সোস্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে অনেকেই আজকাল ঘরে বসে নিজ উদ্যোগ পরিচালনা করছেন। স্বল্প পুঁজিতে যারা উদ্যোগ শুরু করতে চায় তাদের প্রথম পছন্দই হচ্ছে ফেসবুক। বিশেষ করে ঘরের নারীরা পরিবারকে সহযোগিতা করতে কিংবা শখ থেকে উদ্যোক্তাজীবন বেছে নেন।
ক্লোদিং আইটেম, জুয়েলারি, হোম ডেকর পণ্য, হোম মেড ফ্রোজেন খাবার, ক্যাটারিংসহ নানা ধরনের বিজনেস এখন অনলাইনেই করা সম্ভব হচ্ছে। অনেকেই আছেন যারা আচার বানাতে পারদর্শী তারা সহজেই অনলাইনের মাধ্যমে আচার বিক্রির মাধ্যমে স্বাবলম্বী হতে পারে।
প্রতিদিনের খাবারে বিশেষ করে খিচুরির পাতে একটু আচার না থাকলে খাওয়াটাই যেনো জমে না। আচার খাবারের স্বাদ বহুগুনে বাড়িয়ে দেয়। টক, ঝাল, মিষ্টি, নানা ধরনের আচার তৈরি করা হয় বিভিন্ন ফল দিয়ে। শুধু ফল নয় সবজি, মাছ এমনকি মাংসেরও আচার তৈরি করা হয়।
অনেকেই সারা বছরের জন্য আম, আমড়া, জলপাই তেঁতুলের আচার বানিয়ে রাখেন। যারা আচার তৈরি করেন এবং এটি নিয়ে বিজনেস করার জন্য সংরক্ষণ করে রাখেন তাদের জন্য বর্ষাকালে আচার ভালো রাখাটা বেশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়ায়। বর্ষাকালে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণটা একটু বেশি থাকে। এর ফলে বৃষ্টির দিনগুলোতে আচারে ছত্রাক ধরে যায় অনেক সময়। এই সমস্যা দূরে রাখতে কয়েকটি টিপস মেনে চলতে পারেন। যেমন-
★ প্রথমেই যে ফল বা সবজি দিয়ে আচার তৈরি করবেন সেগুলো ধুয়ে নেয়ার পর ভালোভাবে পানি শুকিয়ে নিতে হবে। পারলে কিছুক্ষণ রোদে রাখবেন, হালকা টান ধরলে তুলে ফেলবেন। আচার তৈরির জন্য যে তেল ব্যবহার করবেন, সে তেলে যেন কোনোভাবেই পানি না থাকে সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। সেজন্য আচার তৈরির তেল ব্যবহার করার আগে ভালোভাবে জ্বালিয়ে নেবেন।
★ আচারের ক্ষেত্রে তেলের পরিমান একটু বেশিই লাগে। কারণ অল্প তেলে রাখলে সেই আচারে ছত্রাক পড়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। আচারের উপরে তেল ভেসে থাকলে তা বাতাস ঢুকতে বাধা দেয়। আর অক্সিজেন না পেলে ব্যাকটেরিয়াও বাঁচতে পারবে না। তাছাড়া আচারে প্রিজারভেটিভ হিসেবে ভিনেগার অনেক কাজের। গুড়ের তৈরি আচার হলে রোদে রাখাই ভালো।
★ সতর্ক থাকতে হবে আচারে লবণ ব্যবহারের ক্ষেত্রে। পরিমান মতো লবণ ব্যবহারে আচারের ক্ষেত্রে প্রিজারভেটিভের কাজ করে এবং আচারের স্বাদ ও গন্ধ অটুট রাখে। লবণ সঠিক মাত্রায় ব্যবহার করতে পারলে তাতে ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধতে পারে না।
★ কখনো হাত দিয়ে আচার তুলে খাবেন না। সব সময় চামচ ব্যবহার করবেন। দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করতে চাইলে আচার ফ্রিজেও রাখতে পারেন। এছাড়া একই বয়ামে বেশি করে না রেখে ছোট ছোট বয়ামে ভাগ করে রাখুন।
★ বর্ষার সময় মাঝেমাঝে আচারের বোয়ামগুলো রোদে দিন। ঢাকনা খুলে রোদে দিন আচার। এতে বর্ষার সময় স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় বয়ামবন্দি আচারে ছত্রাক পড়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
★ আচার ভালো রাখতে ভিনেগার বেশ কার্যকর। গুড় বা তেলের তৈরি আচার থাকলে তাতে একটু ভিনেগার মিশিয়ে দিন। পারলে একটু লবণও মিশিয়ে দিতে পারেন। লবণ ও ভিনেগার আচারের স্বাদ এবং গন্ধ নষ্ট হতে দেবে না। আর ভালোও থাকবে দীর্ঘ দিন।
★ আচার প্লাস্টিকের পাত্রে না রেখে কাচের বয়ামে ভরে রেখে দিন। প্লাস্টিকের রাখলে বর্ষায় আচার নষ্ট হয়ে যেতে পারে। আর একটি বিষয় অবশ্যই খেয়াল রাখবেন আচার রাখার আগে জারটি যাতে ভালোভাবে পরিষ্কার এবং শুকনো থাকে।
★ অনেকে আচারের কৌটো ফ্রিজের মধ্যে রাখেন। সে ক্ষেত্রে খাওয়ার সময় আচার বের করলেও বেশি সময় ধরে বাইরে ফেলে রাখবেন না। এতে দ্রুত নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
বর্ষায় আচারের চাহিদা অনেকাংশেই বেড়ে যায় তাই আচারের যত্নে উদ্যোক্তাদের যত্নশীল হওয়া প্রয়োজন।
সেতু ইসরাত,
উদ্যোক্তা বার্তা