ডিজিটাল বৈষম্যহীন বিশ্ব গড়তে আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু

0

সোমবার (৩০ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের সহযোগিতায় ও এসপায়ার টু ইনোভেট-এটুআই এর উদ্যোগে রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ডিপিআই অ্যান্ড এআই ফর জিরো ডিজিটাল ডিভাইড’শিরোনামে দুই দিনব্যাপী (৩০-৩১ অক্টোবর) এ আন্তর্জাতিক এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৮তম অধিবেশনের সাইড ইভেন্টে ডিজিটাল বৈষম্যহীন বিশ্ব গড়তে ‘ই-কোয়ালিটি সেন্টার ফর জিরো ডিজিটাল ডিভাইড’ উদ্বোধন করা হয়। এর পটভূমিতে বৈশ্বিক গুরুত্বের ওপর ভিত্তি করে এই সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে।
সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে দেশের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে ডিজিটাল বিভাজন কমিয়ে আনা প্রয়োজন। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীসহ পুরো দেশের মানুষকে আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণে একটি ওপেন প্ল্যাটফর্ম অবকাঠামো নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা তৈরি হয়েছে। এই অবকাঠামোর নাম ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচার (ডিপিআই। দেশের প্রেক্ষাপটে ডিপিআই কোনো স্বপ্ন নয়, বরং একে বাস্তবে রূপ দেওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।

এর মাধ্যমে দেশের কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জুডিশিয়ারিসহ সব খাতে আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণে সহজ, পরিমাপযোগ্য ও টেকসই সমাধানসমূহ দুর্বল ও প্রান্তিকদের উন্নয়নের গল্পে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম করে তুলবে।


দেশের সমৃদ্ধ ও টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে ডিপিআই ও এআইয়ের সর্বোত্তম ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তার বিষয় উল্লেখ করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে গত ১৫ বছরে আমরা ‘বটম আপ অ্যাপ্রোচে’ প্রান্তিক জনগণের জন্য ডিজিটাল সেবা পৌঁছে দিয়েছি।
প্রায় ৯ হাজার ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে গ্রামে গ্রামে নাগরিক সেবা পৌঁছে দিয়েছি। এই সেন্টারগুলোর উদ্যোক্তাদের মধ্যে বড় অংশ হচ্ছেন নারীরা। শ্রমশক্তিতে তাদের অংশগ্রহণের ব্যবধান হ্রাস করে এবং নেতৃত্ব ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে একটি বৃহত্তর ভূমিকার জন্য সক্ষম করে তোলার মাধ্যমে লিঙ্গভিত্তিক ডিজিটাল বিভাজনের ব্যাপারে সেতুবন্ধন সৃষ্টি করার জন্য কাজ করছি।

প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ইতিমধ্যে ডিপিআইয়ের তিন স্তর নিয়ে কাজ করছে বাংলাদেশ। এগুলো হলো- ডিজিটাল পরিচয়, ডিজিটাল পেমেন্ট ও ডাটা বিনিময়।

সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইসিটি বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিন। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সিনিয়র সহসভাপতি সামিরা জুবেরী হিমিকার সঞ্চালনায় জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেলের প্রযুক্তিবিষয়ক দূত আমানদীপ সিং গিল বিশ্বে জিরো ডিজিটাল ডিভাইড কাজ করার গুরুত্ব নিয়ে কথা বলেন।
এ ছাড়া গুগল’র ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. ভিন্ট সার্ফ, পিপল-সেন্টার্ড ইন্টারনেটের চেয়ারম্যান মেই লিন ফাং, ইনফোসিস লিমিটেডের সহপ্রতিষ্ঠাতা এবং চেয়ারম্যান নন্দন নিলেকানি বক্তব্য দেন।

সম্মেলন উদ্বোধনের পরে ডিজিটাল বৈষম্য কমিয়ে এনে টেকসই বিশ্ব গড়তে এআইয়ের অবদান নিয়ে মিনিস্ট্রিয়াল কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। এসময় স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভূমিকা নিয়ে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক এবং যুক্তরাজ্যের নেস্তা’র সাবেক প্রধান নির্বাহী স্যার জিওফ মুলগান। ডিপিআই এর অবদান নিয়ে আলোচনা করেন হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডেভিড এভস এবং বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ডিপিআই এর সম্ভাবনার চিত্র তুলে ধরেন এটুআই এর পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং গাম্বিয়ার কমিউনিকেশনস ও ডিজিটাল ইকোনমি মন্ত্রী ওসমান উক্ত সম্মেলনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও ডিপিআইয়ের মাধ্যমে ডিজিটাল ডিভাইডের বিষয় তুলে ধরেন। আলোচনায় গাম্বিয়া, সাও টোমে এবং প্রিন্সিপসহ বিভিন্ন দেশের মন্ত্রীরা বক্তব্য তুলে ধরেন।

দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ডিপিআই ও এআই নির্ভর আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সেক্টরভিত্তিক ১৪টি বিশেষ সেশনের আয়োজন করা হয়েছে। বিভিন্ন দেশের মন্ত্রীসহ দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞরা সেশনগুলোতে অংশ নেবেন।

ডেস্ক রিপোর্ট
উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here