রান্না বিষয়ে দক্ষতা, টেইলরিং, ফ্যাশন ডিজাইন, পার্লারের কাজ জানা থাকায় অনেকটা শখের বসেই ১৯৯০ সালে খুলনায় একটি ফ্লোর ভাড়া নিয়ে মাত্র ১২ জন ছাত্রী এবং ১২ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে ট্রেনিং সেন্টার গৃহ সুখন’র যাত্রা শুরু করেন উদ্যোক্তা রিমা জুলফিকার।
মূলত উদ্যোক্তা তৈরির উদ্দেশ্যে স্বল্প পরিসরেই তিনি যাত্রা শুরু করেছিলেন। সাড়া মিললো ব্যাপক। তার প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে অসংখ্য শিক্ষার্থী দেশে এবং দেশের বাইরের বিভিন্ন নামিদামি প্রতিষ্ঠানে চাকরীর পাশাপাশি নিজেরাই উদ্যোক্তা হয়ে সৃষ্টি করেছেন কর্মসংস্থান।
নারীরা যাতে কাজ জেনে দক্ষতার সাথে কাজ করতে পারে সে উদ্দেশ্যে তিনি রান্না, বেকারী, পেস্ট্রি, সেলাই, কাটিং, ফ্যাশন ডিজাইন, পার্লারের কাজ ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতেন। সেখানে প্রশিক্ষণরত নারীদের শেখার কিংবা নিজে কিছু করার আগ্রহ বিমোহিত করতো উদ্যোক্তাকে। অনুপ্রাণিত হতেন তিনি।
উদ্যোক্তা বার্তাকে রিমা জুলফিকার বলেন, “গ্রাম থেকে অনেক অদক্ষ নারীরা ঢাকায় এসে নাম মাত্র টাকায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরী করে। আমরা সারাদেশ থেকে এমন অদক্ষ ৩০০০ নারীকে বিনামুল্যে প্রশিক্ষণ দিয়ে চাকরীর সুযোগ করে দিয়েছি। যারা বর্তমানে ভালো বেতনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দক্ষতার সাথে কাজ করছে। এছাড়াও দেশ এবং দেশের বাইরে প্রায় ৭৩ হাজার প্রশিক্ষণার্থীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছি যারা অত্যন্ত দক্ষতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে।”
বাধাবিপত্তির কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, নির্দিষ্ট জায়গায় নিজের প্রতিষ্ঠান স্থাপন করতে না পারা সহ বিভিন্ন কারণে আমাকে অনেক ঝামেলাও পোহাতে হয়েছে। কিন্তু উদ্যোক্তা হতে গেলে বাধা আসবে, এটাই স্বাভাবিক। এসব বাধা অতিক্রম করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। পাশাপাশি পরিবারের সহযোগীতা পেলে এগিয়ে যাওয়াটা অনেক সহজ হয়ে যায়।”
তিনি তার তৈরী পণ্য নিয়ে দেশ এবং দেশের বাইরে বিভিন্ন মেলায় অংশগ্রহণ করেছেন, যেখানে তিনি দেশকে তুলে ধরেছেন বিশ্ব দরবারে।
সর্বশেষ তিনি তার কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ গতকাল গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে অনুদান পেয়েছেন।
অনুদান বিষয়ে নিজের উচ্ছাসের কথা জানাতে গিয়ে তিনি উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন, উদ্যোক্তাদের জন্য সরকারের এরূপ পদক্ষেপ তাকে তার কাজের প্রতি আরো বেশি উৎসাহিত করবে, এছাড়াও ভূমিকা রাখবে নতুন উদ্যোক্তা তৈরীতে। যাতে স্বাবলম্বী হবে মানুষ, সমৃদ্ধ হবে দেশের অর্থনীতি।
সামির হোসেন