বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির যৌথ উদ্যোগে “জামদানি পণ্য প্রদর্শনী ও মেলা ২০১৯” এর উদ্বোধন হলো আজ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে। শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহ্মুদ হুমায়ূন, এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে উক্ত প্রদর্শনী ও মেলা উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক) এমপি, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি, শিল্প সচিব মোঃ আবদুল হালিম, সংস্কৃতি সচিব (ভাঃ) ড. আবু হেনা মোস্তফা কামাল এনডিসি, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব (ভাঃ) মোঃ মিজানুর রহমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিসিক চেয়ারম্যান মোঃ মোশ্তাক হাসান, এনডিসি।
উদ্বোধনে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহ্মুদ হুমায়ূন এমপি বলেন, “জামদানী শিল্পের সাথে সরাসরি ১৫ হাজার মানুষ জড়িয়ে আছে। এই জামদানী এমনই এক ঐতিহ্য যে, বাইরের দেশে আমাদের জামদানীর এক টুকরো কাপড় পেলে ফ্রেমে বাধিয়ে ঘরে রাখে, মিউজিয়ামে রাখে”।
জামদানি একটি বংশানুক্রমিক কারুশিল্প। নারায়ণগঞ্জ জেলাধীন রূপগঞ্জ উপজেলার বেশ কিছু গ্রাম এবং সিদ্ধিরগঞ্জ ও সোনারগাঁও উপজেলার কয়েকটি গ্রামে যুগ যুগ ধরে জামদানি তৈরি হয়ে আসছে। বিসিক এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি জামদানি শিল্পের উন্নয়নে তাঁতিদের বিভিন্ন ভাবে সহায়তা প্রদান করছে। তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন এবং নতুন প্রজন্মকে উৎসাহ প্রদান, উৎপাদন বৃদ্ধি ও বিপণন সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে মুলত এই মেলার আয়োজন।
২৫ টি স্টলে জামদানি কারুশিল্পীরা তাদের নিপুণ হাতের তৈরি তেরছা, জলপাড়, পান্নাহাজার, করোলা, দুবলাজাল, সাবুরগা, বলিহার, শাপলাফুল, আঙ্গুরলতা, ময়ূরপ্যাচপাড়, বাঘনলি, কলমিলতা, চন্দ্রপাড় ও ঝুমকা ইত্যাদিসহ আরও অনেক বাহারি নামের ও নানাবিধ নকশার জামদানি শাড়ীর পসরা সাজিয়েছেন এই মেলায়। মেলায় অংশ নেওয়া উদ্যোক্তাদের সাথে কথা বলেন ইউবি প্রেস। ঈদের আগে বেশ ভালো বেচা-কেনা হবে প্রত্যেক উদ্যোক্তাই এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উদ্যোক্তা মোঃ সালাম বলেন, “আমরা তাঁতি মানুষ আমাদের পরিচিতি কম কিন্তু এমন মেলা হলে আমাদের পরিচিতি এবং আমাদের শাড়ীর প্রচারণা বাড়ে। তাই প্রতি তিন মাস পর পর এমন মেলার আয়োজন হলে খুব ভালো হয়, সরকার যদি এ ব্যাপারে এগিয়ে আসতেন আমরা খুব উপকৃত হতাম”।
মেলায় অনেক ক্রেতা সমাগম ছিলো। তবে আয়োজকরা বলছেন, “রমজান মাস তাই ইফতারের পর ক্রেতা সমাগম আরও বাড়বে বলে আশা করছি।
মেলার এক ক্রেতা রেবতী রানী সরকারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, “শাড়ী গুলো মানে, রঙে, ডিজাইনে খুবই সুন্দর। সরাসরি উৎপাদকের কাছ থেকে আমরা পণ্য কিনতে পারছি এতে দাম নাগালের মধ্যেই থাকে”।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ১৬ই মে থেকে শুরু হয়ে মেলা ১০ দিন ২৫শে মে ২০১৯ পর্যন্ত চলবে। প্রতিদিন সকাল ১০.০০ টা থেকে রাত ১০.০০ টা পর্যন্ত দর্শণার্থী ও ক্রেতা সাধারণের জন্য উম্মুক্ত থাকবে।
বিপ্লব আহসান