উদ্যোক্তা- শামীমা আকতার

ফ্যাশন ডিজাইন এমন একটি শিল্প যার সাহায্যে একজন ডিজাইনার তার সৃজনশীলতার জানান দেয়। হাতের নিপুণ ছোঁয়ায় একটি পোশাক হয় আকর্ষণীয়।

ঢাকার সম্ভ্রান্ত পরিবারের মেয়ে শামীমা আকতার। বিয়ে হয় একজন পুলিশ অফিসারের সাথে। স্বামী চাকুরীর কাজে বেশী সময় বাহিরেই থাকতেন। একা একা বাসায় বিরক্ত থেকে সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি একজন ফ্যাশন ডিজাইনার হবেন। আধুনিক পোশাক পরিধানে অন্য রকম ভাল লাগা কাজ করতো শামীমার। ফ্যাশন ডিজাইনার এবং উদ্যোক্তা হবার তারনা থেকে তিনি ঢাকা মহিলা অধিদপ্তর থেকে ফ্যাশন ডিজাইনের কোর্স করেন। এরই মাঝে রাঙ্গামাটিতে বদলী হয় তার স্বামী। সেখানে গিয়ে শামীমা কয়েকমাস পুলিশ পরিবার কল্যান সমিতিতে প্রশিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। তারপর আবার রাজশাহীতে বদলী এবং সেখানেই শুরু হয় শামীমার নতুন অধ্যায়।

উদ্যোক্তার ডিজাইনকৃত পণ্যে সেলাইয়ের কাজ করছেন কর্মীরা

২০০০ সালে যুব উন্নয়ন এবং টিটিসি থেকে বেশ কয়েকটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেন তিনি। এলাকার গরীব দুস্থ নারীদের নিয়ে শুরু হয় শামীমার পথ চলা। একটি সেলাই মেশিন, দুই হাজার টাকা আর তার স্বপ্ন নিয়ে যাত্রা। আধুনিক সব পোশাক যেমন থ্রি-পিস, টু-পিস, শার্ট, লং শার্ট ইত্যাদি তৈরি করলেন এবং রাজশাহীর নিউমার্কেট, সাহেব বাজারে হোল সেল দেয়া শুরু করেন। আশাতীত অর্ডার পেতে শুরু করলেন তার ডিজাইন করা পোশাকের। ১০ বছর এভাবেই অতিবাহিত হয়। বেড়েছে ব্যবসার পরিধি তাই এবার ঘরে না একটি শো রুম প্রয়োজন।

কর্মীকে কাজ বুঝিয়ে দিচ্ছেন উদ্যোক্তা শামীমা আকতার

রাজশাহীর সুফিয়ানের মোড়ে একটি দোকান নিলেন নাম দিলেন প্রমি ফ্যাশন। ভয়ে ভয়ে শুরুটা হয়েছিল, তিনি কি পারবেন! কিন্ত তার চমৎকার ডিজাইন ক্রেতাদের মন কেড়ে নেয় খুব তাড়াতাড়ি। ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেন সে এলাকায়। আশেপাশের নারীদের তিনি কাজ শিখিয়ে এবং কাজ দিয়ে সাবলম্বী করে তুলতে শুরু করেন। আত্মপ্রত্যয়ী শামীমা প্রমি ফ্যাশনকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছাতে রাজশাহীর প্রাণ কেন্দ্র সাহেব বাজারে আরও একটি শো-রুম নিলেন। তার মেধা, পরিশ্রম, সততা তাকে এগিয়ে নিয়েছে, এখন স্বপ্নকে ছুঁতে পারেন শামীমা। তাই মেয়েকেও পড়াচ্ছেন ফ্যাশন ডিজাইনের উপর।

উদ্যোক্তার ডিজাইনকৃত তৈরি পণ্য

উদ্যোক্তা শামীমা ইউবি প্রেসকে জানান, “আমি এবং আমার মেয়ে মিলে এই প্রতিষ্ঠানকে একটি ব্র‍্যান্ডে পরিণত করতে চাই”।

উদ্যোক্তা শামীমা আকতার শুধু নিজের অবস্থানের পরিবর্তন করেই ক্ষান্ত নন, প্রতিনিয়ত স্বপ্ন দেখেন অসহায় নারীদের পাশে দাঁড়ানোর এবং স্বাবলম্বী করার তাই তিনি নারী কর্মীদের নিয়েই তার প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করে যাচ্ছেন।

 

 

রাইদুল ইসলাম শুভ
উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here