বিদেশ থেকে প্রায় ৮০ লাখ টাকা হাতছাড়া করার পর দেশে ফিরে মানসিক ভাবে মুর্ছে পড়ে রিপু নামের এক তরুণ।দেশে ফিরে মিথ্যে অপবাদ আর কিছু করতে না পাড়ার বোঝা নিয়ে একতারাটা বানাতে থাকে রিপু।
একতারাটা বানিয়ে যুবক রিপু আশার দ্বার বাঁধেন। মায়ের জমানো ২ হাজার টাকা এবং ধার করে এনে ৩ হাজারটাকা মোট পাঁচ হাজার টাকা এনে দিয়ে মা বলেছিলেন, ঠিক আছে চিন্তা করিস না, টাকা গেছে আবার হবে।
৫ হাজার টাকা দিয়ে নারকেলের ৪টা একতারা তৈরি হলো। প্লাস্টিকের জগ এবং সেকেন্ড হ্যান্ড দু একটা যন্ত্রপাতি কিনলেন রিপু। একতারাগুলো ২৫০ টাকা করে ১ হাজার ৫০০ টাকা বিক্রি হলো। ভাঙ্গারিদের একটি পুরনো জার্মানির তৈরি হারমনিয়াম হঠাৎ করেই তাকে এনে দিলো ৪ হাজার ৫০০ টাকা। ৩০ টিনারকেল দিয়ে বানানো একতারা ২৫০ টাকা করে বিক্রি হলো ৭ হাজার ৫০০ টাকা। বীণা ও বাঁশির ৪০ পিসের অর্ডারমুখে হাসি এনে দেয়।
সব মিলিয়ে এক উদ্যোগের চাকা যেনো ভালোভাবেই ঘূর্নন শুরু হলো। রিপুর মনে চোখে সম্ভাবনা এবং নিজ হাতেসৃষ্টি করা বাদ্যযন্ত্র দেখবার যে সুখ তা যেন করলো কয়েক লক্ষগুণ। রিপু এমন কিছু সুদৃশ্য একতারা বানালেন যা বাংলাদেশের সব জায়গায় সচারচর দেখা যায় না। ম্যাজিক ইন রিয়্যালিটি। প্রতিটির দাম ১ হাজার ৬০০ টাকা। সফলতার পথে বড় চালান হাসে, সফলতা কথা বলে। ৫০ হাজারটাকা এলো হাতে। মায়ের হাতে মায়ের ধার করা টাকা ছেলে ফেরত দিয়ে জয়ের হাসি হাসলো।
মায়ের দোয়া সৃষ্টিশীলতা বাড়িয়ে দেয় রিপুর একটি একটি করে নতুন ডিজাইনে। রিপুর কাছে একটা একটা শিল্প হয়েধরা দেয়। বর্তমানে রিপুর ১২ আইটেমের একতারা, বীণা, ৪ আইটেমের বাঁশি, ৫ আইটেমের ডোমুর, ২ আইটেমের কৃষ্ণকাঠী, ৩ আইটেমের মন্দলাসহ সব মিলিয়েপ্রায় ৩০ ক্যাটেগরির প্রোডাক্ট লাইন।
রিপু চন্দ্র মন্ডল উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন, ৫ হাজার টাকা, উদ্যোম আর মনোবল নিয়ে পণ করে আজ প্রায় ৪ জনকর্মী বন্ধুকে সাথে নিয়ে একতারা বানাচ্ছি। ১৮ জন রেগুলার কাস্টমার নিয়ে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলছি। নদীর ধারধরে হেঁটে যাওয়া বাউলের হাতে একতারাও বানাচ্ছি আবার আলিশান ড্রইংরুমের শো-পিস সব একতারা মূহুর্তেবানিয়ে চলেছি।
ভবিষ্যতের ভাবনা জানতে চাইলে রিপু চন্দ্র মন্ডল বলেন, আমি স্বপ্ন দেখি একটা ইন্ডাস্ট্রির। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে একদম নিজের যেখান থেকে বিশ্বের ৩০ কোটি বাংলা ভাষাভাষী মানুষের একতারা প্রয়োজন হলেই বানাবো।
ডেস্ক রিপোর্ট, উদ্যোক্তা বার্তা