ফেস্টিভ্যাল চলবে ২৮ নভেম্বর ২০২০ পর্যন্ত
এবারের শ্লোগান ‘আমার পণ্য আমার দেশ, ডিজিটাল বাংলাদেশ’।
বাংলাদেশের গৌরবময় ঐতিহ্য ও কৃষ্টির অংশ ঐতিহ্যবাহী তাঁতপণ্যের প্রস্তুতকারক ও শীর্ষস্থানীয় ডিজাইনারদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন, বিলুপ্তি রোধকরণ এবং সর্বোপরি দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে এস.এম.ই ফাউন্ডেশন এবং এসোসিয়েশন অব ফ্যাশন ডিজাইনার্স বাংলাদেশ (এএফডিবি) টানা তৃতীয়বারের মত আয়োজন করেছে হেরিটেজ হ্যান্ডলুম ফেস্টিভ্যাল। এই ফেস্টিভ্যাল আয়োজনের প্রধান উদ্দেশ্যসমূহ হলো বাংলার গৌরবময় ঐতিহ্য ও কৃষ্টির অংশ হিসাবে দৈনন্দিন জীবনে ঐতিহ্যবাহী তাঁত পণ্যের ব্যবহার প্রদর্শন করা।
ঐতিহ্যবাহী তাঁত পণ্যের প্রচার, প্রসার এবং বাজারজাতকরণের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। তাঁত পণ্য প্রস্তুতকারক এবং শীর্ষস্থানীয় ডিজাইনারদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা। স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে স্থানীয় তাঁত পণ্য প্রস্তুতকারকদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা এবং
বাংলার ঐতিহ্যবাহী পণ্যের বিলুপ্তি রোধ করা।
তবে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি বিবেচনায় এবার হেরিটেজ হ্যান্ডলুম ফেস্টিভ্যাল ২০২০ আয়োজন করা হয়েছে অনলাইনে। ২৯ অক্টোবর ২০২০ দুপুর ১২টায় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ‘জুম’ এ সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এমপি। বিশেষ অতিথি সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি, বস্ত্র ও পাট সচিব লোকমান হোসেন মিয়া এবং এস.এম.ই ফাউন্ডেশনের পরিচালক এনায়েত হোসেন চৌধুরী। এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. মোঃ মাসুদুর রহমান। বক্তব্য রাখেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ সফিকুল ইসলাম এবং এসোসিয়েশন অব ফ্যাশন ডিজাইনার্স অব বাংলাদেশ (এএফডিবি) এর সভাপতি মানতাশা আহমেদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এমপি বলেন, বাংলাদেশে দেশী পোশাকের বাজার সৃষ্টি হয়েছে। উদ্যোক্তাদের তা কাজে লাগাতে হবে। মানসম্মত পণ্য তৈরি করতে হবে উদ্যোক্তাদের এবং সেসব পণ্য পৌঁছে দিতে হবে ক্রেতাদের কাছে। এস.এম.ই ফাউন্ডেশন জেলায় জেলায় আঞ্চলিক এসএমই পণ্য মেলা করছে। একই ভাবে উপজেলা, ইউনিয়ন,এবং গ্রামে, গ্রামে মেলার আয়োজন করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি বলেন, ঐতিহ্যবাহী এসব পণ্য রক্ষায় দেশের বাজারই যথেষ্ট। মেলার বিস্তুৃতি ঘটানো হলেই উদ্যোক্তারা তাঁদের পণ্যের বাজার খুঁজে পাবেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বস্ত্র ও পাট সচিব লোকমান হোসেন মিয়া বলেন, তাঁতপণ্য বাংলাদেশের ইতিহাস ঐতিহ্যের সাথে জড়িত। তাঁতশিল্পীদের সংগঠিত করার কাজ করছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। তাঁতীদের সুবিধাথের্, তাদের পণ্যের উন্নয়নে নরসিংদীতে সিপিসি সেন্টার এই মাসেই চালু হবে। মাত্র ৪ ভাগ সুদে আর্থিক সহায়তা দেয়া হচ্ছে তাঁতীদের।
