হস্তশিল্প প্রতিষ্ঠান ভূমির ‘সুমাইয়া প্রোডাক্ট’র স্বত্ত্বাধিকারী উদ্যোক্তা মোঃ আশরাফুলজামান ফাহাদ বলেছেন, সারাবিশ্বেই পাটজাত পণ্যের চাহিদা ও ব্যবহার বাড়ছে। ফলে পাটজাত পণ্য উৎপাদনে উদ্যোক্তা সৃষ্টি হচ্ছে। বাজার সৃষ্টি হওয়ায় উদ্যোক্তাদের মধ্যে এ নিয়ে আগ্রহও বাড়ছে।
গল্পের শুরুতে উদ্যোক্তা আশরাফুলজামান ফাহাদ জানান তিনি একজন প্রধান শিক্ষকের সন্তান। গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার দুই মাড়ামুড়ায়। কিশোর জীবন থেকে বেড়ে উঠেছেন রাজধানী রামপুরায়। প্রধান শিক্ষকের সন্তান হলেও পড়ালেখা করেছেন মাদ্রাসায় দাখিল-আলিম বিষয় নিয়ে।
উদ্যোক্তা হওয়ার যাত্রার বিষয়ে মোঃ আশরাফুলজামান ফাহাদ জানান, ২০২০ সালে তার চিন্তাভাবনা আসে কিভাবে কম খরচে এবং পরিত্যক্ত জিনিস দিয়ে সৌন্দর্যপূর্ণ কারুকার্যপূর্ণ তৈজসপত্র তৈরি করা যায়? এর পর আশপাশের মানুষের পরামর্শ নিয়ে কাজ শুরু করলেন পাট নিয়ে। তিনি প্রথমে ওয়াইনের বোতলের ওপর পাট এবং রং করে শুরু করেছিলেন। এর পর নিকটতম আত্মীয়-স্বজনকে দেখালে সকলেই তা পছন্দ করে এবং উদ্যোক্তাকে অনেক উৎসাহ দেয় কাজটি চালিয়ে যাওয়ার জন্য। সেই থেকে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
বর্তমানে আশরাফুজ্জামান যে কোনো জিনিসের ওপর পাটের রূপান্তরিত করতে পারেন। তিনি পাটের রিক্সা, ওয়ালম্যাট কর্নার, ঝুড়ি, পাটের হাত ব্যাগ, ওয়াইনের বোতলের ওপর বিভিন্ন রকমের হস্তশিল্পের ডিজাইন এবং ফুলের টপ ও শোপিস ইত্যাদি করে থাকেন।
উদ্যোক্তা জানান, আপাতত ৮ জন কর্মী আছে তার। যারা বাসায় বসে কাজ করছেন। অনলাইনে কোন পেজ নেই। কিন্তু সুইজারল্যান্ড থেকে কিছু অর্ডার পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
আশরাফুজ্জামান ফাহাদ জানান, লেখাপড়ায় মাদ্রাসার ছাত্র ছিলেন। বর্তমানে চাকরির পাশাপাশি একজন উদ্যোক্তা। এই উদ্যোক্তা হওয়ার পেছনে অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে। অল্প কিছু টাকা নিয়ে পথচলা শুরু করেছিলেন। তার পরে প্রতিটি ঘাটে ঘাটে বাধা-বিপত্তি এসেছিলো। তিনি এখনো ব্যবসায় সফলতার জন্য এগিয়ে যাচ্ছেন।
নিজের ইচ্ছে প্রসঙ্গে উদ্যোক্তা বলেন, চাকরি করবেন না, চাকরির স্থল তৈরি করবেন তিনি। সেজন্য মাত্র ৫০ টাকা নিয়ে কাজ শুরু করেন। সবার ভালবাসা-উৎসাহে এই প্রতিষ্ঠানটি আজ এতটুকু পর্যন্ত এসেছে। কর্ম এবং ইচ্ছাশক্তি দিয়ে দেশ-বিদেশে পণ্যের প্রসার ছড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনা নিয়ে সামনের দিকে চলছেন তিনি।
মেহনাজ খান
উদ্যোক্তা বার্তা, ঢাকা