দেশী পণ্যের সমাহার নিয়ে অনলাইন নেটওয়ার্কে গড়ে ওঠা সংগঠন মেয়ে নেটওয়ার্ক আয়োজন করেছে শীত রাঙতা মেলা।আয়োজকরা মেলাটি সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন।
শুক্রবার রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে দুই দিনব্যাপী এ মেলা শুরু হয়।
নারীর ক্ষমতায়নে অর্থনৈতিক সাবলম্বীর ওপর গুরুত্ব দিয়ে মূলদ অনলাইনে নিজেদের তৈরি বাহারি রকমের দেশীয় পণ্য নিয়ে সাজানো হয়েছে মেলার স্টলগুলো। নানান স্বাদের খাবার রয়েছে মেলায়।
এবারের শীত মেলায় মোট ৪৮ জন তরুণ উদ্যোক্তা অংশগ্রহণ করেছেন। মেয়ে নেটওয়ার্কের আয়োজনে অংশগ্রহণ করেছেন রঙদারু, তুগুন, আকাশ প্রতিমা, আচারিয়ানা, অংশু, অনিন্দিতা, আর্টোপোলিস, আরুণিকা, ব্যাড হ্যাবিট, গুটিপোকা, বি-কর্মী মৌমাছি, বেগুনি প্রজাপতি, বিজেন্স, বোকা বাক্স, বক্স অব অর্নামেন্টস, কেয়ারশপ বিডি, চর্চা, চিহ্ন, চিত্রলেখা, ক্লজেট ডি তাতিয়ানা, অন ক্লাউড নাইন অ্যান্ড হাফ, রংধনু ক্রিয়েশনস, ঈহা, সানশাইন ডে কেয়ার সেন্টার, ফুল্লোরা, হানি বি, খুঁত, কিংকর্তব্যবিমূঢ়, কইন্যা, দ্য মালাকাইট কাস্কেট, লৌকিক, মেঘদূত, মেঘস্বর, নিত্যদিন, অলকানন্দা, পটের বিবি, প্রিয়তমেষু, রাঙা, রানজুনি, রেনে বাংলাদেশ, সারানা, শবনম, শিশুদের জন্য আমরা, সুগার ক্যাসেল, টেন্টেরালি, ওয়্যারহাউজ, কারখানা এবং পিঠা-পার্বণ অনলাইন ভিত্তিক উদ্যোক্তারা।
তাদের তৈরি জামদানি, সিল্ক কাতান শাড়ি, সিল্ক সেলোয়ার কামিজ, পেইন্টিং, হাতে বানানো গয়না, খাদ্যপণ্য, বুটিকস, হ্যান্ডি ক্র্যাফট, চামড়াজাত পণ্য, হোম ডেকর, পাট ও পাটজাত পণ্য, জুয়েলারি, তৈরি খাদ্য,কসমেটিকস, ইলেকট্রনিকস ও গৃহস্থালী পণ্যসহ নানা ধরনের পণ্য প্রদর্শিত ও বিক্রয় করছে।
মেলায় বিকেল থেকেই ছিল দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল লক্ষ্য করার মতো। মেলায় অংশগ্রহণ করা উদ্যোক্তারা বলেন, বৃষ্টির কারণে সকাল বেলা কিছুটা মন্দা গেলেও বিকেল থেকে দর্শনার্থী, ক্রেতাদের পদচারণায় মুখর মেলা মিলনায়তন।
মেলায় অংশ নেওয়া আরুণিকা’র সত্ত্বাধিকারী অরুণিতা ঘোষণা উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন, আমাদের সব পণ্য পরিবেশ বান্ধব। কোনো প্রকার প্লাস্টিক আমাদের নেই, এমনকি প্যাকিং বস্তুটিও আমাদের প্লাস্টিক না।
তিনি বলেন, এবারের মেলায় আমরা কাঠের ব্রাশ এনেছি। ব্রাশ জাতীয় সামগ্রীতে অনেক প্লাস্টিক ব্যবহার হয়।তাই আমরা কাঠের ব্রাশ ও চিরুনী এনেছি। এছাড়াও আমাদের হাতে তৈরি নানা রকম কাঠের পণ্য রয়েছে।
লালবাগ থেকে বন্ধুদের নিয়ে মেলায় আসা ফারহানা শারমীন উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন, দারুন একটি আয়োজন। এখানে আমরা সব দেশীয় পণ্য পাচ্ছি। কোনো প্রকার ভীনদেশী পণ্য নেই। বন্ধুদের নিয়ে ছুটির দিনে মেলায় এসেছি। বেশ কিছু পণ্য কিনব।
রাঙতা মেলার আয়োজক মেয়ে নেটওয়ার্কের প্রতিষ্ঠাতা তৃষিয়া নাশতারান উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন, রাঙতা মেলার বিশেষায়িত দিক হলো সব পণ্যগুলো দেশী। আমাদের পোস্টারে লেখা আছে পাকিস্তানী পণ্য মুক্ত মেলা।
বিষয়টি জানতে চাইতে তিনি বলেন, আমাদের উদ্যোক্তারা অন্যান্য মেলায় অংশ নিলে দেখা যেত ওই মেলায় অধিকাংশরাই পাকিস্তানী পণ্য বিক্রি করছে। তাই তারা আমাদের বিষয়গুলো জানালে আমরা পাকিস্তানী পণ্য মুক্ত মেলার আয়োজন করি।
মেলার উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে তৃষিয়া বলেন, আমরা আসলে দেশী পণ্যের বাজার তৈরি করতে চাই।মেলায় আদিবাসী নারীরা অংশ নিচ্ছে। তারা তৈরি করেছে নারীদের জন্য বিশেষ পোশাক। আমরা এবার অষ্টমবারের মতো মেলার আয়োজন করেছি। আমাদের ক্রেতা বিক্রেতার মধ্যে সুন্দর একটি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে।অনলাইন ভিত্তিক মার্কেট প্লেসের বিষয়ে সরকার যদি আরো বেশি নজর দেয় তাহলে আমাদের উদ্যোক্তাদের অনেক সুবিধা হবে।
মেয়ে নেটওয়ার্ক সম্পর্কে জানতে চাইলে সংস্থাটির কর্ণধার তৃষিয়া নাশতারান বলেন, সংগঠনটি আমাদের একটি পরিবার। বাংলা ভাষাভাষী নারীদের নিয়ে গড়ে ওঠা মেয়ে নেটওয়ার্ক একটি সামাজিক সেচ্ছাসেবী সংগঠন।২০১১ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে এ সংগঠনের যাত্র্রা শুরু হয়। ২০১৩ সালে প্রথম এ রাঙতা মেলার আয়োজন করা হয়।
দুই দিনব্যাপী এ মেলা শনিবার শেষ হবে। মেলা চলবে সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এবং মেলাটি সর্ব সাধারণের জন্য উন্মুক্ত।
ডেস্ক রিপোর্ট উদ্যোক্তা বার্তা