উদ্যোক্তা - তারিকা সুলতানা

তারিকা সুলতানা চেয়েছিলেন চাকরি করবেন, বিসিএস’র প্রস্তুতিও নিয়েছিলেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ইন্টারভিউ দিয়েও যখন চাকরি হচ্ছিল না তখন কিছুটা বিরক্ত হয়েই ২০১৬ সালের মে মাসে মাত্র ষোলো’শ টাকা পুঁজি নিয়ে ড্রিমার্স শপ নামে অনলাইনে হ্যান্ডিক্রাফটের একটি ব্যবসা শুরু করেন।

স্বামী প্রকৌশলী আর উদ্যোক্তা নিজেও বেগম বদরুন্নেসা সরকারী মহিলা কলেজ থেকে ইকোনমিক্স-এ স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন। বিসিএস’র পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরির ইন্টারভিউ, সব মিলিয়ে নিজের বিরক্তি যখন বাড়তে লাগলো তখনই হঠাৎ করে অনলাইনে ব্যবসা করার পরিকল্পনা করলেন।

প্রথমে ষোলো’শ টাকার দুই-তিনটা ড্রেস কিনে ছবি তুলে ফেসবুক পেইজে পোস্ট করেন এবং সাড়াও পান। পরে পণ্যের পরিমাণ বাড়ান এবং বিক্রয়ও বাড়ে কিন্তু মনের মতো হচ্ছিল না। তাই  শুরু করলেন বাটিকের ব্যবসা। বাটিকের ব্যবসায় প্রচুর পরিমাণে সাড়া পান সেই থেকে বাটিকের থ্রি-পিস, কুর্তী, শাড়ী, বেডশীট, পর্দা ইত্যাদি পণ্য দিয়ে ব্যবসা সম্প্রসারিত করেন।

তারিকা সুলতানা উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন, ক্রেতারা এক পর্যায়ে জিজ্ঞেস করতো পাইকারী বিক্রি করি কি না? আমিও একদিন বলেই দিলাম জ্বি, পাইকারী দেই। যে দামে পণ্য কিনি  তার থেকে ৩০ থেকে ৫০ টাকা লাভ রেখে পাইকারী বিক্রি শুরু করি।

ড্রিমার্স শপের পণ্যের সর্বোচ্চ দাম দেড় হাজার থেকে দুই হাজার টাকা এবং সর্বনিম্ন দাম পাঁচ’শ টাকা।উদ্যোক্তা জানালেন, তার স্বপ্ন একটি  মিনি গার্মেন্টস দেওয়া এবং খুব শীঘ্রই তিনি সেটা দিবেন।

বর্তমানে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের ইস্টার্ন মল্লিকায় একটি শো-রুম আছে। তিনি বর্তমানে রাজশাহী, বগুড়া, চট্টগ্রাম ও সিলেটে এইসব পণ্য পাইকারী দিচ্ছেন।

তারিকা সুলতানা বলেন, দিনে প্রায় তিন’শ পণ্য পাইকারী বিক্রি হয় । আবার কখোনো দিনে পাঁচ’শ পণ্যের বেশিও বিক্রি হয়।

তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, কাজ শুরু করলে লেগে থাকতে হবে। হাল ছেড়ে দিলে চলবে না। মনের জোর বজায় রেখে কাজ করলে স্বপ্ন সত্যি হবে।

উদ্যোক্তার ব্যবসার সব কাজ নরসিংদীতেই হয় এবং নরসিংদী থেকেই ব্যবসা শুরু করেন। নিজ উদ্যোগে ফেসবুক পেইজ খুলে অল্প কিছু টাকা দিয়ে ব্যবসা সবাই দাঁড় করাতে পারে না। এর জন্য দরকার মনোবল, সাহস এবং শক্তি। যা ছিল উদ্যোক্তা তারিকা সুলতানার মধ্যে।

নিজের মেধা, দক্ষতা, অধ্যবসায়কে কাজে লাগিয়ে মাত্র তিন বছরে ষোলো’শ টাকার পুঁজিকে ৫০ লক্ষ টাকার মূলধনে দাঁড় করিয়েছেন। যার মূলে ছিল চরম বিরক্তিও বটে!

খাদিজা ইসলাম স্বপ্না

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here