দুই বছরে দুই লাখ বৃক্ষরোপণ কার্যক্রমে ডিএনসিসি

0

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘ঢাকা শহরে ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে। উন্নয়নের ফলে রাস্তা নির্মাণ হচ্ছে, ভবন নির্মাণ হচ্ছে। কিন্তু পরিবেশের ক্ষতি করে উন্নয়ন করা যাবে না। আমরা সিটি কর্পোরেশন থেকে বৃক্ষরোপণ করছি। দুই বছরে দুই লাখ গাছ লাগানোর কার্যক্রম শুরু করেছি। পাশাপাশি শহরের পরিবেশ রক্ষায় প্রতিটি বাড়িতে অন্তত দুটি করে গাছ লাগানোর আহবান জানাই। এ বিষয়ে রাজউক একটি নীতিমালা প্রণয়ন কর‍লে বাস্তবায়ন সহজ হবে।’

শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩) দুপুরে রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন কলেজে পরিবেশের উন্নয়নে কাজ করা সংগঠন ওয়েস (WAYS) আয়োজিত ‘টেকসই নগর ও জনপদের জন্য সবুজায়ন’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘ঢাকা শহরকে অক্সিজেন হাবে পরিণত করতে হবে। পরিবেশ বিনষ্টকারীদের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। পরিবেশের ক্ষতি করায় আজ পরিবেশ তার প্রতিশোধ নিচ্ছে। কোথাও কোন গাছ কাটতে দেয়া যাবে না। বিশেষ করে নতুন প্রজন্মকে এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে। যেখানেই সুযোগ আছে গাছ লাগাতে হবে।’

তিনি আরও বলেন: আমরা ডিএনসিসি থেকে ছাদবাগানের জন্য ১০% কর ছাড়ের আবেদন করেছিলাম। আমাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সারা দেশের সকল সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভায় ছাদ বাগান করলে ১০% কর ছাড়ের অনুমোদন দিয়েছে। ডিএনসিসিতে শিশুদের জন্ম নিবন্ধনের সময় একটি করে চারা বিতরণ করা হচ্ছে।

মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘শহরটাকে আপন করে নিতে হবে। আমরা এই শহরের উপর নির্ভরশীল। এখান থেকেই আমরা উপার্জন করি, এখানেই আমরা বসবাস করি। অতএব এই শহরকে আপন করে নিতে না পারলে শহর রক্ষা করা কঠিন হবে। সবাই সচেতন হলে শহরের অনেক সমস্যা সমাধান করা সম্ভব। প্রতিজ্ঞা করতে হবে কোথাও গাছ কাটা যাবে না। শহরের সবুজায়ন বাড়াতে গাছ লাগাতে হবে, গাছের পরিচর্যা করতে হবে।’

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসি’র কার্যক্রম সম্পর্কে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘ডেঙ্গু প্রতিরোধে উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ব্যর্থতা ও সফলতা বিচারের ভার জনগণের হাতে। জনগণ দেখছে ডিএনসিসি সক্রিয় অবস্থানে আছে। কোথাও অবহেলা পেলে অভিযোগ করুন। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ডিএনসিসি নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আমরা বসে নেই। নিয়মিত মশক নিধন কার্যক্রমের পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় ছুটে যাচ্ছি। জনগণকে সম্পৃক্ত করতে, সচেতনতা বাড়াতে এলাকায় এলাকায় যাচ্ছি। মাইকিং করে সচেতন করা হচ্ছে৷ শিশুদের মধ্যে সচেতনতামূলক কার্টুন বই বিতরণ করা হচ্ছে। ডিএনসিসি’র ওয়েবসাইটে, সবার ঢাকা অ্যাপসে ও ফেসবুক পেজে এলাকাভিত্তিক মশক কর্মীদের তালিকা দেওয়া আছে। সবাই সরাসরি মশক কর্মীদের সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন।’

তিনি আরও বলেন: ‘ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সিটি কর্পোরেশনের পাশাপাশি জনগণের সচেতনতা অত্যন্ত জরুরী। আমি ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে মোহাম্মদপুরে জাপান গার্ডেন সিটিতে অভিযানে গিয়েছিলাম। সেখানে ভবনের বেজমেন্টে প্রচুর লার্ভা পেয়েছি, ম্যাজিস্ট্রেট তখন ৫ লাখ টাকা জরিমানা করে৷ এক মাস পরে আমি পুনরায় জাপান গার্ডেনে অভিযানে গিয়েছি এবং সাংবাদিক ভাই-বোনদের সঙ্গে নিয়ে দেখেছি ভবনগুলোর বেজমেন্টে কোন লার্ভা নেই। পরিচ্ছন্ন পরিবেশ, কোথাও জমা পানি নেই। অতএব সবাই সচেতন হলে, পানি জমিয়ে না রাখলে ডেঙ্গু প্রতিরোধ সম্ভব।’

মেয়র বলেন, ‘অভিযানের বা জেল জরিমানার ভয়ে নয় বরং শহরটাকে ভালোবেসে পরিষ্কার রাখুন। সবাই যার যার আঙিনা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন। কোথাও পানি জমতে দিবেন না। তাহলেই আমরা ডেঙ্গু থেকে রেহাই পাব।’

আলোচনা সভা শেষে ডিএনসিসি মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম অন্য অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে কলেজের একাডেমিক ভবনের সামনে একটি গাছ রোপণ করে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মোঃ আশরাফুল ইসলাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ ও অধ্যাপক আদিল মোহাম্মদ খান, ডিএনসিসি’র প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহঃ আমিরুল ইসলাম, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আর্শট-রকফেলার ফাউন্ডেশন কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত চিফ হিট অফিসার বুশরা আফরিন, মাইলস্টোন কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জিয়াউল আলম প্রমুখ।

ডেস্ক রিপোর্ট
উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here