কুমিল্লার ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে খাদি কাপড় নিয়ে উদ্যোক্তা মুক্তা

0
উদ্যোক্তা মুক্তা আক্তার

কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী খাদি শিল্প বিলুপ্ত প্রায়। চাহিদা অনুযায়ী যোগান দিতে পারে না তাঁতিরা অনেকে আবার কাজও বন্ধ করে দিয়েছে।

খাদির এই দুর্দিনে কুমিল্লার ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে খাদি কাপড় নিয়ে কাজ করছেন উদ্যোক্তা মুক্তা।

যার মধ্যে রয়েছে খাদি গজ কাপড়, শাড়ি, পাঞ্জাবী, থ্রি পিস, শাল বা চাদর, ইত্যাদি ছাড়াও খাদির যাবতীয় তৈরী পোষাক।

টিউশনের জমানো ৫ হাজার টাকা আর প্রায় আড়াই হাজার টাকার প্রোডাক্ট দিয়ে উদ্যোগ শুরু করেন মুক্তা। তার ৫/৭ জন কর্মী আছে যারা কাপড় বোনে আর তিনি সরাসরি তাঁতিদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে থাকেন তার কাপড়গুলো।

ফেসবুকে উদ্যোক্তা মুক্তা আক্তারের পেইজের নাম ‘খাদিরাণী’। দেশের বাইরে আমেরিকায় গিয়েছে তার খাদি কাপড়ের পাঞ্জাবী এবং শাড়ি। কুমিল্লা থেকে সারা দেশে তার প্রোডাক্ট কুরিয়ারের মাধ্যমে পাঠিয়ে থাকেন। প্রতিমাসে লাখ টাকার পণ্য বিক্রি করেন তিনি। এছাড়া ঈদ বা বিভিন্ন উৎসবের সময় মাসে ৪ লাখ টাকাও সেল হয়।

মুক্তা আক্তার উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন, ‘খাদি নিয়ে কাজ করার জন্য আমি কুমিল্লায় যেখানে খাদি কাপড় উৎপাদন হয় সেখানে প্রায় অনেকগুলো তাঁতির সাথে কথা বলি, ওনাদের কারখানায় যাই। কিন্তু গিয়ে আমি খুব হতাশ হয়ে পড়ি। তাঁতিদের কাজ নেই। অনেকে বলছে যে, আপনারা কাজ দিলে করতে পারি। এখন আমাদের কুমিল্লার যারা খাদি ব্যবসা করেন সবাই অনেক খুশি কারণ কুমিল্লা থেকে কমপক্ষে ৫০ জন উদ্যোক্তা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে খাদি নিয়ে কাজ করছেন। ফলে আমাদের কুমিল্লার খাদি তাঁতিরা খাদি শিল্পকে আবার জাগিয়ে তুলতে অনেক এগিয়ে এসেছেন।

মুক্তা আক্তরের বরাবরই ইচ্ছে ছিলো নিজে কিছু করবেন। চেয়েছিলেন আত্মনির্ভরশীল হতে। কিন্তু করোনাকালে টিউশনগুলো যখন বন্ধ হয়ে যায় তখনই ব্যবসা নিয়ে সত্যিকার অর্থে চিন্তা ভাবনা করে কাজ শুরু করেন।

তিনি বললেন, উই প্ল্যাটফর্মের জন্য এই সব কিছু সম্ভব হয়েছে। উই পরোক্ষ ভাবে গ্রাম পর্যায়ের তাঁতিদের জন্য অনেক উদ্যোক্তা তৈরী করে তাদের দুঃখ লাঘব করেছে’।

উদ্যোক্তা মুক্তা ভবিষ্যতে খাদিতে বিভিন্ন ধরণের ফিউশন আনতে চান এছাড়া তার প্রডাক্ট লাইনে শাড়ি, পাঞ্জাবী, থ্রি পিস, কুর্তিসহ আরো অনেকগুলো আইটেম যোগ করতে চান। তাঁতিদের কাজের কোয়ালেটি ধরে রাখার দিকে গুরুত্ব দেবেন এবং পাশাপাশি নিজের জন্য, নিজের উদ্যোগের জন্য আরো অনেক কিছু জানতে ও শিখতে চান।

মুক্তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা সদরের বিবির বাজার গাজীপুর। সাত ভাইবোনের মধ্যে চতুর্থ তিনি। বিবির বাজার থেকে প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক শেষ করে বর্তমানে কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজের বোটানি ডিপার্টমেন্টে অর্নাস তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

সাইদ হাফিজ,
উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here