সোনিয়া সোবহান ১৯৮৮ সালে রংপুর শহরের ধাপ এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মৃত আ. খ. ম. সোবহান পেশায় ছিলেন প্রকৌশলী এবং মাতা মৃত মকসুদা বেগম ছিলেন একজন গৃহিণী। তিনি পিতা মাতার একমাত্র সন্তান। শিক্ষাগত জীবনে রংপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল থেকে এইচএসসি এবং ঢাকার স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে আইন বিভাগে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। কর্মজীবনের শুরুতে তিনি ঢাকার ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ (ইউওডিএ) এর আইন বিষয়ে লেকচারার ছিলেন। পরে একটি বে-সরকারি রেডিও সেন্টার এবিসি তে কাজ শুরু করেন।
পরবর্তীতে মায়ের শারীরিক অসুস্থতার কারণে রংপুর আসেন এবং সেখানেই মাত্র ৪০০০ টাকা নিয়ে ২০১৫ সালে হস্তশিল্পের কাজ শুরু করেন। প্রথমে তিনি কাপড়ে পুতির কাজ করতেন অর্থাৎ বুটিক্স এর কাজ করতেন। ড্রেসের পাশাপাশি কুশন কভার, মশারী কাভার, ব্যাগ, বাশের তৈরি বিভিন্ন জিনিসপত্র, পাট ও পাটজাত পণ্য, প্লাস্টিকের বোতল থেকে তৈরি করেন নানান পণ্য। প্রথমে নিজে একা শুরু করলেও রংপুর, সৈয়দপুর, নীলফামারী ৩ জেলা মিলিয়ে এখন সোনিয়ার উদ্যোগ। প্রতিষ্ঠানের নাম দিয়েছেন “সপ্তধা পল্লি”।
২০০ জন নারী কর্মীর কর্মসংস্থান করে প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা মূল্যমানের ব্যবসা পরিচালনা করছেন। রংপুরের ধাপ ও নীলফামারীর ডিমলায় রয়েছে তার দুটি আউটলেট। তার তৈরি নানা পণ্য দেশের বাইরেও পাঠানো হয়। ভবিষ্যতে প্রতিষ্ঠানটি আরও বড় করতে চান এবং একটি নার্সারি করার ইচ্ছা আছে। নিজের প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি রংপুর ওয়েলফেয়ার সেন্টারে সিনিয়র টিচার হিসেবে আছেন সোনিয়া। নারীদের কেউ যেন ছোট করে না দেখে, তাদের উন্নয়নের জন্যই তার এই কাজ করা। স্বপ্ন দেখেন তার প্রতিষ্ঠানে শুধু নারীরা কাজ করবে। অনেক নারীদের কর্ম-সংস্থান তৈরি হবে, তারা নিজেরাই নিজেদের স্বাবলম্বী করবে।
২০১৯ সালে তিনি জেলা ফেস টু নারী উদ্যোক্তা এওয়ার্ড পান। নারীদের নিয়ে একটা স্লোগান আছে সোনিয়ার- “আমরাই পারি চাওয়া পাওয়ার সব ব্যবধান ঘোচাতে”। ২০১৭ সালে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও ব্যবসায়িক জিন্নাত হোসেন লাভলুর সাথে বিয়ে হয়। প্রথমে মা এবং পরে স্বামী উৎসাহ ও সাহায্য নিয়ে এগিয়েছেন। অনেক পরিশ্রম করেছেন, চেষ্টা করেছেন এবং কাজের সঙ্গে লেগে ছিলেন বলেই আজ তিনি এই অবস্থানে আসতে পেরেছেন বলে মনে করেন তিনি।
সোনিয়া বলেন সব কাজের জন্যই পড়াশোনাটা খুব দরকার। একাডেমিক পড়া শেষ করেছেন, তবুও প্রতিদিন নিজের কাজের উপর পড়াশোনা করেন। প্রত্যেক মানুষেরই তার কাজের উপর পড়াশোনা করা দরকার তবেই সফলতা আসবে।
ডেস্ক রিপোর্ট, উদ্যোক্তা বার্তা