জি আই স্বীকৃতি পাওয়া ২১ টি পণ্য

0

বাংলাদেশের জিআই পণ্য কি কি এবং কবে থেকে সেগুলো জিআই সনদ পেল, সব তথ্য রয়েছে আজকের উদ্যোক্তার বার্তার স্পেশাল রিপোর্টে।

কোনো একটা দেশের মাটি, পানি, আবহাওয়া ও মানুষের সৃজনশীলতা মিলে কোনো পণ্য তৈরি হলে তাকে বলা হয় সেই দেশের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিওগ্রাফিক্যাল ইনডিকেশন বা জিআই) পণ্য। শুধু বাংলাদেশেই উৎপাদিত হয় এমন ২১টি পণ্য আন্তর্জাতিক মেধাস্বত্ব কর্তৃপক্ষ থেকে ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। অন্য কোনো দেশে নয়, এই পণ্যগুলো শুধু বাংলাদেশেই উৎপাদন করা সম্ভব।

কোনো পণ্য জিআই স্বীকৃতি পেলে পণ্যগুলো বিশ্বব্যাপী ব্র্যান্ডিং করা সহজ হয়। পণ্যগুলোর আলাদা কদর থাকে। ঐ অঞ্চল বাণিজ্যিকভাবে পণ্যটি উৎপাদন করার অধিকার এবং আইনী সুরক্ষা পায়।

১. জামদানি- বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) পক্ষ থেকে ২০১৫ সালে প্রথমবারের মতো জামদানিকে জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধনের অনুমোদন চাওয়া হয়। ২০১৬ সালে স্বীকৃতি পেয়েছিল জামদানি। নারায়ণগঞ্জের পাশে শীতলক্ষ্যা নদীর পার্শ্ববর্তী এলাকার আবহাওয়া ও পরিবেশ জামদানি বোনার জন্য উপযোগী। শীতলক্ষ্যার পানির সঙ্গে রং মিশিয়ে রঙিন করা হয় সুতা। অন্য কোনো এলাকার পানি দিয়ে সুতার ওই স্থায়িত্ব ও রং আনা সম্ভব না। জামদানির আরেকটি প্রধান বিশেষত্ব হচ্ছে এটি সম্পূর্ণ হাতে বোনা হয়ে থাকে। ওই কাপড় বোনার জন্য বিশেষ দক্ষতাসম্পন্ন কারিগরের দরকার হয়, যাঁরা মূলত শীতলক্ষ্যার তীরে বসবাস করে থাকেন। ঢাকার নারায়ণগঞ্জ ও সোনারগাঁয়ে জামদানি তৈরি হয় সবচেয়ে বেশি।

২. ইলিশ– ২০১৭ সালে ইলিশ মাছের জিআই স্বীকৃতি চেয়ে আবেদন করে বাংলাদেশ মৎস্য অধিদপ্তর। আবেদনটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ওই বছরের জুনে গেজেট প্রকাশ করা হয়। কিন্তু দুই মাসের মধ্যে, ১৭ই আগস্ট কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এ বিষয়ে কোনো আপত্তি না করায় এ পণ্যের জিআই স্বত্ব পায় বাংলাদেশ। মৎস্যসম্পদবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়ার্ল্ড ফিশের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, বিশ্বের মোট ইলিশের ৮৫ শতাংশ উৎপাদিত হয় বাংলাদেশে। ইলিশ আছে, বিশ্বের এমন ১১টি দেশের ১০টিতেই মাছটির উৎপাদন কমছে। একমাত্র বাংলাদেশেই বাড়ছে। পদ্মা ও মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদ-নদী, শাখা, উপশাখা, মোহনা ও বঙ্গোপসাগরের উপকূলীয় অঞ্চলে ইলিশ বিচরণ করে। এর মধ্যে পদ্মা ও মেঘনার ইলিশ সবচেয়ে উৎকৃষ্ট।

৩. ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জের খিরসাপাতি আম’- ২০১৯ সালে দেশের তৃতীয় পণ্য হিসেবে ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জের খিরসাপাতি আম’ জিআই নিবন্ধন পায়। অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে বর্তমানে ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের আম রপ্তানি হচ্ছে। খিরসাপাতি আমের বিপুল সম্ভাবনা বিবেচনা করে এর জিআই নিবন্ধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

