বর্তমান সরকার এসএমই খাতের উন্নয়নকে শিল্পায়নের চালিকা শক্তি হিসেবে গ্রহণ করেছে জানিয়ে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেছেন, এসএমই খাখে শ্রমঘন এবং উৎপাদন সময় স্বল্প হওয়ায় জাতীয় আয় বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে দ্রুত অবদান রাখতে সক্ষম তাই উদ্যোক্তারা যাতে ব্যাংক ঋণ পেতে হয়রানির স্বীকার না হয় সে বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে।
বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে শিল্প মন্ত্রণালয়, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রিজম প্রকল্প এবং বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভলপমেন্ট বিল্ডের যৌথ আয়োজনে “এসএমই নীতি ২০১৯“ শীর্ষক দিনব্যাপী একটি কর্মশালার প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।
শিল্প প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের শিল্প কাঠামোতে এসএমই খাতের অবদান বাড়ছে। আর তাই ৯ সেপ্টেম্বর জাতীয় শিল্পনীতির আওতায় এসএমই নীতিমালা ২০১৯’র খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, নতুন এসএমই নীতিমালায় মূলত ৬টি বিষয়কে সামনে রাখা হয়েছে। অনেকগুলো নতুন বিষয় এই নীতিমালার আওতায় আনা হয়েছে। যেমন এসএমই খাতে ঋণ প্রবাহ বৃদ্ধি করা, অর্থায়নের ব্যবস্থা করা, এসএমই ক্রেডিট গ্যারান্টি ফান্ড চালু করা এবং এটি চালু হলে মর্টগেজের ব্যবস্থা থাকবে না বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।
এছাড়া, সহজ শর্তে ও অল্প সুদে ঋণ প্রদান, নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান (স্টার্টআপ) করার ক্ষেত্রে সহায়তা ও অনলাইনে ডিজিটাল প্রক্রিয়া চালুর মাধ্যমে স্টার্টআপ প্রক্রিয়া সহজ করার প্রস্তাব রয়েছে। তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে ই কমার্স, অনলাইন সাপোর্ট, আউট সোর্সিং এবং আইটি ভিত্তিক অ্যাপলিকেশেনের মাধ্যমে সহায়তা দেওয়ার একটি ফোকাস এই নীতিমালায় আছে যা এসএমই উদ্যোক্তাদেও জন্য সহায়ক হবে।
শিল্প প্রতিমন্ত্রী জানান, এই নীতিমালায় নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ৬ ধরনের বিশেষ সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তা হল, নারী উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, সহজ শর্তে ঋণ , তহবিল গঠন, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, উদ্বুদ্ধকরণ এবং কাজের জন্য বাজার সংযোগের সুযোগ বৃদ্ধি করা।
এছাড়া, এসএমই তথ্য ভান্ডার প্রতিষ্ঠা করা হবে। এই নীতিমালার আলোকে উদ্যোক্তারা সহায়তা পেলে তা অর্থনৈতিক উন্নয়নে নতুন মাত্রা যোগ করবে এবং অতি ক্ষুদ্র ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা উপকৃত হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এসময় শিল্প প্রতিমন্ত্রী ব্যাংকের কর্মকর্তাদের প্রতি বলেন, ঋণ পেতে উদ্যোক্তারা যাতে হয়রানির স্বীকার না সে দিকে লক্ষ্য রাখা জরুরী। তাই শুধু নীতিমালা করেই পরিস্থিতির বদলাবে না, সব সহযোগী সংস্থার সমন্বয়ের মাধ্যমে তা বাস্তবায়ন করতে হবে।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ আবদুল হালিম বলেন, ২০২৪ সালের মধ্যে জিডিপিতে এসএমইর অবদান ৩২ শতাংশ করতে হবে। যা বড় চ্যালেঞ্জ। তবে অসম্ভব নয়।
অনুষ্ঠানে বিসিকের চেয়ারম্যান মোশতাক হাসান জানান, ২০ হাজার একর জমিতে পঞ্চাশের বেশী শিল্প পার্ক স্থাপন করবে বিসিক। একইসাথে ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু করাসহ শিল্প প্লট বরাদ্দ এবং সহজ শর্ত ও সহনীয় সুদে ঋণ প্রদানও করা হবে।
কর্মশালায় আরো উপস্থিত ছিলেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সালাহউদ্দিন মাহমুদ, এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিকুল ইসলাম, প্রিজম প্রকল্পের টিম লিডার আলী সাবেত এবং বিল্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস আরা বেগম।
ডেস্ক রিপোর্ট, উদ্যোক্তা বার্তা