ব্যর্থতা থেকেই ছিলো শুরু। খুব ছোট্ট বেলা থেকেই পেইন্টিং এর প্রতি ছিলো গভীর আগ্রহ। ফ্যাশন তাকে খুবই টানতো। সবসময় সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে কিছু করতে চাইতেন।
১৯৯০ সালে ১৮ বছর বয়সে সোফিয়া পলিটেকনিক কলেজে ফাউন্ডেশন আর্টের ডিপ্লোমা কোর্সে যোগ দেন। কিন্তু ভাগ্য কি নির্মম! কলেজের ফার্স্ট ইয়ারেই তিনি ফেইল করেন।
বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না যে, তিনি ফেইল করেছেন। নিজেকে প্রমাণ করতে চাইলেন। কলেজে ফেইল করার পর তিনি ২টি পার্ট টাইম কোর্স করা শুরু করেন। একটা ছিল টেক্সটাইল আরেকটা ছিল ইন্টেরিওর ডেকোরেশন এর কোর্স। কোর্স করার পাশাপাশি বিক্রয়কর্মীর কাজ খুঁজে নিয়েছিলেন।
বলছি সফল উদ্যোক্তা নিনা লেখির কথা…।।
অন্যান্য মেয়েদের মত নিনাও খুব ব্যাগ পছন্দ করতেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠান এর জন্য তার সংগ্রহে ছিলো নানান ডিজাইনের ব্যাগ। কিন্তু তিনি লক্ষ্য করেছিলেন যে, বাজারে আড়ম্বরপূর্ণ ও মার্জিত ব্যাগ খুব একটা নেই।
একদিন স্ক্রিন প্রিন্ট এর ক্লাস করছিলেন। হঠাৎ ই তার মনে হলো ব্যাগে স্ক্রিন প্রিন্ট করলে কেমন হয়? যেই ভাবা সেই কাজ।
ব্যবসায়ে প্রাথমিক কিছু বিনিয়োগ দরকার ছিল। মায়ের সহায়তায় ৭,০০০ টাকা মূলধন নিয়ে বিখ্যাত ব্র্যান্ড “ব্যাগিট” এর জন্ম হয়।
একটি প্রদর্শনী, একটি ব্যাগ।
যাত্রা শুরু “ব্যাগিট” এর।
এরপর মুম্বাই এর কিছু খুচরা দোকানে বিক্রি করেন। আজ ১০০০ এর বেশি আউটলেটে তার ব্যাগ বিক্রি হয়। ২০০৬-২০০৭ সাল নাগাদ ব্যাগিট এর টার্নওভার গিয়ে দাঁড়ায় ৭ কোটি টাকা। নিনা প্রমাণ করে, ব্যর্থ হওয়া মানে এই নয় যে সে ভবিষ্যতে কিছু অর্জন করতে পারবে না।
ব্যাগিট নিয়ে দৃঢ় সংকল্প ছিলো নিনার। তিনি বিশ্বাস করতেন যদি কেউ ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে কাজ করে, মানুষ তার কাজের প্রশংসা করবেই। মাত্র একটা দোকান থেকে দীর্ঘ ৩০ বছরে ব্যাগিট এর মার্কেট ভ্যালু ১০০ কোটি টাকা, ইন্ডিয়ার ৬১টি স্থানে ৫২টি স্টোর এবং ৩০০টি বহুমূখী বিপণীবিতানে আজ তার ব্যাগ। অথচ ২০০০ সালে নিনা যখন প্রথম দোকানটি নেন, ইনভেস্ট করা পুরো টাকাটাই জলে চলে যায়।
সপ্তাহের প্রতিদিনই নিনা তার কোন না কোন আউটলেটে যান এবং তিনি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন ফ্লোর থেকে সবসময়ই কিছু না কিছু বিক্রয়কৌশল শেখার আছে, আর তিনি তা আউটলেট থেকে তার সহকর্মীদের আপডেট পাঠান।
“ব্যাগিট” নারী ওয়ালেট বিভাগের সেরা ব্র্যান্ডের জন্য জিতে নিয়েছে পেটা ভেগান ফ্যাশন অ্যাওয়ার্ডস ২০১৪। ২০১৫ সালে ফরচুন ম্যাগাজিনে প্রকাশিত মোস্ট পাওয়ারফুল উইমেন এবং একই বছরে বর্ষসেরা নারী উদ্যোক্তার অ্যাওয়ার্ডও পান নিনা লেখি।
(তথ্যসূত্র ও ছবি ইন্টারনেট থেকে)
সুরাইয়া আলম