আরও একটি ফুড স্টার্টআপের সাফল্যের কাহিনি আপনাদের শোনাবো। সম্প্রতি ভেঞ্চার ক্যাটালিস্টের কাছ থেকে ৫ কোটি টাকার ফান্ডিং তুলে নিলো কলকাতার সংস্থা চায়ে ব্রেক (Chai Break)। ২০১১ সালে মাত্র ৫০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে প্রথম পথ চলা শুরু করেন উদ্যোক্তা অনিরুদ্ধ পোদ্দার এবং আদিত্য লাডসারিয়া।
ছোটবেলায় সেন্ট জেমসে পড়তেন দু’জনেই। পরে সেন্ট জেভিয়ার্সে বি.কম। একদিন আড্ডার ছলেই দু’জনে মিলে ঠিক করেন খাবারের ব্যবসা করবেন। পরিচ্ছন্ন পরিবেশে পরিচ্ছন্ন চা বিক্রি করার আইডিয়া নিয়ে শুরু হল উদ্যোগ।
চা মানে তো আর শুধু চা নয়, টাও থাকে। ফলে বাড়তে থাকল মেনু। ইটালিয়ান, চাইনিজ আর সম্পূর্ণ দেশি খাবারের দারুণ প্যালেট। পাশাপাশি বাহারি চা। গ্রিন টি, লেমন টি, রিফ্ৰেশিং মিন্ট টি আর আছে আদা দিয়ে তেজ পাতা দিয়ে কিংবা কেশর দিয়ে মশলাদার চা। আপনি এখানেই এর সেরাটা পাবেন।
ভার্জিন মোজিতো পাবেন। থাকবে ব্রাউনি ব্রেক এবং জিভে জল আনা আর স্নায়ুকে আহ্লাদী করে তোলা চকলেট।
পাবেন কলকাতার পুরানো বিলাসিতা নতুন মোড়কে, মশলা হুকাহ, পান স্পেশাল হুকাহ শীতল জলে ভেজা সুবাসিত ধোঁয়া সেবনের অভিজ্ঞতাও পাবেন চায়ে ব্রেক-এ।
এই উদ্যোগ শুরু হয় ছোট্ট একটা কিয়স্ক দিয়ে। আর এখন এগারোটা আউটলেট কলকাতা, দুর্গাপুর এবং ভুবনেশ্বরে। শতিনেক কর্মী কাজ করেন চায়ে ব্রেক-এ। মাসে দেড় কোটি টাকার টার্নওভার।
পঞ্চাশ হাজার টাকায় যে ব্যবসা শুরু হয়েছিল সেই ব্যবসার এখনকার ভ্যালুয়েশন ৫০ কোটি টাকা। মাত্র ১০ শতাংশ অংশীদারিত্বের বিনিময়ে ৫ কোটি টাকা তুলে নিয়েছেন অনিরুদ্ধ এবং আদিত্য।
এই বিনিয়োগের ফলে দুই বছরের মধ্যে পূর্বাঞ্চলে আরও ২০টি আউটলেট খুলবেন এই উদ্যোক্তারা । ছোট আর মাঝারি শহরগুলো রয়েছে টার্গেটে। ইম্ফল, গুয়াহাটি, শিলংয়ের মত উত্তর পূর্ব ভারতে ছড়িয়ে পরতে চান উদ্যোক্তারা।
তারপর গোটা ভারতে পৌঁছাবেন। বেঙ্গালুরু, চেন্নাই, মুম্বাই, দিল্লি, এবং ছোট ও মাঝারি শহরগুলোতে। নতুন শহরের ক্ষেত্রে চায়ে ব্রেক শুধু মাত্র ফোকো মডেলেই ব্যবসা বাড়াতে উৎসাহী। ভারতের বাজারে দাঁত ফোটানোর পর বিদেশের বাজারেও চায়ে ব্রেককে পৌঁছে দিতে চান উদ্যোক্তা আদিত্য এবং অনিরুদ্ধ। তবে সেটা এখুনি নয়।
উদ্যোক্তা অনিরুদ্ধ বলছিলেন, ‘এতদিন বুটস্ট্র্যাপিংয়ের পর সবে তো অ্যাঞ্জেল রাউন্ডের ফান্ডিং পেলেন ওরা। এবার সংস্থার বৃদ্ধির সময়’।
এমন একটা সময় আসবে তুমুল কাজের মাঝে চায়ে ব্রেকের কথা ভাবলে ওদের কথাই মনে পড়বে কর্ম ব্যস্ত মানুষের। আর সেটাই হবে ওদের সত্যিকারের তৃপ্তির সময়।
(তথ্যসূত্র ও ছবি ইন্টারনেট থেকে)