একজন উদ্যোক্তাই হতে চেয়েছিলেন জান্নাত মীম

0
উদ্যোক্তা জান্নাত মীম

জান্নাত মীম যখন একটু বুঝতে শিখলেন তখন থেকেই তিনি তার মা-কে যেকোন মুহূর্ত‍ কামেরাবন্দি করে রাখতে দেখতেন । তখন ডি এস এল ক্যামেরা ছিল না, রিল ক্যামেরাই ব্যবহার করতেন তিনি। মায়ের ক্যামেরায় ছবি তুলতে তুলতে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী জান্নাত মীম এখন একজন ব্রাইডাল ফটোগ্রাফার ও ইভেন্ট উদ্যোক্তা।

‘আম্মুকে দেখে দেখে ছোটবেলা থেকে আমারও ক্যামেরার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হয়। সেই আগ্রহ থেকে এইচএসসি’র পর ফটোগ্রাফিতে নিজেকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে বিভিন্ন ওয়ার্কশপ করি, সেই সাথে ছবি তোলার উপর পড়াশোনা করি। তবে তখন যে আমি ফটোগ্রাফার হবো সেই চিন্তা করিনি। চেয়েছি গতানুগতিকভাবে শুধু ক্যামেরা ধরে ক্লিক করার বাইরে দক্ষ হয়ে ক্যামেরা ব্যবহার করে কিভাবে সুন্দর ছবি তোলা যায়, সেটাই রপ্ত করতে। এজন্য আমি পরে আরো দুটা কোর্স করি।  এর মাঝেই আমার কাজের প্রশংসা আসা শুরু হয়,’ জানিয়ে মীম বলেন: সেই সাথে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে কাজের জন্য ডাক আসে। এভাবে দুই বছর পার হয়ে যায় অন্যদের কাজ করতে করতে।

ওই দুই বছর ঘরে-বাইরে কিভাবে কাজ করতে হয়, ক্লায়েন্ট কিভাবে ডিল করতে হয়, এসব বিষয় তিনি শিখে ফেলেন। ‘এরপর আমার মনে হয় আমি কেন অন্যদের অধীনস্ত হয়ে কাজ করবো!  আমি নিজেই তো এই কাজ নিজের মতো করে করতে পারি। সময় টা ২০১৪ সাল… সেই থেকেই আমি উদ্যোক্তা হওয়ার পথে এগোতে শুরু করি।’

উদ্যোক্তা বার্তাকে জান্নাত মীম বলেন: আমার পুঁজি বলতে ছিল একটা প্রফেশনাল ক্যামেরা এবং আমার পারিবারিক সাপোর্ট। আমার পরিবার যখন দেখলো এই কাজটি সম্মানের এবং সেই সাথে আমার হাত খরচ, আমার ছোট ছোট শখ আমি নিজেই পূরন করি, তখন তারা আমাকে বাধা আর দেননি । পরে অবশ্য ক্যামেরার বাইরে সবকিছু গুছিয়ে নিতে আরো কিছু জিনিসের জন্য আনুমানিক ৪ লাখের মতো খরচ হয় ।

জান্নাত মীমের অনলাইন পেজের নাম Bridal Ambience. ব্রাইডাল শুট ছাড়াও তিনি ফ্যাশন ফটোগ্রাফি, ফুড ফটোগ্রাফি, প্রোডাক্ট ফটোগ্রাফি করে থাকেন । সিজন, আবহাওয়া, ক্লায়েন্টের বাজেট, ইত্যাদি বুঝে মাসে তার কখনও ত্রিশটিরও বেশি কাজ আসে ।

তিনি বলেন, ‘আমি একজন নারী ফটোগ্রাফার। সেজন্য নারীরা আমার কাছে ছবি তুলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। সে ক্ষেত্রে মাসে অন্তত ৮ থেকে ১৪টা ইভেন্ট আমার নিজেরই করতে হয়। বাকিগুলোর জন্য আমার পুরুষ টিম রয়েছে। ফটোগ্রাফার, সিনেমাটোগ্রাফার, এডিটর– ছেলেমেয়ে মিলিয়ে আমরা এখন ১৪ জন মেম্বার।’

তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন: কাজ করে যেতে হবে, এর বিকল্প নেই। ক্রিয়েটিভ কাজে আগ্রহ থাকলে শুরুতে ইনকাম নিয়ে ভাববেন না। আপনার সৃজনশীলতা থাকলে আপনাকে কাজ খুঁজতে হবে না, কাজ আপনাকে খুঁজে নিবে। তবে, কম টাকায় কাজ করে মার্কেট মন্দ করা যাবে না, ভালো কাজ দিয়ে নিজের কাজের অবস্থান বুঝতে পারা খুবই জরুরি।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে এই উদ্যোক্তা জানান, ‘আমি আসলে কোনদিন চাকরি করতে চাইনি, সবসময় ভেবেছি আমি একজন উদ্যোক্তাই হবো। ফটোগ্রাফি পেশাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে যাই।

আফসানা অভি
উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here