তরী শুধু বাইতেই জানে না, বইতেও জানে। তরতর করে সমাজের, পরিবারের মাঝ দিয়ে বয়ে যায়। বলছিলাম, টাঙ্গাইল জেলার তানিয়া ইসলাম তরীর কথা।
গ্রামের আলো বাতাসে বেড়ে উঠেছেন তিনি। কুসংস্কার ও সামাজিক নানা প্রতিকূলতা পার করতে হয়েছে। শিক্ষাজীবন শেষ না হতেই বসতে হয়েছে বিয়ের পিঁড়িতে। দায়িত্ব অনেক। পরিবার সামলানো, লেখাপড়া করা। পরিবারের স্বাচ্ছন্দ্য আনার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা।
মহামারির কারণে অন্য সবার মতো তারও আর্থিক সংকট দেখা দেয়। কিন্তু দমে গেলে কি চলবে? টাঙ্গাইল তো বিখ্যাত এলাকা। এই এলাকার মানুষ অনেক পরিশ্রমী। তাদের ঘামঝরা শরীরে তৈরি হয় বিভিন্ন ধরনের শাড়ি, লুঙ্গী, থ্রিপিস সহ বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী সব পরিধেয় বস্ত্র।
দেশের বৃহৎ একটি অংশ টাঙ্গাইলের উৎপাদিত পণ্যের ওপর আস্থাশীল। যেহেতু তিনি করোটিয়ার মেয়ে তাই দমে যাননি। করোটিয়ায় বিশাল কাপড়ের বাজার রয়েছে। আমারে ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্প। দেশীয় পণ্যের সমাহার। সেই পণ্য নিয়েই কাজ শুরু করেন তিনি।
জানতে চাইলে তানিয়া ইসলাম তরী উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন, টাঙ্গাইলের করটিয়া সাদাত কলেজ ‘সমাজকর্ম’ বিভাগ থেকে অর্নাস কমপ্লিট করে সংসারের চাহিদা মেটাতে নাবিকের মতো হাল ধরি। মাত্র ২ হাজার টাকা দিয়ে শুরু করা পথে বিভিন্ন কারখানায় গিয়ে তাঁতের তৈরি কাপড় সংগ্রহ করতে থাকি। আর ফেসবুকের মাধ্যমে প্রচার প্রচারণা করি।
তিনি বলেন, এরই মধ্যে যুক্ত হলেন নারী উদ্যোক্তা সংগঠনের সঙ্গে। এখানে বর্তমানে ৩৫ হাজার সদস্য রয়েছেন। সংগঠনের মাধ্যমেও পণ্য পৌঁছে দিচ্ছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
যেসব বাহারি পণ্য নিয়ে কাজ করছেন, জানতে চাইলে তরী বলেন,
কোঠা খেশ শাড়ি, গোলাপ বুটি জামদানি, গ্যাস শাড়ি, সফট হাফ সিল্ক জামদানি শাড়ি, বেলপাতা জামদানি শাড়ি সহ নানা ধরনের আকর্ষণীয় শাড়ি, থ্রি পিস।
তরী চান, ব্যবসায় প্রয়োজন সততা আর পরিশ্রম। এই দুটোই তিনি করে যাচ্ছেন নিষ্ঠার সঙ্গে। তার পথ চলায় পাশে পেয়েছেন যার সঙ্গে তিনি গাঁটছড়া বেঁধেছেন । তার সহযোগিতায় নিজেকে একজন উদ্যোক্তা হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড় করিয়েছেন।
তরী মনে করেন প্রতিটি মেয়েকেই এভাবে কাজ করা উচিত। তাহলে দেশ আরও সমৃদ্ধ হবে। চীন এখন বিশ্বে চোখ রাঙাচ্ছে এর প্রধান কারণ তারা নারী পুরুষ প্রচুর পরিশ্রম করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। বাংলাদেশও একদিন বিশ্বে মাথা উঁচু করে দেখিয়ে দিবে।
ইমরান পরশ
উদ্যোক্তা বার্তা, ঢাকা