ভেতর মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। অনেকেই পর্যাপ্ত ও যথার্থ বিকল্প ব্যবস্থা না থাকার কথা উল্লেখ করেন। কেউ কেউ উৎপাদন ও বিতরণ বন্ধের দিকে মনোযোগ দেয়া উচিত বলে মনে করেন।

একজন সচেতন ক্রেতা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘শক্তি দিয়ে তো সবকিছু হয় না, মানুষকে বোঝাতে হবে, এভাবেই মানুষের কাছে যেতে হবে। কিছু সচেতন বিক্রেতাও চোখে পড়ে।’

যেমন আবুল কালাম নামের একজন বিক্রেতা দোকানে কোনো পলিথিন রাখেননি। তিনি এই নিষেধাজ্ঞাকে পূর্ণ সমর্থন করেন। তিনি জানান, ক্রেতারাও তাকে সহযোগিতা করছেন।

তবে বিপরীত অভিজ্ঞতার কথাও জানা যায়। অনেক ক্রেতাকেই বাজারের ব্যাগ হাতে আসতে দেখা যায়। যেটি খুব আশাব্যঞ্জক। কিন্তু বিপত্তির জায়গাটি হলো বাজারের ব্যাগের ভেতর কেনা প্রত্যেকটি দ্রব্য আলাদা আলাদা পলিথিনে ভরেই দেওয়া হচ্ছে। বিক্রেতাদের মাঝে অনেকেই অভিযোগ করেন যে, ক্রেতারাই বিভিন্ন পণ্য আলাদা করে দিতে বলেন। আবার কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায়, জোর গলায় আপত্তি না করলে বিক্রেতারা পুরোনো অভ্যাসের বশে প্রত্যেকটি দ্রব্যকে আলাদা পলিথিনে ভরে দিচ্ছেন।

প্লাস্টিক দূষণ নিয়ে সামাজিক সচেতনতা তৈরিই এই সম্মিলিত উদ্যোগের মূল লক্ষ্য। প্রত্যেককে বাজারে যাবার সময় প্রয়োজনীয় ব্যাগ বহন করার আহ্বান জানান ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণকারী পরিবেশকর্মীরা।

উল্লেখ্য যে, এই কর্মসূচিতে যে ব্যাগ বিতরণ করা হচ্ছে তা শাড়ি আপসাইকেল করে তৈরি। শাড়ি দিয়ে ব্যাগ বানানোর উদ্দেশ্য হচ্ছে, প্রতিনিয়ত নতুন পণ্য না কিনে ব্যবহৃত জিনিস আপসাইকেল করা বা তাকে পুনরায় ব্যবহার উপযোগী জিনিসে রূপান্তর ঘটানোর মানসিকতার বিস্তার করা। আর এর মাধ্যমে পুনঃব্যবহারের সামাজিক অভ্যাস তৈরি করা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here