উদ্যোক্তা- ডনাই প্রু নেলী

৭০০ স্কয়ার ফিটের একটি জায়গা, কিন্তু স্বপ্ন যে ৭০ হাজার স্কয়ার ফিটেরও বেশি। যেখানে কর্মসংস্থান হবে কর্মহীন কিংবা যাদের কর্মসংস্থান প্রয়োজন এমন শতশত নারীর। আদিবাসীদের খাবার ভীষণ স্বাদের এবং বৈচিত্রময়। এই বৈচিত্রময় খাবারের প্রথম রেস্টুরেন্ট বান্দরবানে ‘মিইমা’ প্রতিষ্ঠা করলেন উদ্যোক্তা ডনাই প্রু নেলী।

উদ্যোক্তার রেস্টুরেন্ট মিইমা

জেনিফার, লাখরোই, রুবী হয়রানির স্বীকার এমন মেয়েদের নিয়েই স্বপ্ন দেখা উদ্যোক্তার কাজ যেন এক মানবতার প্রত্যয়। তাদের রান্না শেখানোর প্রশিক্ষণ দিলেন নিজেই। ছোট বেলা থেকেই উদ্যোক্তা ডনাই প্রু নেলীর রান্নার যে শখ ছিল, সেই শখে যে মজাদার রান্না করা শিখেছিলেন তা শিখিয়ে দিলেন কর্মীদের। মজাদার রান্না, স্বাস্থ্যসম্মত এবং নান্দনিক ভাবে পরিবেশন, যারা রেস্টুরেন্ট এ খেতে ভালবাসেন তারা আসতে শুরু করলেন খাবার খেতে।

উদ্যোক্তার রেস্টুরেন্ট- মিইমা তে খাবার প্রিয় মানুষের ভীড়

পার্বত্য জেলা চট্টগ্রামের ১১ টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বসবাসের স্থান বান্দরবান। সেই সাথে আছে বাঙ্গালীর বসবাস। সম্পৃতির বান্দরবানে ভীষণ সাদরে সবাই গ্রহন করলেন আদিবাসীদের খাবারের স্বাদের নান্দনিক উপস্থাপন। উদ্যোক্তার পথ চলা পরিচিত হলো জনে জনে। পর্যটক যারা আসেন স্বাস্থ্যসম্মতভাবে রান্না করা আদিবাসীদের খাবার খেতে, তারাই আসেন ‘মিইমা’ তে।

রেস্টুরেন্ট চালানো শুরু করতেই বাড়তে থাকে উদ্যোক্তার নেটওয়ার্ক। উদ্যোক্তা মানবাধিকার ট্রেনিং দেন অনেককেই। তার কাছ থেকে ট্রেনিং নেয়া নীলোকা ২০১৪ সালে স্ব-উদ্যোগে বুটিক হাউস লেডিস হাউস এন্ড কর্নার প্রতিষ্ঠিত করলেন। এমনই প্রায় ১০০’র কাছাকাছি নারীকে  উদ্যোক্তা হওয়া, আত্মকর্মসংস্থানে বলিয়ান হওয়ার পাশাপাশি অনুপ্রাণিত করেছেন, ট্রেনিং দিয়েছেন ডনাই প্রু নেলী।

নীলোকার বুটিক হাউস

একা একা নয়, নয় শুধুমাত্র নিজেই ভালো থাকা। সমাজের পিছিয়ে পড়া নারীদের ট্রেনিং দিয়ে, অনুপ্রাণিত করে, মোটিভেশন দিয়ে, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে নার্স তৈরি করেছেন, তৈরি করেছেন বিউটি পার্লারে কর্মী, নার্সারীতে চাকরি দিয়েছেন, এমনকি দুরবর্তী অঞ্চলে ফ্লেক্সিলোড করা শেখানোর মত কাজ করেও আত্মকর্মে বলিয়ান করেছেন এবং উদ্যোক্তা হবার জন্য, কর্মী হবার জন্য কর্মপথ সৃষ্টি করেছেন উদ্যোক্তা ডনাই প্রু নেলী।

সরকারী, বেসরকারী নানান অফিস এবং সংগঠন থেকে আসে খাবারের অর্ডার। ব্যাংক, এনজিও তাদের  নিয়মিত খাবারের অর্ডার দেন আজ মিইমা’তে। বিভিন্ন পারিবারিক আনন্দ আয়োজনে আজ খাবারের অর্ডার আসে এবং মানসম্মত খাবার পরিবেশন করে মিইমা।

হোম ডেলিভারীর খাবার প্যাকেট প্রস্তুত করণ

বেড়েছে ব্যাবসার পরিধি। ৭০০ স্কয়ার ফিট আজ বেড়ে দাড়িয়েছে ১২০০ স্কয়ার ফিটে। নিয়মিত কর্মী ৭ জন।আত্মপ্রত্যয়ী এক উদ্যোক্তা মানুষের অধিকার নিয়ে কাজ করতে নেমে আজ একজন সফল নারী উদ্যোক্তা হয়ে পরিচালনা করছেন ৫০ লক্ষ টাকা মূল্যমানের ব্যবসা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here