৪. বিজয়পুরের সাদা মাটি – নেত্রকোনার এই প্রাকৃতিক সম্পদকে দেশের চতুর্থ ভৌগলিক নির্দেশক পণ্য জিআই স্বীকৃতি দিতে নিবন্ধনের আবেদন করেছিল নেত্রকোনা জেলা প্রশাসনের কার্যালয়, যা ২০২১ সালে এসে স্বীকৃতি পায়। সিরামিকের বাসনকোসন, টাইলস, গ্লাসসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হচ্ছে এই উৎকৃষ্ট মানের সাদামাটি। নেত্রকোনা জেলার বিজয়পুরে সাদা মাটির বিপুল মজুত আছে।

৫. দিনাজপুর কাটারীভোগ – দিনাজপুরের কাটারিভোগ ধান জিআই হিসেবে নিবন্ধনের জন্য আবেদন জানিয়েছিল বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট। ২০২১ সালে পাওয়া গেছে স্বীকৃতি। এই ধানের বৈশিষ্ট্য হলো এ থেকে উৎপাদিত চাল সরু ও সুগন্ধি। এটি সারা বাংলাদেশে উৎপাদিত হলেও মূল উৎপত্তিস্থল দিনাজপুরে। দিনাজপুর ছাড়া অন্য এলাকায় চাষ হলে সুগন্ধ কমে যায়। এ কারণে দিনাজপুরের কাটারিভোগ পণ্যটিকেই এই স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

৬. কালিজিরা ধান – ষষ্ঠ ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য কালিজিরা। এটির আবেদনকারী ও সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট যা স্বীকৃতি পেয়েছে ২০২১ সালে। কালিজিরা ধানের খোসা কালচে হলেও চালের রং সাদা এই জাতের ধানের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এটি খুব ছোট এবং সুগন্ধিযুক্ত। এই ধানের উৎপত্তিস্থল ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে বাংলাদেশের ময়মনসিংহ অঞ্চলে। তবে স্বাদ ও সুগন্ধির কারণে ওই চাল জনপ্রিয় হয়ে ওঠায় তা সারা দেশে চাষ হয়।

৭. রংপুরের শতরঞ্জি – বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) ২০১৯ সালে ডিপডিটির কাছে রংপুরের শতরঞ্জির জিআই স্বীকৃতির আবেদন করেছিল। ২০২১ সালে আসে স্বীকৃতি। রংপুরের ঘাঘট নদের তীরে তৈরি হতো এই শতরঞ্জি। ত্রয়োদশ শতাব্দীতেও এ এলাকায় শতরঞ্জির প্রচলন ছিল। মাটির ওপর সুতা টানা দিয়ে বাঁশ এবং রশির ওপর হাতে নকশা করে তৈরি হতো শতরঞ্জি। ব্রিটিশ শাসনামলে শতরঞ্জি এত বেশি জনপ্রিয়তা লাভ করে যে এখানকার তৈরি শতরঞ্জি সমগ্র ভারতবর্ষ, বার্মা, সিংহল, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হতো।


৮. রাজশাহী সিল্ক – রাজশাহী সিল্ককে জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধনের জন্য ২০১৭ সালে আবেদন করে বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড। ২০২১ সালে মিলেছে স্বীকৃতি। রেশম কাপড়ের একটি ধরন এই রাজশাহী সিল্ক। এটি মালবেরি সিল্ক। মালবেরি হলো তুঁতগাছ। রাজশাহীর বোয়ালিয়া বন্দরে এই রেশমের চাষ হতো সবচেয়ে বেশি। অষ্টাদশ শতকে ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে রাজশাহী সিল্ক রপ্তানি হতো।

৯. ঢাকাই মসলিন – নবম ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য ঢাকাই মসলিন যার আবেদনকারী ও সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড। ২০২১ সালে মেলে স্বীকৃতি। মসলিনের ইতিহাস হাজার বছরের পুরোনো। একসময় এটিই ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে দামি কাপড়। বলা হয়ে থাকে, মসলিন শাড়ির বুনন এতটাই সূক্ষ্ম ছিল যে পুরো একটি শাড়ি আংটির ভেতর দিয়ে এপার-ওপার করা যেত।
১০. বাগদা চিংড়ি – দশম ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য বাগদা চিংড়ি। আবেদনকারী ও সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মৎস্য অধিদফতর। ২০২২ সালে জিআই সনদ পায় বাগদা চিংড়ি। বাংলাদেশের বাগদা চিংড়ির মান বিশ্বের মধ্যে অন্যতম একটি কোয়ালিটি। এর রং ও গন্ধ খুবই ভালো।
১১. রাজশাহী – চাপাইনবাবগঞ্জের ফজলি আম- ‘ফজলি আম’কে রাজশাহীর নিজস্ব পণ্য হিসাবে স্বীকৃতির জন্য ২০১৭ সালে আবেদন করেছিল রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্র। ফজলি আমের জিআই সনদ (ভৌগলিক নির্দেশক পণ্যের স্বীকৃতি) পায় রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ দুই জেলাই।

