স্যামো লেদারের ব্যবসায় বড় প্রভাব ফেলেছিল কোভিড মহামারী। সেসময় অনলাইন কেনাকাটা জনপ্রিয় হওয়ার সাথে সাথে স্যামো লেদারের অনলাইন ব্যবসায়ও বেড়েছে দ্রুত গতিতে। একটি ফেইসবুক পেইজ থেকে শুরু হলেও বর্তমানে তাদের রয়েছে নিজস্ব ওয়েবসাইট এবং অনলাইন সেলের পাশাপাশি ঢাকার মোহাম্মদপুরে সুসজ্জিত আউটলেট।
গল্পটির পেছনের কারিগর এক তরুণ এবং প্রাণবন্ত উদ্যোক্তা মোমিন দেওয়ান। সম্প্রতি ব্র্যান্ড হয়ে ওঠা স্যামো লেদার-এর প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক তিনি।
মোমিন দেওয়ান বলেন, “চামড়ার তৈরি পণ্য নিয়ে কাজ করার সবসময় ইচ্ছা ছিল। কারণ চামড়াজাত পণ্যের প্রস্তুতকারক, বিক্রেতা এবং রপ্তানিকারক হিসেবে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা অনেক। অনেকের জন্যই চামড়াজাত পণ্য একটি কার্যকর ব্যবসা হতে পারে।”
ছাব্বিশ বছর বয়েসী মোমিনের শৈশব কাটে চাঁদপুরে। শৈশব থেকেই উদ্যোক্তা হতে চাওয়া মোমিন একটি ছোট শহরে থেকে বড় হলেও তার মধ্যে স্বপ্ন ছিল বড়।
বড় ভাইয়ের সাথে ঢাকায় থেকে কলেজের পড়াশোনার সময়ও আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে চেয়েছিলেন তিনি। তাই চামড়াজাত পণ্য নিয়ে কাজ শুরু করেছিলেন। এরইমধ্যে তেজগাঁও কলেজের সমাজকর্ম বিভাগ থেকে স্নাতক ডিগ্রি করেন।
প্রথম দিকে তার কাজ ছিল বিভিন্ন কারখানা থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ করা। এরপর মাত্র ২৫ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে ২০১৫ সালে একজন কারিগর (শ্রমিক)-সহ চামড়াজাত পণ্য যেমন- বেল্ট, মানিব্যাগ, ব্যাগ এবং জ্যাকেট উৎপাদন শুরু করেন। এরপর শুরু হয় স্যামো লেদার-এর অসাধারণ যাত্রা।
তিনি বলেন, দেশের সাধারণ ক্রেতার কাছে পৌঁছে গেছে স্যামো লেদার। আমরা কর্পোরেট কোম্পানি, স্থানীয় সরবরাহকারী, ডিলার এবং রিসেলারদের কাছ থেকে অর্ডার নিই। স্যামো লেদারের চামড়াজাত পণ্য এখন দেশের বাইরে যেমন- তাইওয়ান, জাপান, চীন এবং ইতালি-স্পেনসহ ইউরোপে রপ্তানি হচ্ছে।
মোমিন দেওয়ান জানান: স্যামো লেদার বর্তমানে চামড়াজাত পণ্যের প্রতিটি ক্যাটাগরিতে কাজ করছে। মহিলাদের জন্য আমাদের পণ্য রয়েছে যেমন- ব্যাকপ্যাক, হ্যান্ডব্যাগ, ল্যাপটপ ব্যাগ, পার্স এবং স্যান্ডেল। পুরুষদের জন্য রয়েছে ল্যাপটপ ব্যাগ, মেসেঞ্জার ব্যাগ, চেস্ট গার্ড, গ্লাভস, মোজা, কোমরের ব্যাগ, জ্যাকেট, জুতা, স্যান্ডেল, বেল্ট, মানিব্যাগ, চাবির রিং এবং কার্ড হোল্ডার। এগুলো থেকেই ক্লায়েন্টের পছন্দমতো সাজানো হয় কর্পোরেট গিফট বক্স। এছাড়াও আমরা বিভিন্ন ধরনের ট্রাভেল ব্যাগ, ফাইল কভার, অন্যান্য অনেক ধরনের চামড়ার সামগ্রী তৈরি ও বিক্রি করে থাকি।
স্যামো লেদারে অস্থায়ী ও স্থায়ী উভয় ধরনের শ্রমিক দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন। বর্তমানে স্যামো লেদারে শ্রমিকের সংখ্যা ৪০ জন।
ভবিষ্যতে স্যামো লেদার নিয়ে কী পরিকল্পনা জানতে চাইলে মোমিন বলেন, ”আপনি যদি গ্রাহকদের আস্থা অর্জন করতে চান তবে এর কোন শর্টকাট নেই। স্যামো লেদার শতভাগ মানসম্পন্ন চামড়ার পণ্য সরবরাহ করে গ্রাহকদের বিশ্বাস অর্জন করতে চায় এবং আমরা সেই লক্ষ্য অর্জনে কাজ করে যাচ্ছি। “
কোম্পানির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে মোমিন বলেন, আগামী তিন বছরের মধ্যে স্যামো লেদার ১৫০-২০০ জন কর্মী নিয়োগের পরিকল্পনা করছে। তিনি চান তার ফ্যাক্টরিটি সম্পূর্ণভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ হউক।
মেহনাজ খান,
উদ্যোক্তা বার্তা