উদ্যোক্তা- সাদিয়া আফরিন ও আরিফা আক্তার

আমি অন্তঃপুরের মেয়ে,
চিনবে না আমাকে…
তোমার শেষ গল্পের বইটি পড়েছি, শরৎবাবু, ‘বাসি ফুলের’। আজ উদ্যোক্তা বার্তায় পাঠকের জন্য আমরা কুশিকাটার গল্পে শোনাবো অন্তঃপুরের সাদিয়া ও আরিফার কথা। সাদিয়া ও আরিফা দুজনেই বর্তমানে রাজশাহী নার্সিং কলেজ এ বিএসসি নার্সিং এর চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী।

আজকে এই পর্যায়ে আসার জন্য উদ্যোক্তা সাদিয়ার ক্ষেত্রে তার পরিবার এর ভাল প্রভাব ফেলেছে। বিশেষ করে সাদিয়ার বড় বোন একজন সফল উদ্যোক্তা। সে যেমন সাদিয়া এবং আরিফা কে সাহজ যুগিয়েছে, তেমনি অনেক সহযোগিতাও করেছে। অপরদিকে আরিফার ক্ষেত্রে ভাল প্রভাব ফেলেছেন তাঁর বাবা। মেয়ের পাশে থেকে সব কাজে সাপোর্ট দিয়েছেন তিনি।

উদ্যোক্তা সাদিয়া বলেন- “আমরা দুজন একে অপরের পরিপূরক। শুরু থেকে সকল বিষয় আমরা একে অপরের সাথে শেয়ার করি। একজন আরেকজনকে মোটিভেশন করি, সকল কাজে উৎসাহ দেই। আমরা অনেক ভালো বন্ধু। অনেক আগে থেকেই ইচ্ছা ছিল কিছু একটা করবো, তাই অল্প সল্প পরিকল্পনা করছিলাম একসাথে একটি বিজনেস করবো। নিজেদের পরিচয় তৈরি করতে পারি, স্বাবলম্বী হতে পারি। আমরা যেন আমাদের দায়িত্ব নিতে পারি।

দুই উদ্যোক্তার ব্যবসা শুরুর দিকে পুঁজি বলতে কিছুই ছিলনা। সাদিয়া এবং আরিফা দুইজনের নেশা কুশিকাটা। কুশিকাটার নেশার বসেই তাঁরা অল্প কিছু উল এবং সুতা কিনে ইউটিউব দেখে বুনানো শেখা শুরু করে। আর তা দিয়েই সাদিয়া -আরিফার উদ্যোগ শুরু হয়। যেহেতু পুঁজি নাই তাই সাদিয়া -আরিফা প্রি-অর্ডার বেইজড কাজ নেয়া শুরু করে। শুরুতে ভাল সুতা চেনা, পেজের রিচ বাড়ানো, কাস্টমার হান্ডেল করা এইসব নিয়ে কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন, তবে সাদিয়া -আরিফার মূল শক্তি হলো একসঙ্গে কাজ করা। সাদিয়া -আরিফা বিশ্বাস করেন তাঁরা দুই বন্ধু যদি একসঙ্গে থাকে, তাহলে যেকোন যুদ্ধ জয় করতে পারবে। তাদের দুজনের এই বিশ্বাস থেকে তারা অর্জন করেন একজন আরেকজন প্রতি তাদের কাজের প্রতি ভরসা, বিশ্বাস, শক্তি, সাহস। এই বিশ্বাসের জায়গা থেকে জন্ম নেয় সাদিয়া -আরিফার প্রতিষ্ঠান “bunnie boo“।

উদ্যোক্তা সাদিয়া বলেন – “তাদের bunnie boo প্রতিষ্ঠানে কুশিকাটার তৈরী বাচ্চাদের জামার গলা, হাতা, টুপি, জুতা, ব্যাগ, নামাজের টুপি, ফিডার কভার, কুশন কভার, টেবিল ম্যাট, ইয়োক, হেয়ার ব্যান্ড, কারটেইন, টাই ইত্যাদি তৈরী করা হয়।

উদ্যোক্তা আরিফা বলেন – “আমরা চেষ্টা করি কুশিকাটার তৈরী গতানুগতিক ধারার পণ্যগুলোর পাশাপাশি ভিন্ন আঙ্গিকের নতুন কিছু পণ্য তৈরি করার। আমাদের সিগনেচার পণ্য কারটেইন, টাই, রিথ, পার্স, ব্যাগ ইত্যাদি। আমরা প্রি-অর্ডার বেইজড কাজ করি, আর আমরা কখনোই পণ্যের কোয়ালিটিতে কম্প্রোমাইজ করিনা।”

সাদিয়া -আরিফার দুইজনের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই আজকের এই উদ্যোগ, তাঁরা দুজন সবসময় আলাপ আলোচনা করে প্রতিটা বিষয় সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন, কেউ কখনোই কারোর উপর নিজের মত চাপিয়ে দেন না, উদ্যোক্তারা ব্যবসার সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে একটা বিষয় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন, তা হলো লাভ কম হোক, কিন্তু তাঁরা যেন সেরা পণ্যটি দিয়ে কাস্টমারের সেরা সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারেন।

উদ্যোক্তা সাদিয়া -আরিফা দুজনেই বলেন – “পণ্যের কোয়ালিটি ও ইউনিকনেস ঠিক রেখে bunnie boo-কে দেশ সেরা কুশিকাটার ব্র‍্যান্ড হিসাবে পরিণত করতে চাই। শুধু দেশেই নয় পুরো বিশ্বেই পৌঁছে দিতে চাই আমাদের এই পণ্যটিকে।

উদ্যোক্তারা ভবিষ্যতে কুশিকাটার কাজের উপর এবং গ্রাহকের প্রশিক্ষণের জন্য ইউটিউব চ্যানেল খোলার ইচ্ছা পোষণ করেন।

ডেস্ক রিপোর্ট, উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here