চায়ের দেশ খ্যাত শ্রীমঙ্গলে ‘করলা গ্রাম’

0

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের আশিদ্রোন ইউনিয়নের পাড়ের টং গ্রামটি ‘করলা গ্রাম’ হিসেবে বেশ পরিচিতি পেয়েছে। সেখানে করলার ব্যাপক ফলন হয়েছে। করলার ফলনে খুশি কৃষি উদ্যোক্তারা।

করলা চাষের জন্য জনপ্রিয়তা পাওয়ায় স্থানীয় পর্যায়ে পাড়ের টং করলার গ্রাম নামে বেশ পরিচিত। স্থানীয় কৃষকরা করলার চাষ করেই স্বাবলম্বী হয়েছেন।

পাড়ের টং গ্রামে দেখা যায়, পুরো গ্রামজুড়ে করলার মাচা। সবুজ পাতায় ঘেরা এই মাচার নিচে ঝুলছে করলা। গ্রামের প্রায় দেড়শ একর জমিতে করলা চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন স্থানীয়রা। পাশাপাশি দৈনিক মজুরি হিসেবে করলার ক্ষেতে কাজ করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন সেখানকার নারীরা। বিভিন্ন জেলা উপজেলার পাইকাররা এই গ্রাম থেকে প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার কেজি করলা কিনে নিয়ে সারাদেশে সরবরাহ করেন।

পাড়ের টং এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গ্রামের প্রায় দেড়শ একর জমিতে করলা চাষ হয়। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১০ হাজার কেজি করলা পাইকাররা নিয়ে যান। এই করলা বেচাকেনার জন্য এখানে একটি বাজার ও অনেকগুলো আড়ত গড়ে উঠেছে।

গ্রামের বাসিন্দা নসু মিয়া বাণিজ্যিকভাবে প্রথম করলা চাষ শুরু করেন। তার দেখাদেখি অনেকে করলা চাষে আগ্রহী হন। এখন গ্রামের প্রায় সবাই করলা চাষ করছেন। অন্যান্য ফসলের তুলনায় করলা চাষে সময় কম লাগে ও লাভ বেশি হওয়ায় তারা করলা চাষ করছেন।

নিজেদের জমি না থাকায় অনেকেই করলার ক্ষেতে দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কাজ করে থাকেন। এতে প্রতিদিন ২০০-৩০০ টাকা মজুরি পান সেখানকার কর্মীরা। কাজের সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় গ্রামে এখন বেকার মানুষের সংখ্যা কমে গেছে। নারী, পুরুষ, এমনকি তাদের সন্তানরাও পড়াশোনার পাশাপাশি করলার জমিতে কাজ করে।

হবিগঞ্জের মিরপুর থেকে আসা পাইকার আরজু মিয়া বলেন, ‘এখানকার করলার বেশ সুনাম রয়েছে। আমি প্রতিদিনই এখান থেকে প্রায় ২-৩ মেট্রিক টন করলা কিনে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলায় সরবরাহ করি। আমার মতো আরো অনেক পাইকার এখান থেকে করলা কিনে নিয়ে যান।’

পাড়ের টং কালেকশন পয়েন্ট বাজারের সাধারণ সম্পাদক মো. হামদুল হক বলেন, আমিও একজন কৃষক। আমাদের এখান থেকে পাইকাররা করলা কিনে নিয়ে যান। আমরা একটা দাম নির্ধারণ করে করলা বিক্রি করে থাকি। এতে আমিসহ বাকি কৃষকদেরও লোকসানের ভয় থাকে না।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘আগে অল্প পরিসরে হলেও বর্তমানে এই গ্রামের পুরোটা জুড়েই করলার চাষ হচ্ছে। চাষ বৃদ্ধির পাশাপাশি দিন দিন উৎপাদনও বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলতি বছর শ্রীমঙ্গল উপজেলায় প্রায় ২০ হেক্টর জমিতে করলার চাষ হয়েছে। আমাদের কর্মকর্তারা নিয়মিত কৃষকদের পরামর্শ ও সহযোগিতা করে আসছেন। এ বছর করলা চাষে কোনো সমস্যা হয়নি, রোগ-বালাইও আক্রমণ করেনি।’

সেতু ইসরাত
উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here