১২. বাংলাদেশের শীতলপাটি – ২০২৩ সালের ১২ জুলাই বাংলাদেশের শীতলপাটিকে বিসিকের তৃতীয় ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য ও বাংলাদেশের ১২তম ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে নিবন্ধনের জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি) বরাবর আবেদন করা হয়, যা অনুমোদিত হয়েছে। মসলিনের মতো বহু আগে থেকেই দেশে–বিদেশে বাংলাদেশের শীতলপাটির কদর। সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার তেঘরিয়া গ্রামের শীতলপাটি জায়গা করে নিয়েছিল মোগল রাজদরবার ও ব্রিটেনের রানি ভিক্টোরিয়ার রাজসভায়।

১৩. বগুড়ার দই – বগুড়ার দইকে জিআই পণ্য করার জন্য আনুষ্ঠানিক আবেদন করে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির বগুড়া জেলা শাখা। সংগঠনটি ২০১৭ সালের ২৬ ডিসেম্বর পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরে (ডিপিডিটি) এ আবেদন করে। যার পরিপ্রেক্ষিতে, ২০২৩ সালে বগুড়ার বিখ্যাত সেই সরার দই পায় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) হিসেবে স্বীকৃতি। রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির আবেদনে বলা হয়, প্রায় দেড় শ বছর আগে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার নীলকণ্ঠ ঘোষের হাত ধরে বগুড়ার দইয়ের যাত্রা শুরু হয়। বগুড়ার দই ব্রিটেনের দুই মহারানি ভিক্টোরিয়া আর রানি এলিজাবেথও খেয়েছেন।

১৪. শেরপুরের তুলশীমালা ধান – শেরপুরের ঐতিহ্যবাহী সুগন্ধী ‘তুলশীমালা ধান’ ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য হিসেবে শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে ২০২৩ সালে। এই স্বীকৃতির জন্য আবেদন করে জেলা প্রশাসন, শেরপুর।

১৫. চাঁপাইনবাবগঞ্জের ল্যাংড়া আম – ২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি খিরশাপাতি, ল্যাংড়া ও আশ্বিনা আমকে জিআই পণ্য স্বীকৃতি দিতে আবেদন করে চাঁপাইবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র। ২০১৯ সালে জিআই স্বীকৃতি পায় খিরশাপাতি আম। প্রায় ছয় বছর পর ল্যাংড়া আম জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেল।

১৬. চাঁপাই নবাবগঞ্জের আশ্বিনা আম – ল্যাংড়া আমের পাশাপাশি ২০২৩ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আশ্বিনা আম জি আই স্বীকৃতি পায়। আশ্বিনা আমের গাছে মুকুল আসার প্রায় ৩ থেকে ৪ মাস পর পাকে। আমটির বোঁটা শক্ত আর নিচের অংশ চোঁচালো। মিষ্টতার পরিমাণ প্রায় গড়ে ২০ শতাংশ। আশ্বিনা আমের ভক্ষণযোগ্য অংশ প্রায় ৭৭ শতাংশ।

১৭. নাটোরের কাঁচাগোল্লা – দেশের ১৭তম ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেল নাটোরের ৩০০ বছরের মিষ্টি কাঁচাগোল্লা। ২০২৩ এর ৮ই আগস্ট জেলা প্রশাসন নাটোর এই সনদ লাভ করেন। কাঁচাগোল্লা গোলাকার মনে হলেও এটি আসলে চিনি মিশ্রিত ছানার সন্দেশ। খুব সহজেই তৈরি করা যায় নাটোরের কাঁচাগোল্লা। তবে নাটোরের কাঁচাগোল্লা তৈরির পেছনে রয়েছে এক চমকপ্রদ ইতিহাস। ১৭৬০ সালে অর্ধবঙ্গেশ্বরী রানী ভবানীর রাজত্বকালে কাঁচাগোল্লার সুখ্যাতি দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়ে। নাটোরের লালবাজারে মিষ্টির কারিগর মধুসূদন পালের দোকানে হঠাৎ একদিন কারিগর আসেননি। এতে মাথায় হাত পড়ে তার। ছানাগুলো নষ্টের হাত থেকে রক্ষা করতে তিনি চিনির রস ঢেলে জ্বাল দিয়ে নামিয়ে রাখেন। পরে মুখে দিয়ে দেখেন ওই চিনি মেশানো ছানার দারুণ স্বাদ। তখন মধুসূদন পাল এর নাম দেন কাঁচাগোল্লা। কারণ কাঁচা ছানা থেকে তৈরি বলে এর নাম হয় কাঁচাগোল্লা। রানী ভবানীর রাজবাড়িতে নিয়মিত মিষ্টি সরবরাহ করতেন মধুসূদন পাল। একদিন রানী ভবানী এ মিষ্টি খেয়ে প্রশংসা করে এর নাম জানতে চান। তখন মধুসূদন পাল তাকে বলেন, ‘কাঁচা ছানা থেকে তৈরি হয়েছে বলে এ মিষ্টির নাম দেয়া হয়েছে কাঁচাগোল্লা।’

