ইচ্ছা আর ধৈর্য্যই বৈশাখী’র সফলতার মূল পুঁজি

0
উদ্যোক্তা- বৈশাখী সান্যাল

২০১৫ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ইউটিউবের সুবাদে বিভিন্ন শিক্ষণীয় ভিডিও দেখার সুযোগ এলো এক তরুণীর। সেগুলো দেখে হাতে তৈরি গহনা, পোশাকে রংতুলির কাজসহ বেশ কিছু কাজে পারদর্শী হয়ে উঠলেন তিনি। ওই বছরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পাতায় একটি পেজ চালু করলেন মায়ের নামে। বলছি রাজশাহী নগরীর শ্যামল কুমার সান্যাল এবং স্বর্গীয় তপতী সান্যালের কন্যা বৈশাখী সান্যালের সাফল্যের গল্প।

উদ্যোক্তা বার্তাকে বৈশাখী সান্যাল জানান, ‘বাবার চাকরির সুবাদে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে থাকতে হয়েছে পরিবারকে। তবে আমার জন্মের পর খুব অল্প সময় বাইরে কাটালেও পরে রাজশাহী নগরীতে চলে আসি এবং এখানেই স্থায়ী বসবাস শুরু করি। ছোটবেলা থেকেই গান খুব ভালবাসতাম। সেই সাথে ইচ্ছে ছিল ফ্যাশন ডিজাইনার হবো। তবে গান শেখা হলেও পরিবারের ইচ্ছা না থাকায় ফ্যাশন ডিজাইন কোর্সটি করা সম্ভব হয়নি। আমি পিএন গার্লস হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিকের পর নিউ গভঃমেন্ট ডিগ্রি কলেজ থেকে স্নাতক শেষ করি। করোনা মহামারির কারণে এখনো স্নাতকোত্তর চলমান রয়েছে।

উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করার পর যুব উন্নয়নে ব্লক বাটিকের ৬ মাস মেয়াদি কোর্স করি। হাতে স্মার্টফোন থাকার সুবাদে আমি ফেসবুক-ইউটিউবে গহনা তৈরি, পোশাকের বিভিন্ন ডিজাইন দেখতে শুরু করি এবং আশপাশে খেয়াল করি অনেকেই অনলাইনে পেজ চালু করে উদ্যোগ গ্রহণ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। আমিও তাদের দেখে অনুপ্রাণিত হই এবং আমার মায়ের নামের প্রথম অক্ষরটি দিয়ে টি-আবরণ নামে একটি পেজ চালু করি। সেখানে হাতে তৈরি তারের যে গহনাগুলো হয় সেগুলো তৈরি করতাম। হাত খরচের মাত্র দুইশ’ টাকাই ছিলো আমার মূলধন’।

বৈশাখী আরো জানান, ‘কিছু দিন সুন্দরভাবে পরিচালনার পর কিছু প্রতিবন্ধকতায় পড়ে বন্ধ রাখি টি-আবরণের সকল কর্মকাণ্ড। তবে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসী ছিলাম আবারো শুরু করব। এই ভাবনা থেকে কাজ বন্ধ থাকলেও ইউটিউবে বিভিন্ন গহনা তৈরি, হ্যান্ডপেইন্টের কাজ দেখতে থাকি। কাজের অভিজ্ঞতা বাড়িয়ে ২০১৯ আবারো যাত্রা শুরু করি। পেজের নাম পরিবর্তন করে রাখি ‘তপতী -আবরণ’। শুরুতে হাতে তৈরি গহনা তৈরি করলেও বর্তমানে হ্যান্ডপেইন্টের শাড়ি, পাঞ্জাবি, ওয়ান পিস, টু পিস, থ্রিপিস, ব্লকের পোশাক, কাপড়ের গহনা, বিভিন্ন ধরনের ক্যানভাস পেইন্টিং করে থাকি’।

দেশের প্রতিটি জেলায় পৌঁছে যাচ্ছে ‘তপতী – আবরণ’র পণ্য। শুরু থেকেই তিনি নিজ হাতে সবটা দক্ষভাবে পরিচালনা করছেন। হাত খরচের দুইশ’ টাকা এখন লক্ষ টাকা ছুঁয়েছে। নিজের এই উদ্যোগ একসময় দেশের শীর্ষ ব্রান্ড হবে, হাজার-হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এই স্বপ্ন নিয়ে সামনে এগোচ্ছেন উদ্যোক্তা বৈশাখী সান্যাল।

তরুণ উদ্যোক্তা বৈশাখী সান্যাল তরুণদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘দৃঢ় ইচ্ছা এবং ধৈর্য থাকলে সব বাধাকেই জয় করা সম্ভব। আপনারা যারা মূলধনকে উদ্যোগ শুরুর প্রধান হাতিয়ার ভেবে বসে আছেন তারা ইচ্ছা এবং ধৈর্যকে পুঁজি করে যাত্রা শুরু করুন, সাফল্য আসবেই’।

তামান্না ইমাম
রাজশাহী ডেস্ক, উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here