শীতের সকালে মিষ্টি রোদে বসে খেজুর গুঁড়ের পিঠা খেয়েছেন কতই না। গ্রাম বাংলায় খেজুরের সুস্বাদু রস এবং খেজুরের গুঁড় দিয়ে তৈরি হয় নানান রকমের পিঠেপুলি। নবান্ন এবং শীত উৎসবে ঐতিহ্যবাহী পিঠেপুলির মূল উপাদান খেজুর গুঁড় তৈরির কারিগর আজ প্রায় হারানোর পথে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় এসএমই প্যাভিলিয়নে ‘ট্রাষ্ট এগ্রোফুড প্রোডাক্টস’ তুলে ধরলেন দেশের হারিয়ে যাওয়া এই ঐতিহ্যটিকে। শুধু টিকিয়ে রাখতেই নয় বরং একে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন রাশেদুল ইসলাম।
ফার্মাসিউটিক্যালে লেখাপড়া করা রাশেদুল ইসলাম সম্পূর্ন ভিন্ন একটি সেক্টর, ফ্রুটস এগ্রিকালচার নিয়ে বিভিন্ন রিসার্চ এর মাধ্যমে আবিষ্কার করলেন গুঁড়ের এক নতুন রুপ।
অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষার পর ২০১২ সালে নিজের বাগান, চাষীদের কাছ থেকে লিজ নেয়া ৬ হাজার খেজুর গাছ এবং ২৫ জন কর্মী নিয়ে শুরু করলেন গুঁড়ের ফ্যাক্টরি। পরিচ্ছন্ন পরিবেশে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় পরীক্ষা নিরীক্ষা করে গুনগত মান ঠিক রেখে তৈরি হয় পাটালী, ঝোলা ও পাউডার গুঁড়।
পাটালীগুঁড় ও লিকুইড বা ঝোলা গুঁড় এর পাশাপাশি তৈরি করলেন গুঁড়ের পাউডার ফর্ম। হোয়াইট সুগারের পরিবর্তে ব্যবহৃত এ পাউডার টিতে রয়েছে প্রচুর ভিটিমিন ও মিনারেলস। স্বাস্থ্যপযোগী এই পাউডার টি বিভিন্ন খাবার বিশেষ করে চায়ে ব্যবহার করা হয় । গুনগত মান, ফ্লেভার এবং রং অপরিবর্তিত রেখে হোয়াইট সুগারের পরিবর্তে এটি চায়ে ব্যবহার করা যায়।
উদ্যোক্তা রাশেদুল ইসলাম বাণিজ্য মেলায় ইউবিপ্রেসকে জানান, ক্রেতারা তার স্টলে আসছেন এবং গুঁড়ের এই নতুনত্ব দেখে কিনতে আগ্রহী হচ্ছেন। মেলায় বেশ ভালো সাড়া মিলছে উদ্যোক্তার স্টলে।
পাউডার গুঁড়গুলো পাটের তৈরি আকর্ষণীয় মোড়কে প্যাকিং করে চমৎকার রুপ দিয়েছেন রাশেদুল ইসলাম। অল্পদিনেই লাভজনক ও জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ব্যবসা।বিদেশ থেকেও আসতে থাকে অর্ডার। ২০১৮ সালে কাতার, সিঙ্গাপুর ও কানাডায় পাঠিয়েছেন নিজের ফ্যাক্টরির গুড়। সফলতার সাথে দেশের ঐতিহ্যকে বিদেশে নেওয়ার পাশাপাশি প্রায় ২৫ জন কর্মীর কর্মসংস্থান করেছেন উদ্যোক্তা রাশেদুল ইসলাম।
শারমীন আয়াত