১৮. বাংলাদেশের ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল – ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল আংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রাণিসম্পদ যা বাংলাদেশের সর্বত্র পাওয়া যায়। ২০১৭ সালে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এর জি আই এর আবেদন করে। বাংলাদেশ ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল আনুমানিক ১১০০ খ্রিস্টাব্দ হতে বাংলাদেশে উৎপাদন হয়ে আসছে। এই জাতের ছাগল প্রাণিসম্পদের একমাত্র নিজস্ব জাত হিসেবে পরিচিত। যেসব ভূমিহীন কৃষকদের পক্ষে গাভী কেনা সম্পভ নয়, তারা সহজেই এই ছাগল কিনে পালন করতে পারেন। সেজন্য “বাংলাদেশ ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল’কে গরীবের গাভী বলা হয়।

১৯. টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ির চমচম – ২০২৩ এর মার্চে জেলা প্রশাসক টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ির চমচমকে জি আই নিবন্ধনের জন্য আবেদন করে। এটি এক প্রকার ছানার মিষ্টি। টাঙ্গাইলের চমচমের উৎপত্তি মূলত টাঙ্গাইল জেলার পোড়াবাড়ি নামক স্থানে।

২০. কুমিল্লার রসমালাই – কুমিল্লার রসমালাই এক প্রকার দুগ্ধজাত মিষ্টান্ন। ২০২৩ এর এপ্রিলে জেলা প্রশাসক এর জিআই সনদের আবেদন করেন। কুমিল্লা অঞ্চলের গরুর খাঁটি দুধ এবং বংশানুক্রমিক কারিগরি দক্ষতার জন্যই এই অঞ্চলের রসমালাই অন্যান্য অঞ্চল থেকে আলাদা। এর মত স্বাদ আর কোনো অঞ্চলে তৈরি রসমালাই এ পাওয়া যায় না।

২১. কুষ্টিয়ার তিলের খাজা – কুষ্টিয়ার তিলের খাজা মিষ্টি জাতীয় এক প্রকার খাবার। ২০২৩ এর এপ্রিলে জেলা প্রশাসক আবেদন করেন। তিলের খাজার প্রধান উপকরণ তিল এবং চিনি বা গুঁড়। ১০০ বছরের অধিক সময় আগে কুষ্টিয়া জেলায় এই তিলের খাজার উৎপত্তি। তিলের খাজার সব উপকরণ, এর উৎপাদনকৌশল, ব্যবহার পদ্ধতি সবই স্থানীয়ভাবে প্রক্রিয়াজাত করা হয়। এ অঞ্চলের কারিগরদের দক্ষতাই তিলের খাজায় বিশেষত্বের কারণ।

দেশে ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (নিবন্ধন ও সুরক্ষা) আইন পাস হয় ২০১৩ সালে। দেশের প্রথম জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধন পায় জামদানি। এরপর একে একে জিআই পণ্য হিসেবে গত ১০ বছরে স্বীকৃতি পায় ইলিশ, ক্ষীরশাপাতি আম, মসলিন, বাগদা চিংড়ি, কালিজিরা চাল, বিজয়পুরের সাদা মাটি, রাজশাহীর সিল্ক, রংপুরের শতরঞ্জি, দিনাজপুরের কাটারিভোগ চাল, রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের ফজলি আম। বিদায়ী বছর শীতলপাটি, বগুড়ার দই, শেরপুরের তুলসীমালা ধান, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ল্যাংড়া আম, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আশ্বিনা আম এবং নাটোরের কাঁচাগোল্লা জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পায়। আর নতুন করে আরও ৪টি পণ্য জিওগ্রাফিক্যাল আইডেন্টিফিকেশন (জি-আই) বা ভৌগলিক নির্দেশক হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছে। এ বছরের শুরুতে স্বীকৃতি পেল কুমিল্লার রসমালাই, টাঙ্গাইলের চমচম, কুষ্টিয়ার তিলের খাজা এবং বাংলাদেশের ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল। এ নিয়ে বাংলাদেশে মোট জিআই পণ্যের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ২১টিতে।

ডেস্ক রিপোর্ট,
উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here