চাঁদপুরে পতিত জমিতে চাষ হচ্ছে সবুজ মোলায়েম লন কার্পেট ঘাস। দেখলে মনে হবে সত্যিকারের কোনো ঘাষ কার্পেট। পরিবেশবান্ধব এই ঘাস বাণিজ্যিকভাবে চাষ করছেন প্রবাস ফেরত যুবক গোলাম রাব্বি। বাড়ি বা অফিসের আঙিনায়, বাগানে, কবরস্থানে, পাহাড়ের সৌন্দর্য বর্ধনে ও পরিবেশ রক্ষায় কাজ করছে এই কার্পেট ঘাস। বর্তমানে চাঁদপুর থেকে অনলাইনের মাধ্যমে সারাদেশে তা বাজারজাত করা হচ্ছে।
দীর্ঘ সাত বছর বাহরাইনে কার্পেট ঘাসের কাজে কর্মরত ছিলেন গোলাম রাব্বি। সেখানে সৌন্দর্য বর্ধনে এই সবুজ কার্পেট ঘাস খুব ব্যবহার হয়। দুই বছর আগে দেশে ফিরে আসেন তিনি। তারপর চাঁদপুর সদর উপজেলার বহরিয়া দোকানঘর এলাকায় প্রায় ৪০ শতাংশ পতিত জমি ভাড়া নিয়ে ঢাকা থেকে বীজ সংগ্রহ করে পরীক্ষামূলকভাবে পরিবেশবান্ধব কার্পেট ঘাসের চাষ শুরু করেন।
চাঁদপুরের প্রত্যন্ত এলাকার কৃষি জমিতে এখন শোভা পাচ্ছে সবুজ মোলায়েম লন কার্পেট ঘাস। লাভজনক হওয়ায় ওই এলাকায় চারটি স্থানে প্রায় পাঁচ একর জমিতে চাষ করা হচ্ছে। রাব্বির কার্পেট জাতীয় ঘাস চট্টগ্রাম, সিলেট, গাজীপুর, নরসিংদী, বান্দরবন, খাগড়াছড়ি, নারায়ণগঞ্জ, ব্রাক্ষণবাড়িয়া, মুন্সিগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে।
রাব্বি বলেন, “দুই বছর আগে ৪০ শতাংশ জমি নিয়ে প্রথমে শুরু করি। এখন বর্তমানে ৫ একরের বেশি জমি আছে এবং আমার এখানে অর্ধশতাধিক কর্মী আছেন। সব খরচ বাদ দিয়েও মাসে দুই থেকে তিন লাখ টাকা আয় থাকে আমার। আমার পরিকল্পনা আছে আগামী এক বছরের মধ্যে ২০ থেকে ২৫ একর জমিতে লন কার্পেট ঘাস উৎপাদন করবো। তখন আমি ২০০ জনের কাজের ব্যবস্থা করতে পারবো। এতে অনেকের বেকারত্ব দূর হবে। এক্ষেত্রে সরকারি সহযোগিতা প্রয়োজন, সরকারি যেসব খাস জমি থাকে সেগুলো যদি আমরা লিজ নিতে পারি তাহলে আমাদের অনেক উপকার হবে।”
তিনি জানান, কার্পেটগুলো বেশিরভাগই সরকারি প্রজেক্টে যায়। সেনাবাহিনী, পুলিশ, নৌবাহিনী, বিজিবি, ডিসি অফিস, ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় যায় বেশি। খাগড়াছড়ির পুরো পাহাড় সবুজ হয়েছে শুধু এই লন কার্পেট ঘাস দিয়ে।
বর্তমানে ৯০ হাজার বর্গফুট জমিতে কার্পেট চাষ করছেন রাব্বি। এক লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়ে যাত্রা শুরু করেন তিনি। প্রকল্পে খরচ হয়েছে প্রায় ২০ লাখ টাকা। কার্পেট জাতীয় ঘাস স্কয়ার ফিট হিসেবে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রত্যন্ত এলাকায় কার্পেট জাতীয় ঘাস চাষ স্থানীয় বেকার যুবকদের মাঝে বেশ কৌতুহল তৈরি করেছে। এই ধরনের ঘাস চাষে বেকারত্ব দূর করার কথা জানিয়েছেন স্থানীয় যুবকরা।
মেক্সিকান, বারমুডা গ্রাস লন কার্পেট হিসেবে বেশি পরিচিত। লাভজনক ব্যবসা হওয়ায় এই ঘাস এখন অনলাইনে বসেই সারাদেশে বিক্রি করছেন রাব্বি। কার্পেট ঘাস চাষের দেশীয় প্রশিক্ষণসহ সরকারি সহায়তা পেলে আরও বড় পরিসরে তা সাজাতে চান এই উদ্যোক্তা।
সেতু ইসরাত
উদ্যোক্তা বার্তা