জাকারুল্লাহ অনিক সংক্ষেপে জে ইউ অনিক। ফটোগ্রাফিকে ভালোবেসে শখের গিটারটি বিক্রি করে কিনেছিলেন ক্যামেরার লেঞ্চ। সেই যে শুরু বর্তমানে ফটোফোকাস ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট, নবাব কিচেন, নবাব বাংলা রেস্তোরাঁর মতো রাজশাহী নগরীর এই জনপ্রিয় প্রতিষ্ঠান গুলো দক্ষতার সাথে পরিচালনা করছেন এই উদ্যোক্তা। শুধু কি তাই! রাজশাহী জর্জ কোর্টে শিক্ষানবিশ আইনজীবী হিসেবেও রয়েছেন জে ইউ অনিক।
জে ইউ অনিকের ফটোফোকাস ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট টি চালু হয় ২০১৬ তে। এখন পর্যন্ত এক হাজারটির ও বেশি ইভেন্ট কাভার করেছেন উদ্যোক্তা অনিক সহ বিশজন সহযোদ্ধার এই দল। যে বিশজন ফটোফোকাস ইভেন্টে আছেন তারাই রয়েছেন নবাব কিচেন এবং নবাব বাংলা রেস্তোরাঁয়। সেখানে শেফ থেকে শুরু করে সকলেই শিক্ষার্থী। পড়াশোনার পাশাপাশি এখানে কাজ করে নিজেরা তো স্বাবলম্বী হয়েছেন পাশাপাশি পরিবারের পাশেও দাঁড়িয়েছেন তারা।
২০১৭ সালে বার লক্ষ্য মূলধন নিয়ে রাজশাহী নগরীর সোনাদীঘির মোড়ে নবাব কিচেন চালু করেছিলেন এই উদ্যোক্তা। অল্প সময়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করায় তিনবছরের ব্যবধানে ২০২০ সালে নগরীর মালোপাড়া এলাকায় গড়েন নবাব বাংলা রেস্তোরাঁ। মেনু সম্পর্কে জানতে চাইলে জে ইউ অনিক উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন “বাঙালির প্রিয় বিরিয়ানি, বিফ তেহেরি, খুলনার বিখ্যাত চুইঝাল, স্পেশাল চিকেন চাপ মিক্স মাসালা, গ্রিল, বিভিন্ন রকম নান এছাড়াও বাংলা রেস্তোরাঁয় শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে বাজেট ফ্রেন্ডলি টাকায় ভাত, মাছ, ডাল, সবজি, বিভিন্ন ধরনের মাংস সহ নানারকম খাবার রয়েছে নবাব কিচেন এবং নবাব বাংলা রেস্তোরাঁয়। সিলেট সহ দেশের বিভিন্ন স্থান হতে শেফ আনা হয়েছে এবং মজার বিষয় তাদের সাথে থাকতে-থাকতে আমিও এখন রান্নাগুলো আয়ত্ব করে ফেলেছি। গত করোনা মহামারীতে সব কিছু যখন অনলাইন নির্ভর হয়ে পড়েছিলো সেই দিনগুলোতে আমরা প্রতিদিন দেড়শত কখনোবা দেড়শত রো বেশি খাবার পার্সেল করেছি।”
ফটোফোকাস ইভেন্ট সম্পর্কে জে ইউ অনিক বলেন _ ফটোগ্রাফি করতে করতে একটা সময় দেখলাম যে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট বিষয়টি আস্তে- আস্তে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে তাই আমিও শুরু করলাম। গায়ে হলুদ, বিয়ে, বৌভাত, জন্মদিন, পূজামন্ড সহ সকল অনুষ্ঠানেই আমরা স্টেজ সহ পুরো স্থানটি ডেকোরেশন করে থাকি। যুগের সাথে তালমিলিয়ে এই বিষয়গুলো আপডেট হচ্ছে আমরাও প্রতিনিয়ত নতুনত্ব আনার চেষ্টা করছি। সামাজিক পাতাই আমাদের ফটোফোকাস ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট, নবাব কিচেন এবং নবাব বাংলা রেস্তোরাঁ এই তিনটি প্রতিষ্ঠানের নামেই পেজ চালু করেছি সেখান থেকেও বেশ ভালো শাড়া পাচ্ছি।
পরিবারের সাপোর্ট কতটা ছিলো এই বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন _ নবাব কিচেন শুরুর আগে বাবাকে একবার বলাতেই তিনি রাজি হয়ে যান এবং বাবা-মা দুজনেই আমাকে সাহস যুগিয়ে চলেন অবিরাম। আমার ছোট ভাই পড়াশোনার পাশাপাশি নবাব কিচেন দেখভাল করে থাকেন। আমি যেহেতু ইভেন্টের কাজে বেশিরভাগ সময় ব্যাস্ত থাকি তাই দায়িত্বসহকারে এইদিকে সামলে নেই আমার ছোট ভাই আরাফাত উল্লাহ অর্ণব। তাই আমাকে বলতেই হবে আমার পুরো পরিবার ভিষণ সাপোর্টিভ।
কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ ২০১৬ সালে ক্যামেরা ক্লিক অ্যান্ড ক্যানভাস কর্তৃক আয়োজিত প্রতিযোগিতায় ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফি বিভাগে উইনার হয়েছিলেন উদ্যোক্তা জাকারুল্লাহ অনিক। আরো অসংখ্য লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চায় এই লক্ষ্য নিয়ে সামনে এগিয়ে চলেছে স্বপ্নবাজ এই তরুণ।
তামান্না ইমাম,
উদ্যোক্তা বার্তা