“২০১৮” পুরোটাই কাটিয়ে দিলাম পড়াশোনা করতে করতেই। সামনের বছরে সেটার কি কি প্রতিফলন ঘটাতে পারবো এখনও জানি না।
টিভিতে কুকিং প্রোগ্রামের সাজ, শাড়ি আর রেসিপি তৈরি করার মাঝে আমার যে উৎসাহ থাকে তার এক ভাগও ছিলোনা পড়াশোনার এইসব কাজে। শুধুমাত্র জানা ও শেখার নেশায় করেছি সবই।
আমি দিল আফরোজ সাইদা। কাজ করছি কালিনারী আর্টিস্ট হিসাবে নিয়মিত এটিএন বাংলা ও বিটিভিতে। অনিয়মিতভাবে করছি অন্যান্য চ্যানেলে। গেস্ট শেফ ও ট্রেইনার হিসাবে কাজ করছি বিভিন্ন রিয়েলিটি শো, ইভেন্ট, ওভেন ও মাইক্রোওয়েভ কুকিং ওয়ার্কশপ নিয়ে। একজন বেকিং এসেসর হিসাবে আছি বাংলাদেশ টেকনিক্যাল এডুকেশন বোর্ডে। রান্না শেখাই নিজের বাসারই আলাদা একটা ফ্লোরে।
“Sayda’s Kitchen” নামে আমার নিজের একটা ওয়েব সাইট ও ফেইসবুক পেইজ আছে। রান্না শেখানোর উদেশ্যে সেখানে আমার নিজের ফুড ফটোগ্রাফি ও রেসিপি নিয়মিত আপলোড করা হয়, বিভিন্ন ক্যাটাগরির অ্যালবামে। যারা একেবারেই রান্না জানেন না, বা করতে চান না তাদের জন্যও রয়েছে প্রতিদিনের সহজ রান্না নিয়ে চারটা অ্যালবাম।
আমার ওয়েবসাইট ও পেইজ ছাড়াও নিয়মিত রেসিপি লিখে যাচ্ছি ডেইলি নিউজ পেপার যুগান্তর, ডেইলি অবজারভার ও বিভিন্ন ফুড ম্যাগাজিনে । বিভাগীয় বিচারক হিসেবে ছিলাম “Dan Cake Dessert Genius Competition” এ। এছাড়া পেয়েছি “গুণীজন সম্মাননা” রন্ধন শিল্পী হিসাবে বাংলাদেশ কৃষ্টি ও সংস্কৃতি ফোরাম থেকে।
রান্না ভাল লাগে ছোটবেলা থেকেই। অনেক ইচ্ছে বদলে গেলেও এটা বদলায়নি এখনও। সে আগ্রহের কারনেই হোম ইকোনমিক্স থেকে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পূর্ণ করি। নিয়মিত পড়াশোনার বাইরে আমি প্রথম রান্না শিখেছি NHTTI থেকে প্রায় ১৫ বছর আগে।
তবে যেকোনো শখকেই বাণিজ্যিকভাবে রূপ দিতে প্রয়োজন অনেক জানা ও শেখা। তাই আমি পরবর্তীতে ডিপ্লোমা করেছি কালিনারি আর্টে। করেছি ফুড হাইজিন কোর্স। একে একে NTVQF এর সবগুলি লেভেল করেছি BTEB এর অধীনে।এছাড়াও কেক ডেকোরেশন, জিলাটো, ফনডেন্ট ও গামপেস্ট ফ্লাওয়ার মেকিংয়ে নিয়েছি প্রশিক্ষণ USA থেকে। আরও নতুন কিছু শেখার জন্য। বুঝতেই পারছেন পুরো মাথায় এখন কি কি ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুরো বছরটাই কেটেছে টান টান উত্তেজনা আর চাপে, শুধুমাত্র পড়াশোনার কারণে।
সবচেয়ে বেশি ভাল লাগে আমার ডেজার্ট ও কেক করতে। এই কেক আমি বালুতে, পানিতে, মাইক্রোওয়েভে, ইলেকট্রিক ওভেনে, রাইস মেকারে বিভিন্নভাবে তৈরি করেছি। আমার বিশেষভাবে ভালোলাগে ক্রিয়েটিভ থিম কেক। যা কখনও দোকান থেকে কিনে আনা সম্ভব না। রান্নাটা শুধু মজা হলেই চলবেনা। ঠিকমত হাইজিন মেনে সেটা করা হচ্ছে কিনা, সঠিক তাপমাত্রায় খাবারটা রাখছি কিনা, কোন খাবারের সাথে কোন খাবার পরিবেশন করা যায়, আর পরিমান ঠিক রেখে, সুন্দরভাবে পরিবেশন করা হচ্ছে কিনা, তার দিকেও খেয়াল রাখা উচিত।
নিজে শেখার নেশা কিছুটা কমিয়ে অন্যদেরকে শেখানোর নেশাটা বাড়াতে চাই। আমার রান্না শেখার জায়গাটাকে অনেক বড় ও সুন্দর একটা কুকিং স্টুডিওতে রুপ দিতে চাই এবং আরও সহজ ও সুন্দর সুন্দর রেসিপি নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হতে চাই। “Happy New Year”
দিল আফরোজ সাইদা