জাপান থেকে পিএইচডি অর্জন করে দেশে ফিরে উদ্যোগ নিলেন মুক্তা চাষের

0
উদ্যোক্তা ড. নজরুল ইসলাম

পিএইচডি করে ড. নজরুল ইসলাম চাকরি করতেন উচ্চ বেতনে। সেই চাকরি ছেড়ে শুরু করেন মুক্তা চাষ। ঝিনুকের বুকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি, নানা আকৃতির গহনা, কানের দুল, লকেট, আংটি, ব্যাজ, বাটনসহ বিভিন্ন ধরনের অলংকার তৈরি করে বাজারজাত করছেন ঝিনাইদহের কৃষি উদ্যোক্তা নজরুল ইসলাম।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণিবিদ্যা বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে ফিশারিজ বিষয়ে তিন বছরের মধ্যেই পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন তিনি। এরপর উচ্চশিক্ষার জন্য জাপানে পাড়ি জমান। গবেষণা করেন সামুদ্রিক প্রবালের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে। জাপানের সিজুওকা ইউনিভার্সিটি থেকে ডক্টর অব সায়েন্স ডিগ্রি অর্জন করেন নজরুল ইসলাম।

লেখাপড়া শেষে দেশে ফিরে যোগ দেন জাপানের আন্তর্জাতিক সংস্থা জাইকা’তে। মহামারি করোনার কারণে চাকরি ছেড়ে গ্রামে ফিরে জমানো টাকা দিয়ে ৩.৩ একর জমিতে গড়ে তোলেন ‘রাইয়ান জৈব-কৃষি’প্রকল্প। বর্তমানে তিনি ১০ বিঘা জমিতে চাষাবাদ করছেন। দুটি পুকুরের একটিতে মাছ আর অন্যটিতে মুক্তা চাষ করে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। নানা ধরনের অলঙ্কার তৈরি করে বিক্রি করছেন তিনি। এসব গহনার চাহিদাও ভালো।

ঝিনুক চাষ করতে প্রথমে ইমেজ ব্যবহার করতে হয়। তারপর ভাসমান প্লটের ওপর নেট ও রশিসহ বিভিন্ন জিনিস প্রয়োজন হয়ে থাকে। ঝিনুকের জন্য বাড়তি কোন খাবার প্রয়োজন হয় না। বর্তমানে এক বিঘা জমির পুকুরে মুক্তা চাষ করছেন নজরুল। তিন হাজার ঝিনুক রয়েছে তার পুকুরে। যার একেকটি থেকে দু’টি করে মোট ছয় হাজার মুক্তা পাওয়া যাবে। তিন হাজার ঝিনুক চাষ করতে তার খরচ হয়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকা। এখন ঝিনুক থেকে মুক্তা আহরণ শুরু করেছেন। একেকটি মুক্তা ৫০০ টাকা করে বিক্রি হয়। আর মুক্তার গহনা বিক্রি হয় ১২শ থেকে দেড় হাজার টাকার মধ্যে। এবার সাত থেকে আট লাখ টাকা লাভ হবে বলে আশা করছেন এই উদ্যোক্তা।

ড. নজরুল ইসলাম বলেন, “নদী-নালা থেকে দেশীয় প্রজাতির ঝিনুক সংগ্রহ করে বৈজ্ঞানিক উপায়ে অপারেশন করে পুকুরে ছেড়ে দেওয়া হয়। সাত থেকে আট মাস পর ওই ঝিনুক থেকে মুক্তা আহরণ করি। সাধারণ মুক্তার পাশাপাশি ঝিনুকের গর্ভে মুক্তার বিভিন্ন ডিজাইনের কাঠামো তৈরি করা হয়, যা ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। মুক্তা চাষে আগ্রহী বেকার যুবকদের বিনামূল্যে প্রশিক্ষণও দিচ্ছি।”

এই কৃষি উদ্যোক্তা বলেন, সরকারের সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতা পেলে বাংলাদেশে মুক্তা শিল্পের প্রসার ঘটানো সম্ভব হবে।

মুক্তা চাষের পাশাপাশি দেশি-বিদেশি ৩০ ধরনের বিষমুক্ত ফল ও নিরাপদ সবজিও চাষ করছেন ড. নজরুল ইসলাম। এখান থেকেও তিনি ভালো উপার্জন করছেন।

সেতু ইসরাত
উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here