ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের ২০০ কোটি টাকা ঋণ দেবে এসএমই ফাউন্ডেশন

0

করোনাভাইরাসের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের ২০০ কোটি টাকা ঋণ দেবে এসএমই ফাউন্ডেশন।

ঋণের সুদের হার হবে মাত্র ৪ শতাংশ। একজন উদ্যোক্তা সর্বনিম্ন ১ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবেন। এ লক্ষ্যে ১৮টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি সই করেছে এসএমই ফাউন্ডেশন।

আজ বৃহস্পতিবার আগারগাঁও পর্যটন ভবন মিলনায়তনে এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. মো. মাসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান । বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার , তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা।

ফাউন্ডেশনের মহাব্যবস্থাপক ফারজানা খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমান।

স্বাগত বক্তব্যে এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমান বলেন, গত অর্থবছরে একমাত্র শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতায় থাকা এসএমই ফাউন্ডেশন ও বিসিক সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ শতভাগ বিতরণ করে সক্ষমতা প্রমাণ করেছে। এজন্য তিনি বিভিন্ন ব্যাংক ও নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। সেই ধারাবাহিকতায় চলতি অর্থবছরের ২০০ কোটি টাকা ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বিতরণ শেষ করা সম্ভব হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

এক্ষেত্রে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত, প্রত্যন্ত অঞ্চলের উদ্যোক্তা ও নারী-উদ্যোক্তাদের অগ্রাধিকার দিতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের প্রতি আহবান জানান তিনি।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি বলেন, এই প্রণোদনা প্যাকেজ সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হলে কোভিড-১৯ এর ক্ষতি কাটিয়ে এসএমই খাত শক্তিশালী হবে।

তিনি বলেন, প্রথম দফার ১০০ কোটি টাকা সঠিকভাবে বিতরণ করে এসএমই ফাউন্ডেশন প্রমাণ করেছে যে, তার সক্ষমতা আছে। সুতরাং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উন্নয়নে এ প্রতিষ্ঠানকে আরো বেশি অর্থ বরাদ্দ দেয়াসহ অধিক পরিসরে দায়িত্ব প্রদান করা প্রয়োজন।

তাছাড়া দেশের এসএমই খাতের উন্নয়নে এসএমই ফাউন্ডেশনের র্আথকি সক্ষমতা বাড়ানো ও আঞ্চলিক কার্যালয় স্থাপন করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, প্রণোদনা প্যাকেজ সুষ্ঠুভাবে বিতরণ হলে সরকারের নির্বাচনী লক্ষ্য অনুযায়ী নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি হবে ও কর্মসংস্থান বাড়বে।

সত্যিকার অর্থে এসএমই খাতের উন্নয়ন করতে হলে এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য আলাদা এসএমই পল্লী ও তাদের পণ্যের জন্য বিক্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, কোভিড-১৯ প্রেক্ষাপটে দেশের লক্ষ লক্ষ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তার ক্ষতি কাটিয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং অর্থনীতি সচল করতেই সিএমএসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রবর্তক সজিব ওয়াজেদ জয়-এর নেতৃত্বে আইসিটি খাতে যে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে, তার সুবিধা গ্রামীণ উদ্যোক্তাদের মাঝেও ছড়িয়ে দিতে হবে। নতুন উদ্যোক্তা উন্নয়নে এসএমই ফাউন্ডেশন ও আইসিটি বিভাগ একসাথে কাজ করতে পাওে মর্মে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

তিনি আরও বলেন, “বঙ্গবন্ধু বিকেন্দ্রীকরণে বিশ্বাস করতেন। তিনি বলেছিলেন গ্রামকে উন্নয়নের আওতায় আনলে এগিয়ে যাবে দেশ। আর তাই প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য এভাবে দেশের অংশীদার ব্যাংক ও সকল আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এগিয়ে আসা হলেই স্বপ্নের সোনার বাংলার স্বপ্ন পুরোপুরি বাস্তবায়িত হবে।”

শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা বলেন, সঠিক উদ্যোক্তারা যেন প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ পায়, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের তা নিশ্চিত করা দরকার। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে এসএমই ফাউন্ডেশনের সহায়তা নেয়া যেতে পারে।

এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. মোঃ মাসুদুর রহমান বলেন, দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি এসএমই খাতকে এগিয়ে নিতে না পারলে সরকারের লক্ষ্য অনুযায়ী ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গঠন কঠিন হবে। এজন্য এসএমই ফাউন্ডেশনের সক্ষমতা বিশেষ করে আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি। ড. মাসুদ ২০০ কোটি টাকা বিতরণে ব্যাংক ও অব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে প্রকৃত উদ্যোক্তাদের মধ্যে প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ বিতরণের জন্য অনুরোধ করেন।

ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো হলো, ব্র্যাংক ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, বেসিক ব্যাংক, দ্যা সিটি ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, আইপিডিসি ফাইন্যান্স, আইডিএলসি ফাইন্যান্স এবং লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্স।

সাদিয়া সূচনা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here