সভাপতির বক্তব্যে এস.এম.ই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. মোঃ মাসুদুর রহমান বলেন, গত ১১ বছরে সরকারের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। অনলাইনে এই আয়োজন প্রমাণ করে, সমগ্র দেশকে এক সুতোয় গাঁথায় সম্ভব হয়েছে সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ কার্যক্রমের মাধ্যমে। হেরিটেজ হ্যান্ডলুম ফেস্টিভ্যাল ২০২০ আয়োজনের মাধ্যমে দেশীয় পণ্যের উদ্যোক্তাদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করা সম্ভব। এক মাস দেশী পণ্যের ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে সংযুক্তি তৈরি করা হবে।
২৮ অক্টোবর ২০২০ বিকাল ৫টায় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ‘জুম’ এ ফেস্টিভ্যালের উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি এবং শিল্প সচিব কে এম আলী আজম। সভাপতিত্ব করেন এস.এম.ই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. মোঃ মাসুদুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ সফিকুল ইসলাম এবং ফেস্টিভ্যালের নানা দিক তুলে ধরেন অ্যাসোসিয়েশন অব ফ্যাশন ডিজাইনার্স বাংলাদেশ (এএফডিবি) সভাপতি মানতাশা আহমেদ।
মেলার অনলাইন পেজ-এ বয়নশিল্প প্রদর্শন, লাইভ ফ্যাশন শো’র পাশাপাশি ৭০টিরও বেশি অনলাইন স্টলে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের জন্য প্রদর্শন করা হবে শাড়ী-লুঙ্গি-গামছা, খাদি, নকশিকাঁথা, বেনারসি শাড়ী, টাঙ্গাইল শাড়ী, জামদানি শাড়ী, মনিপুরী কাপড়, রাঙ্গামাটির চাকমাসহ অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কাপড় ও হস্তশিল্পসহ ১৪ ক্যাটগরির পণ্য। যেমন: পাটজাত পণ্য বাঁশ ও বেতজাত পণ্য। থাকবে খাতভিত্তিক পণ্যের ইতিহাস নিয়ে তথ্যচিত্র, পণ্য সম্পর্কে ক্রেতাদের ধারণা প্রদান, অনলাইন সেমিনারসহ নানা আয়োজন। ফেস্টিভ্যালে অংশগ্রহণ করবেন বিভিন্ন অ্যাসোসিয়েশন, ডিজাইনার, শিল্পী, তাঁতীসহ ঐতিহ্যবাহী পণ্যের উদ্যোক্তাগণ। ফেস্টিভ্যালে লোকজ শিল্পীদের সঙ্গীত পরিবেশনা, ফ্যাশন শো, দেশী পোশাক বিষয়ে কুইজ ও ফটো কনটেস্ট, সেমিনার, ক্রেতা-বিক্রেতা ম্যাচ মেকিং ইভেন্টের আয়োজন থাকবে।
৩০ অক্টোবর ২০২০ বিকাল ৫টায় অনলাইনে আয়োজন করা হবে‘Technology for preserving heritage: skills enhancement and E-Commerce for cottage industry’ বিষয়ে সেমিনার। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে থাকবেন যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম। আগামী ২৮ নভেম্বর ২০২০ পর্যন্ত প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টা দর্শনার্থীদের খোলা থাকবে ফেস্টিভ্যালের অনলাইন পেজ https://www.facebook.com/heritagehandloombangladesh। হেরিটেজ হ্যান্ডলুম ফেস্টিভ্যাল ২০১৮ এবং ২০১৯ এর হাইলাইটস-https://www.facebook.com/heritagehandloombangladesh/videos/352364932684871
ডেস্ক রিপোর্ট উদ্যোক্তা বার্তা