বাংলাদেশ সফররত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) প্রতিনিধিদলের দেওয়া বিভিন্ন সংস্কার প্রস্তাবের সমালোচনা করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেছেন, আমরা আইএমএফ দ্বারা পরিচালিত নই। তাদের সব কথা আমরা গিলবো না, প্রয়োজন নেই। তারা (আইএমএফ) তাদের কাজ করে যাবে। আমরা আমাদের কাজ করবো।
বুধবার রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমি মাঠে যুবমেলা-২০২২ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে
তিনি বলেন, ঋণ নেওয়া নতুন কিছু নয়। আমরা অতীতেও ঋণ নিয়েছি। সব রাষ্ট্রই ঋণ নেয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও ঋণ নেয়। সৌদি আরবও ঋণ নেয়। প্রয়োজনে ঋণ নিয়ে ফেরত দেওয়ার আমাদের পরিস্কার রেকর্ড আছে। আইএমএফ থেকে আমরা ঋণ নিয়ে যথাযথ কাজে লাগাবো, প্রশিক্ষণ বা উন্নয়নের কাজে লাগাবো।
জাতীয় যুব দিবস উপলক্ষে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সাতদিনের এই মেলার আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন।
বিভিন্ন ইস্যুতে খোলামেলা কথা বলার জন্য পরিচিত এম এ মান্নান বলেন, আইএমএফ থেকে ঋণ নিয়ে এসে চা-সিগারেট খেয়ে ফুরিয়ে দেবো না, আড্ডাবাজি করবো না, আমরা দেশের উন্নয়নে তা কাজে লাগাবো।
পরিকল্পনমন্ত্রী বলেন, আইএমএফ হোক, বিশ্বব্যাংক হোক, খবরের কাগজে ভর্তি খবর- তারা এটা বলছে, তারা ওটা বলছে। এটা করতে হবে, ওটা করতে হবে। আমাদের এগুলো পড়ে রেখে দিতে হবে। রেখে দিয়ে কাজে মনোযোগী হতে হবে। অন্যের কথা শোনা ভালো, তবে কাজ করতে হবে নিজের বিদ্যায়, নিজের বুদ্ধিতে। আমরা আইএমএফ দ্বারা পরিচালিত নই, বিশ্বব্যাংক দ্বারা পরিচালিত নই। আমরা অন্য কোনো রাষ্ট্র দ্বারা পরিচালিত নই।
তিনি বলেন: তবে আইএমএফ যে কথা বলে না, বিশ্বব্যাংকও যে কথা বলে না- সেটাকে একটি মহল সাজিয়ে গুছিয়ে আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য নানাভাবে পরিবেশন করে। বয়োজ্যেষ্ঠ নাগরিক হিসেবে বলবো, অনুগ্রহ করে এগুলো গিলবেন না। আমি গিলবো না, প্রয়োজন নেই। এরা তাদের কাজ করবে। তাদের কাজ করে যাবে। আমরা আমাদের কাজ করবো।
দেশের বর্তমান পরিস্থিতির ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আমি আবার বলবো ভয় পাওয়ার কোনো বিষয় নয়। একটি সময় যাচ্ছে খারাপ, সব দেশের জন্য খারাপ সময়। এর মধ্যেও আমাদের উৎপাদন… অনেক অনেক দেশের তুলনায় ভালো এখন। তবে হ্যাঁ টানাটানি আছে, অস্বীকার করা বোকামি হবে। এই মুহূর্তে আমাদের মিতব্যয়ী হতে হবে। মূল্যস্ফীতি দমিয়ে রাখার চেষ্টা করতে হবে। অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমাতে হবে। বাহুল্য বর্জন করতে হবে।
অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া সচিব মেজবাহ উদ্দিন ও যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আজহারুল ইসলাম খান বক্তব্য রাখেন।
বৃধবার ২ নভেম্বর শুরু হওয়া সাতদিনের এই মেলা শেষ হবে ৮ নভেম্বর। মেলায় ১০২টি স্টল রয়েছে, যেখানে হস্তশিল্পসহ নানা ধরনের পণ্যের পসরা সাজানো হয়েছে।
মাসুমা শারমিন সুমি
উদ্যোক্তা বার্তা